বিজ্ঞাপন

ফারমার্স ব্যাংকের ৭ কর্মকর্তার বিদেশযাত্রায় দুদকের নিষেধাজ্ঞা

September 26, 2018 | 5:17 pm

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: ফারমার্স ব্যাংক থেকে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার (এস কে সিনহা) অ্যাকাউন্টে চার কোটি টাকা জমা হওয়ার ঘটনা তদন্ত করতে ব্যাংকটির সাত কর্মকর্তার বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।

পুলিশের বিশেষ শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার (ইমিগ্রেশন) বরাবর দুদক পরিচালক ও অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা সৈয়দ ইকবাল হোসেনের সই করা এক চিঠিতে ওই সাত কর্মকর্তার বিদেশযাত্রা ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুদকের পক্ষ থেকে এই চিঠি ইস্যু করা হয়েছে বলে সারাবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন সংস্থাটির জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য।

দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা ফারমার্স ব্যাংকের সাত কর্মকর্তা হলেন— সাবেক এমডি এ কে এম শামীম, সাবেক এসভিপি জিয়া উদ্দিন আহমেদ, এক্সিকিউটিভ অফিসার উম্মে সালমা সুলতানা, অ্যাসিস্ট্যন্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট শফিউদ্দিন আসকারী আহমেদ, সাবেক ম্যানেজার (অপারেশন) ও ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. লুতফুল হক, সাবেক হেড অব বিজনেস ও সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট গাজী সালাউদ্দিন এবং ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট স্বপন কুমার রায়।

বিজ্ঞাপন

দুদকের চিঠিতে বলা হয়েছে, বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা সপরিবারে দেশত্যাগ করে অন্য দেশে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। সুষ্ঠু অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ওই ব্যক্তিদের বিদেশে যাওয়ার প্রচেষ্টা ঠেকানো জরুরি উল্লেখ করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করেছে দুদক।

এর আগে, বুধবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় সাবেক এসিভিপি জিয়া উদ্দিন আহমেদ ছাড়া ফারমার্স ব্যাংকের বাকি ছয় কর্মকর্তাকে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্নের উত্তর দেননি তারা।

দুদক জানিয়েছে, সংস্থাটির পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে একদল তদন্ত কর্মকর্তা ওই ব্যাংক কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। মঙ্গলবার (২৫ সেপ্টম্বর) সৈয়দ ইকবাল হোসেনের পাঠানো নোটিশেই তাদের আজ বুধবার দুদকে হাজির থাকতে বলা হয়েছিল।

বিজ্ঞাপন

দুদকের অভিযোগের সংক্ষিপ্ত বিবরণীতে বলা হয়, ফারমার্স ব্যাংক লি.-এর কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে চার কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করে ওই টাকা ‘রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ’ এক ব্যক্তির নামে হস্তান্তর দেখিয়ে আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিং করা হয়েছে।

জানা গেছে, ২০১৬ সালে ফারমার্স ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে দুই কোটি টাকা করে মোট চার কোটি টাকা শাহজাহান ও নিরঞ্জন নামে দুই ব্যক্তি ঋণ নেন। এরপর একই বছরের ১৬ নভেম্বর সেই অর্থ পে-অর্ডারের মাধ্যমে সুরেন্দ্র কুমার সিনহার ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করা হয়।

এ বিষয়ে দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ সোমবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বলেন, ‘চার কোটি টাকার যে অনুসন্ধান, তা কবে শেষ হবে আমি বলতে পারব না। টাকাটা কোথায় গেছে তা আমাদের বের করতে হবে। ওই টাকা কোথায় গেল, কীভাবে গেল; তা তো জানতে হবে।’

দুদকে চলমান ‘ফারমার্স ব্যাংকের চার কোটি টাকা কেলেঙ্কারি’ প্রসঙ্গে ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘দুজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ঋণ প্রদান ও ঋণের টাকা অন্য কোথাও যাওয়ার ঘটনার অনুসন্ধান চলছে। সেই চার কোটি টাকার ব্যাপারে আপনারা এক ইঙ্গিত দিয়েছিলেন (সেই টাকা এস কে সিনহার অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছে)। আমরা কিন্তু সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো কিছু বলিনি। তদন্ত চলছে। এখনও এ বিষয়ে বিস্তারিত বলার সময় আসেনি।’

পরে এক ব্যক্তি এস কে সিনহার বিরুদ্ধে দুদকে লিখিত অভিযোগ দিলে দুদক তা অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়।

এর আগে, ফারমার্স ব্যাংক থেকে ঋণের নামে আত্মসাৎ ও পে-অর্ডারে এক ‘গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির’ ব্যাংক হিসাবে চার কোটি টাকা জমা দেওয়ার অভিযোগে ব্যবসায়ী মো. শাহজাহান ও নিরঞ্জন চন্দ্র সাহাকে দুদকের পরিচালক ও অভিযোগের অনুসন্ধান কর্মকর্তা সৈয়দ ইকবাল হোসেন জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

জিজ্ঞাসাবাদে ওই দুই ব্যক্তি জানিয়েছিলেন, চার কোটি টাকা সিনহার অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছিল। সিনহা তার লেখা বইয়েও এই টাকার বিষয়ে ব্যাখা দিয়েছেন। সিনহা জানিয়েছেন, বাড়ি বিক্রির ৬ কোটি টাকার মধ্যে চার কোটি টাকা তার ব্যাংকে জমা হয়েছে। দুদকের অনুসন্ধানের বিষয়েও লিখেছেন সিনহা তার বইয়ে।

তবে দুদক তদন্তের বিষয়ে সরাসরি সাবেক প্রধান বিচারপতির নাম উল্লেখ করছে না। এমনকি দুদকের চিঠিতে তার নাম উল্লেখ না করে তাকে ‘রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

সারাবাংলা/ইএইচটি/টিআর

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন