বিজ্ঞাপন

মিয়ানমারের সঙ্গে শত্রুতা তৈরি করতে চাই না: পররাষ্ট্র সচিব

September 20, 2018 | 9:34 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: ‘মিয়ানমারের সঙ্গে চিরতরে শত্রুতা তৈরি করতে চাই না। একটা বিষয় মনে রাখতে হবে যে মিয়ানমার আমাদের প্রতিবেশী। সারাজীবন তাদের সঙ্গে থাকতে হবে। তাই সম্পর্ক একটা পর্যায়ে ধরে রাখতে হবে। এ কারণে রোহিঙ্গা সঙ্কটের সমাধান দ্বিপক্ষীয়ভাবে করতে হবে।’

পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক বৃহস্পতিবার (২০ সেপ্টেম্বর) ‘রোহিঙ্গা ক্রাইসিস: রেসপন্স অব বাংলাদেশ এন্ড ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিটি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন।

রাজধানীর এক হোটেলে বেসরকারি গবেষণাধর্মী প্রতিষ্ঠান ‘ইন্সটিটিউট অব কনফ্লিক্ট, ল অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ’ আয়োজিত আলোচনা সভায় রাজনীতিক, কূটনীতিক, নিরাপত্তা বিশ্লেষক, শিক্ষক, সাংবাদিক, গবেষক, অর্থনীতিবিদসহ এক ডজনেরও বেশি আলোচক অংশ নেন।

বিজ্ঞাপন

নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মো. আব্দুর রশিদ সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন। এরপর মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন গবেষক ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা শাফায়াত আহমেদ।

পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক বলেন, ‘এই সমস্যার সমাধানে আমরা কাজ করছি বলেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালসহ বিশ্ব সম্প্রদায় এই বিষয়ে কথা বলছে। আর আমরা জাতীয় স্বার্থ বজায় রেখেই রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে কাজ করছি। ভবিষ্যতে কী করব তা এখন বলব না, তবে জনগণের জন্য যা ভাল হবে তাই করব।’

বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি মিয়া সেপ্পো বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের জীবন-মান উন্নয়ন এবং অধিকার ফিরিয়ে দিতে আমাদের আরও কাজ করতে হবে। এটি একটি রাজনৈতিক সমস্যা, রাজনৈতিকভাবেই এর সমাধান করতে হবে। চলমান জাতিসংঘ অধিবেশন থেকে রোহিঙ্গা ইস্যুর সমাধানে দিক নির্দেশনা আসতে পারে।’

বিজ্ঞাপন

অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা শাফায়াত আহমেদ বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে মিয়ানমারের দ্য ১৯৮২ সিটিজেনশিপ অ্যাক্ট শীর্ষক আইনটির সংশোধন করা জরুরি।’

অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘মিষ্টি কথায় রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান হবে না। কেননা এই সঙ্কট এখন দুই বছরে পা দিয়েছে, তাই মিয়ানমারকে চাপ না দিলে সমাধান আসবে না।’

আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে সহযোগী সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক বিশ্বকে মিয়ানমারের প্রতি চাপ দিতে হবে।’

নিরাপত্তা বিশ্লেষক এ কে মোহাম্মদ আলী সিকদার বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে চাপ প্রয়োগ করে মিয়ানমারকে আলোচনার টেবিলে বসাতে হবে। যাতে নাগরিক অধিকার দিয়ে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয় মিয়ানমার।’

বিজ্ঞাপন

সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা বলেন, ‘মিয়ানমারের বৌদ্ধরা যে কতো নৃশংস কাজ করতে পারে, তা বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরা প্রয়োজন। মিয়ানমারের বৌদ্ধদের নৃশংসতার মুখোশ উন্মোচন করা প্রয়োজন।’

সাংবাদিক মনজুরুল ইসলাম বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে সত্য এবং প্রকৃত তথ্য প্রকাশ করা প্রয়োজন।’

ব্র্যাকের পরিচালক কে মোর্শেদ বলেন, ‘মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর বর্ণবিদ্বেষের ঘটনা ঘটছে, যা বৈষম্য। তাই বর্ণবাদকে বর্ণবাদ হিসেবে প্রতিবাদ করা প্রয়োজন। তা না হলে এটা আরও প্রকট হবে।’

সভায় তুরস্কের রাষ্ট্রদূত ডেভরিম ওজতুর্ক, সেফ দ্য চিলড্রেনের আবাসিক প্রতিনিধি মার্ক পিয়ার্স, আইসিআরসি’র ডেপুটি হেড ওয়াল্টার জিনটি, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী, শরণার্থী বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনীর, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শমসের মবিন চৌধুরী, ওয়ার ক্রাইম ফ্যাক্টস ফাইন্ডিংস কমিটির আহবায়ক ডা. এম এ হাসানসহ আরও অনেকেই বক্তব্য রাখেন।

সারাবাংলা/জেআইএল/এএস

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন