বিজ্ঞাপন

পরিবর্তন এসেছে, আরও অনেক আসবে

September 15, 2018 | 10:07 pm

।। আবদুল জাব্বার খান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: বেলা এগারোটা, সূর্য মামার প্রখর কিরণে ক্রমেই উত্তোপ্ত হয়ে উঠছে পিচ ঢালা রাজপথ। এর মাঝেই ঘর্মাক্ত শরীরে যানজট নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশদের সহযোগিতা করে চলেছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী।

এই শিক্ষার্থীদের হাতের ইশারায় জেব্রাক্রসিং সামনে রেখেই থেমে যায় গাড়ি। পথচারীরাও ব্যবহার করছেন ফুটওভার ব্রিজ। নিয়ম মানতে বাধ্য হচ্ছে অনিয়মকারীরা। চালকদের কাছেও ট্রাফিক পুলিশ থেকেও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা বেশি ভয়ের কারণ। এ কারণে শিক্ষার্থীদের হাতের ইশারায় নির্দিষ্ট জায়গায় থেমে যায় গাড়ি।

প্রখর রোদ উপেক্ষা করে শনিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) অফিসার্স ক্লাবের সামনে এমনিভাবেই দায়িত্ব পালন করেছেন বাংলাদেশ গার্লস গাইড অ্যাসোসিয়েশনের ভলেন্টিয়াররা।

বিজ্ঞাপন

তখন কথা হয় এই সংগঠনের রেঞ্জার পদধারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইম্যান অ্যান্ড জেন্ডার স্ট্রাডিজ বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী নাহিয়ান রায়হানা, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্রী শারমিন আক্তার, সিদ্ধেশ্বরী কলেজের ছাত্রী শ্রাবণী আক্তারের সঙ্গে।

তারা জানান, ব্যক্তি পর্যায়ে সবাই দায়িত্ব পালন করলে তবেই সড়কে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। তবে সমস্যা হলো অনেকেই নিয়ম জানে না, অনেকে আবার জানলেও মানে না।

নাহিয়ান বলেন, ‘সকাল থেকে এখানে ট্রাফিক পুলিশকে দায়িত্ব পালনে সহযোগিতা করছি। এতে কষ্টের কিছু নেই। তবে অনেকেই বলার পরও ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করতে চায় না। তাতেই কষ্ট লাগে।’

বিজ্ঞাপন

প্রচণ্ড গরমে কষ্ট হয় কিনা জানতে চাইলে নাদিয়া চৌধুরী জানায়, সে দেশের জন্য কাজ করছে। তাতে কষ্ট হলেও এ কাজ থেকে অনেক কিছু খেখার আছে। সড়কে চলাচলে নিজেদের দায়িত্বটুকু কি তা মেনে চললে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে বলেও সে জানায়।

উত্তোপ্ত রাজপথে দাঁড়িয়ে দায়িত্ব পালন করতে তেমন কোনো কষ্ট হয় না জানিয়ে শারমিন আক্তার বলেন, ‘কমান্ডের (নির্দেশের) সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি থেমে যায় বিষয়টি নিজের কাছে ভালই লাগে। আজই প্রথম আমি এই সংগঠনের অধীনে সড়কে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছি। এটা আমার অভিজ্ঞতার ঝুলিতে থাকবে।’

আইনের প্রতি সবাইকে শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত বলেও মনে করেন এই শিক্ষার্থীরা। এই ক্ষেত্রে চালক, যাত্রী এবং সাধারণ মানুষেরও অনেক দায়িত্ব রয়েছে।

এই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্বাচ্ছন্দ্যে দায়িত্ব পালন করছেন আনসার সদস্য মোশাররফ হোসেন। তিনি জানান, আগের থেকে এখন অনেকটা পরিবর্তন এসেছে। আগে সামনে গিয়ে দাঁড়ালেও গাড়ি থামাতে চাইতো না, জেব্রাক্রসিং ব্যবহার করতে চাইতো না। এখন হাতের ইশারায় সিগন্যাল দিলেই থেমে যায় গাড়ি। অনেকেই রাস্তা পারাপারে ফুটওভার ব্রিজও ব্যবহার করছেন।’

বিজ্ঞাপন

প্রসঙ্গত, গত ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে কুর্মিটোলা এলাকায় জাবালে নূর পরিবহনের দুই বাসের রেষারেষিতে শহীদ রমিজ উদ্দিন কলেজের দুই শিক্ষার্থীর প্রাণহানি ঘটলে এর প্রতিবাদে এবং নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে নামে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। টানা এক সপ্তাহের আন্দোলনের তৃতীয় দিন থেকে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব নেয় শিক্ষার্থীরা।

এরপর তারা ঘরে ফিরে গেলেও সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয় ট্রাফিক সপ্তাহ। এরপর ঘোষণা দেওয়া হয় ট্রাফিক মাসের। পুরো সেপ্টেম্বর জুড়েই সড়কে চলবে শৃঙ্খলা ফেরানোর এই উদ্যোগ।

সারাবাংলা/এজেডকে/এমও

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন