বিজ্ঞাপন

সুপ্রিমকোর্টের দায়িত্ব পালন করতে হবে সর্তকতার সঙ্গে : রাষ্ট্রপতি

January 2, 2018 | 9:03 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

বিজ্ঞাপন

ঢাকা : রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আপিল বিভাগ সংবিধান ও আইনের যে ব্যাখ্যা দেবে তা, দেশের সকল আদালতের জন্য বাধ্যতামূলক। এমনকি সুপ্রিমকোর্টের রয়েছে জুডিশিয়াল রিভিউ এর ক্ষমতা। কিন্তু এই গুরুদায়িত্ব পালন করতে হবে অত্যন্ত সতর্কতার সাথে।

তিনি বলেছেন, রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গের মধ্যে বিচার বিভাগ একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। আর সুপ্রিমকোর্ট সংবিধানের রক্ষক এবং চুড়ান্ত ব্যাখ্যা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান। উন্নয়নের জন্য গণতন্ত্র ও সুশাসনের বিকল্প নেই আর গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য নির্বাহী, আইন ও বিচার বিভাগের মধ্যে সম্পর্ক এবং সমন্বয় খুবই জরুরি তবে মনে রাখতে হবে এক্ষেত্রে কেউ কারো প্রতিদ্বন্দ্বী নয় বরং সহযোগী

মঙ্গলবার (০২ জানুয়ারি) প্রথমবারের মতো সুপ্রিম কোর্ট দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন

বিজ্ঞাপন

রাষ্ট্রপতি বলেন, প্রতিটি বিভাগের সফলতার জন্য পারস্পরিক সহযোগিতা ও আস্থা একান্ত অপরিহার্য এক্ষেত্রে দায়িত্ব পালনকালে মনে রাখতে হবে এক বিভাগের কর্মকাণ্ডে যাতে অন্য বিভাগের কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত না হয় বা জাতীয় স্বার্থ বিঘ্নিত না হয় সকল বিভাগের কর্মকাণ্ডে দেশ ও জনগণের কল্যাণকে অগ্রাধিকার দিতে হবে

তিনি বলেন, আইনের শাসন, জনগণের মৌলিক অধিকার, মানবাধিকার রক্ষা এবং অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বিচার বিভাগের ভূমিকা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। একটি শক্তিশালী বিচার ব্যবস্থার মাধ্যমেই সমাজ পরস্পর সংযুক্ত ও সামঞ্জ্যপূর্ণ থাকে।

সুপ্রিম কোর্টের দায়িত্ব পালন নিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ক্রান্তিকালেই যখনই প্রয়োজন হয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে মানুষের মৌলিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং সংবিধানকে রক্ষা করেছে।বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি দেশে সামরিক শাসন জারি করে সংবিধানকে নানাভাবে কাটাছেড়া করে গণতন্ত্রকে চিরতরে হত্যা করার অপচেষ্টা করেছিলো। কিন্তু এদেশের জনগণ তা হতে দেয়নি। স্বৈরশাসকরা তাদের পতনের পূর্বে অবৈধভাবে সংসদকে ব্যবহার করে সংবিধানের ৫ম ও ৭ম সংশোধনী পাসের মাধ্যমে তাদের সমস্ত অপকর্মকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলো। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট তা হতে দেয়নি।

বিজ্ঞাপন

ডিজিটাল বিচারব্যবস্থা নিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, এই যুগে সমনজারির জন্য আদালতে নৌকা ভাড়া দেওয়ার বিধান অচল। তাই আমাদের দৃষ্টিকে প্রসারিত করতে হবে। তথ্য প্রযুক্তির সমস্ত সুযোগ সুবিধা ব্যবহার করে মামলা ব্যবস্থাপনায় গতিশীলতা আনতে হবে।

তিনি বলেন, ভিডিও কনফারেন্স এর মাধ্যমে জেলখানা হতে আদালতে আসামীদের উপস্থিতকরণ এবং সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এসব বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টকে ভবিষ্যতে ই-জুডিশিয়ারি বাস্তবায়নে উদ্যোগী হতে হবে। সরকার এসব বিষয়ে অত্যন্ত আন্তরিক।

সুপ্রিম কোর্ট জাজেস স্পোর্টস কমপ্লেক্সে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্‌হাব মিঞার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক

আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্ট দিবস উদযাপন সংক্রান্ত জাজেস কমিটির সভাপতি আপিল বিভাগের বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন অ্যাটর্নি জেনারেলমাহবুবে আলম, বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল বাসেত মজুমদার ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতি, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, আইনজীবী ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ অংশ নেন।

সংবিধান অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্ট ১৯৭২ সালের ১৮ ডিসেম্বর প্রথম কার্যক্রম শুরু করেএর পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের প্রথম কার্যদিবসকে প্রতি বছর সুপ্রিম কোর্ট দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় গত ২৫ অক্টোবর ২০১৭ সালের ১৮ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের পূর্ব নির্ধারিত ছুটি থাকায় প্রথম কার্যদিবস (ছুটির পরে) ২ জানুয়ারি দিবসটি উদযাপন করা হয়।

সারাবাংলা/এজেডকে/একে

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন