বিজ্ঞাপন

দেশের ৫ কোটি ৮৭ লাখ নারী ক্যানসারের ঝুঁকিতে!

September 30, 2018 | 9:41 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: দেশের ৫ কোটি ৮৭ লাখ নারী কোনো না কোনোভাবে ক্যানসার ঝুকিতে রয়েছেন। শুধুমাত্র সারভাইক্যাল ক্যানসারে প্রতি বছর ১২ হাজার নারী আক্রান্ত হন এবং এদের মধ্যে ৬ হাজার নারীর মৃত্যু হয়।

আজ রোববার (৩০ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত ‘ক্যানসার সচেতনতা মাস-২০১৮’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এ তথ্য জানান। আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অনকোলজি বিভাগ এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

সংবাদ সম্মেলনে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল অনকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. ইহতেশামুল হক এক সমীক্ষার বরাতে বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে ২০ লাখ মানুষ ক্যানসারে আক্রান্ত। প্রতি বছর নতুন করে ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন আরও দুই লাখ মানুষ। প্রতি বছর এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করেন আরও দেড় লাখ মানুষ। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মৃত্যুর ষষ্ঠ প্রধান কারণ ক্যানসার। পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশে পুরুষদের ২৩ দশমিক ৯০ শতাংশ খাদ্যনালী ও পাকস্থলীর, ২২ দশমিক ৯০ শতাংশ মুখ গহ্বর এবং ১৫ দশমিক ৯০ শতাংশ ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত। অন্যদিকে নারীদের ১৬ দশমিক ৯০ শতাংশ স্তন ক্যানসারে, ১৫ দশমিক ৬০ শতাংশ জরায়ু ও জরায়ুমুখ এবং ১১ দশমিক ৯০ শতাংশ খাদ্যনালী ও পাকস্থলীর ক্যানসারে আক্রান্ত।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতি দশ লাখ লোকের জন্য একটি ক্যানসার সেন্টার থাকা প্রয়োজন। প্রতিটি সেন্টারে অন্তত দুটি রেডিওথেরাপি মেশিন থাকা প্রয়োজন। সেই হিসেবে দেশে অন্তত তিনশটি রেডিওথেরাপি মেশিন থাকা প্রয়োজন। কিন্তু দেশে আছে মাত্র ১৭টি মেশিন আর ক্যানসার বিশেষজ্ঞ আছেন মাত্র ১৫০ জন। যা দেশের ক্যানসার রোগীদের চিকিৎসায় খুবই অপ্রতুল।

সংবাদ সম্মেলনে আনোয়ার খান মাডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অবস অ্যান্ড গাইনি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. শারমিন আব্বাসী বলেন, দেশে নারীদের মধ্যে ক্যানসারের প্রবণতা অনেক বেশি লক্ষ করা যাচ্ছে। দেশের প্রায় ৫ কোটি ৮৭ লাক্ষ নারী কোনো না কোনোভাবে ক্যানসার ঝুঁকিতে রয়েছে। প্রতিবছর প্রায় ১২ হাজার নারী সারভাইক্যাল ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। এরমধ্যে ৬ হাজার রোগী এ রোগে প্রাণ হারান। আক্রান্তদের মধ্যে বেশরভাগই চিকিৎসা নিতে আসেন অ্যাডভান্স স্টেজে। ফলে চিকিৎসা তাদের সুস্থ করা সম্ভব হয় না। তা ছাড়া ব্রেস্ট ক্যানসার একটি ব্যথাহীন রোগ। তাই রোগীরা এটাকে গুরুত্ব দেয় না। তিনি এ দুটি ক্যানসার প্রতিরোধে স্বামী-স্ত্রী উভয়কে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন।

বিজ্ঞাপন

হেড-নেক ক্যানসার সম্পর্কে অধ্যাপক ডা. মতিউর রহমান মোল্লা বলেন, অপুষ্টির কারণে অনেকের মুখে লাল বা সাদা ঘা হয়। এসব ঘা যদি দুই থেকে তিন সপ্তাহের বেশি থাকে তাহলে সেগুলো থেকে ক্যানসার হতে পারে। এ ছাড়া গলা ও জিহ্বা ক্যানসার সৃষ্টিতে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের ভূমিকা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

ফুসফুস ক্যানসারের বিষয়ে অধ্যাপক ডা. এ কে এম আমিনুল হক বলেন, ফুসফুস ক্যানসারের প্রধান লক্ষণ সবসময় অল্প অল্প জ্বর অনুভব করা। এ ছাড়া গলার স্বর পরিবর্তন হলে এবং তা যদি আদা, গরম পানি গারগিল করার পরেও না ঠিক হয় তাহলে সেটিও ফুসফুস ক্যানসারের লক্ষণ। এ ছাড়া বয়স্ক লোকদের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে কাশি থাকা এবং কাশি দিলে শরীরের কোনো বিশেষ স্থানে ব্যথা অনুভুত হওয়া ফুসফুস ক্যানসারের লক্ষণ।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মীম নাসিম সোবহানি খন্দকার, কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আতিকুর রহমান, সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. নাফিসাসহ অনেকে।

সারাবাংলা/জেএ/এমআই

বিজ্ঞাপন

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন