বিজ্ঞাপন

দায়িত্বশীল সংবাদ কমাতে পারে ১০ ভাগ আত্মহত্যা

September 27, 2018 | 3:59 pm

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন বলছে, বিশ্বে প্রতিদিন আত্মহত্যা করেন তিন হাজার মানুষ। বাংলাদেশেও প্রতিদিন আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন গড়ে ২৮ জন। এ ধারা অব্যাহত থাকলে ২০২০ সাল নাগাদ বিশ্বের অন্তত ১৫ লাখ মানুষ থাকবে আত্মহত্যার ঝুঁকিতে। তবে এখন থেকেই গণমাধ্যম লেখনীর মাধ্যমে দায়িত্বশীল সংবাদ পরিবেশের মাধ্যমে ভূমিকা পালন করলে সে হার অন্তত ১০ ভাগ কমানো সম্ভব।

বৃহস্পতিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) অনলাইন গণমাধ্যম সারাবাংলা ডটনেট কার্যালয়ে আত্মহত্যা বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের দায়িত্বশীল রিপোর্টিংয়ের ওপর আয়োজিত এক কর্মশালায় এমন বক্তব্য উঠে আসে। সারাবাংলার ২০ জন কর্মী এতে অংশ নেন।

বিজ্ঞাপন

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহযোগিতায় এ কর্মশালার আয়োজন করে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট। এসময় বিভিন্ন বিষয়ে সারাবাংলা কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেন জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. মারুফ আহমেদ খান, সহযোগী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ, পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ঢাকা কার্যালয়ের মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক কনসালট্যান্ট হাসিনা মমতাজ। কর্মশালা উদ্বোধন করেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. ফারুক আলম। এসময় উপস্থিত ছিলেন সারাবাংলা ডটনেটের নির্বাহী সম্পাদক মাহমুদ মেনন খান।

কর্মশালায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদনের সূত্র দিয়ে বলা হয়, পৃথিবীতে প্রতিদিন ৬০ হাজার মানুষ আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এর মধ্যে প্রায় তিন হাজার মানুষ সে চেষ্টায় সফল হন। সে হিসাবে বিশ্বে প্রতি ৪০ সেকেন্ডে একটি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশে প্রতিদিন আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন গড়ে ২৮ জন। এদের বেশিরভাগের বয়স ১৯ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। অন্যদিকে, আত্মহত্যার ঘটনার ৯০ ভাগের সঙ্গেই কোনো না কোনো মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা জড়িয়ে রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

কর্মশালায় বলা হয়, গণমানুষের চিন্তা ধারাকে নির্দিষ্ট পথে নিয়ে যেতে পারে গণমাধ্যম। আত্মহত্যা নিয়ে দেশের গণমাধ্যমে যে ধরনের সংবাদ পরিবেশিত হয়, তার বেশিরভাগই কোনো না কোনাভাবে এ কাজে মানুষকে প্ররোচিত করে। এমন ঘটনার সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে ভাষার ব্যবহার, আত্মহত্যার প্রক্রিয়ার বর্ণনা, স্থান কিংবা সময়ের অতিরঞ্জিত বর্ণনা এড়িয়ে চলা উচিত গণমাধ্যমের। এ ক্ষেত্রে সংবাদকর্মীদের আরও বেশি সতর্ক থাকা জরুরি।

কর্মশালায় বিভিন্ন গবেষণার বরাত দিয়ে বলা হয়, বাংলাদেশে আত্মহত্যার পেছনে প্রেম ও পরীক্ষায় ব্যর্থতা, অর্থনৈতিক সংকট, আত্মহত্যার উপকরণের সহজপ্রাপ্যতা, যৌতুক ও পারিবারিক কলহ এবং মানসিক অসুস্থতার মতো বিষয়গুলো ভূমিকা রাখে। এছাড়া জটিল শারীরিক ব্যধি, দ্রুত নগরায়ন, পরিবারতন্ত্রের বিলুপ্তি, নৈতিক অবক্ষয় ও মাদকাসক্তির মতো বিষয়গুলোও আত্মহত্যার জন্য দায়ী।

এসব থেকে বাঁচতে হলে সামাজিক সচেতনতা বাড়ানো, আত্মহত্যার উপকরণের সহজপ্রাপ্যতা কমানো, ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর প্রতি বিশেষ যত্ন এবং সামাজিক বন্ধন দৃঢ় করা ও ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা জরুরি। এক্ষেত্রেও গণমাধ্যমকর্মীদের জোর ভূমিকা রাখার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এমএস/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন