বিজ্ঞাপন

দেশের প্রথম নারী মেজর জেনারেল একজন চিকিৎসক, গর্বিত চিকিৎসক সমাজ

September 30, 2018 | 11:14 pm

।। জাকিয়া আহমেদ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একজন নারী মেজর জেনারেল পদে পদোন্নতি পেয়েছেন, তিনি ডা. সুসানে গীতি। একজন চিকিৎসকের এই সাফল্যে চিকিৎসক সমাজ আনন্দিত, গর্বিত- এমনটাই জানালেন দেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।

সেনা প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, সেনাবাহিনীর কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. সামছুল হক রোববার (৩০ সেপ্টেম্বর) সেনা সদর দফতরে তাকে মেজর জেনারেল র‌্যাংকের ব্যাজ পরিয়ে দেন

ডা. সুসানের স্বামী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) আসাদুল্লাহ মো. হোসেন সাদ একজন সফল সামরিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছিলেন। এদিন (রোববার) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) থেকে পাঠনো এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞাপন

বিবৃতিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী নারীর ক্ষমতায়নে যে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছেন সেনাবাহিনীতে নারী অফিসারকে মেজর জেনারেল হিসেবে পদোন্নতি দেওয়ার মাধ্যমে সেই পদক্ষেপের আরও একটি নতুন দিগন্তের সূচনা হলো।

মেজর জেনারেল সুসানে গীতি ১৯৮৫ সালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন। পরবর্তীতে ১৯৮৬ সালে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে নারী চিকিৎসক হিসেবে ক্যাপ্টেন পদবিতে যোগ দেন। তিনি ১৯৯৬ সালে প্রথম নারী হিসেবে হেমাটোলজিতে এফসিপিএস ডিগ্রি অর্জন করেন।

এ ছাড়াও তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন এবং বিভিন্ন সামরিক হাসপাতালে প্যাথলজি বিশেষজ্ঞ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজের প্যাথলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত।

বিজ্ঞাপন

সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী দীপু মনি, যিনি নিজেও একজন চিকিৎসক। তিনি ডা. সুসানে গীতিকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সেখানে তিনি লেখেন:

দেশে প্রথমবারের মতো একজন নারী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল পদে অভিষিক্ত হলেন। আজ কন্যাশিশু দিবস। সবার জন্য অনুসরণীয় হতে পারেন মেজর জেনারেল সুসানে গীতি। অভিবাদন তাকে। হেমাটোলজির চিকিৎসক ডা. সুসানে গীতি ১৯৮৫ সালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করার পর সেনাবহিনীতে ক্যাপ্টেন পদে যোগ দিয়েছিলেন। অভিনন্দন  মেজর জেনারেল ডা. সুসানে গীতি। আপনার উত্তরোত্তর সাফল্য ও সর্বাঙ্গীন মঙ্গল কামনা করি।
বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলা বাংলাদেশে নারীর অগ্রযাত্রায় যুক্ত হলো আরেকটি মাইল ফলক। জয় বাংলা। জয় বঙ্গবন্ধু। জয়তু শেখ হাসিনা।

একজন নারী, যিনি পেশায় চিকিৎসক, দেশের প্রথম মেজর জেনারেল হয়েছেন- চিকিৎসক হিসেবে কেমন লাগছে জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান সারাবাংলাকে বলেন, আমি তাকে খুব ভালো করে চিনি তাকে। আমরা খুবই আনন্দিত। কেননা গীতি আমাদের এতো পছন্দের একজন মানুষ, প্রিয় একজন মানুষ। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এফসিপিএস করেছেন। তিনি খুবই ভালো একজন মানুষ। মুক্তিযুদ্ধে তার পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

আমি ব্যক্তিগতভাবে খুবই আনন্দিত, একজন চিকিৎসক- একজন যোগ্য মানুষ তার যোগ্যতম দায়িত্ব পেয়েছেন। এটা আমাদের চিকিৎসক সমাজের গর্ব, বলেন অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হেমাটোলজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মাসুদা বেগম ছিলেন ডা. সুসানে গীতির এফসিপিএস কোর্সমেট। অধ্যাপক ডা. মাসুদা বেগম সারাবাংলাকে বলেন, ডা. সুসানে গীতি খুবই ভালো মনের একজন মানুষ। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান। তিনি আমার এফসিপিএস কোর্সমেট ছিলেন। তারা ছিলেন সেনাবাহিনী থেকে আর আমরা ছিলাম সিভিল থেকে। তিনি খুবই বিনয়ী, তার আচার-ব্যবহার অমায়িক। মোট কথা, একজন ভালো মানুষ বলতে যা বোঝায়- ডা. সুসানে গীতি তাই।

একজন রোগীর প্রতি তার যে ডেডিকেশন দেখেছি, সেটা দারুণ। তিনি কোনো অন্যায় বা দুর্নীতির সঙ্গে কখনোই আপোস করেননি। তার এ সাফল্যে আমি খুবই আনন্দিত। একজন যোগ্য মানুষ তার যোগ্য পদে গিয়েছেন। একজন চিকিৎসক হিসেবে আরেকজন চিকিৎসকের সাফল্য আমার জন্য গর্বের। আমি তার আরও সাফল্য কামনা করছি, বলেন ডা. মাসুদা বেগম।

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল প্যাথলজিস্ট ডা. কানিজ ফাতেমা বলেন, প্রথম একজন নারী চিকিৎসক এ রকম পদে গেল। আমি আনন্দিত এবং গর্বিত।

ডা. কানিজ ফাতেমা সারাবাংলাকে বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন এবং নারীর সমঅধিকারের জন্য বিষয়টি অনেকটা মাইল ফলকের মতো। একজন নারী হিসেবে আমি খুবই আনন্দিত। আর একজন চিকিৎসক হিসেবে বলতে চাই, চিকিৎসকরা সব জায়গায় প্রমাণ করছে সব জায়গায় কাজ করার সক্ষমতা রয়েছে তাদের। আগে কেবল স্বাস্থ্য ক্যাডারেই চিকিৎসকরা যেতেন। যতদূর আমি জানি, গত বিসিএস পরীক্ষায় একজন নারী চিকিৎসক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগ দিয়েছেন দ্বিতীয়বারের মতো।

তিনি বলেন, একজন চিকিৎসক হিসেবে আমিও তাকে দেখে অনুপ্রাণিত। তিনি আমাদের চিকিৎসক সমাজকে গর্বিত করেছেন।

চিকিৎসক সুসানে গীতি দেশের প্রথম নারী জেনারেল হয়েছেন, চিকিৎসক হিসেবে কেমন লাগছে জানতে চাইতেই ডা. জাহিদুর রহমান বলেন, এতো বিশাল গর্বের ব্যাপার। আমাদের জন্য অনেক আনন্দের বিষয় এটা, আমরা গর্বিত।

সারাবাংলা/এটি

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
‘হামলাকারীরা চিহ্নিত সন্ত্রাসী, দ্রুত বিচারের আওতায় আনা হবে’আগস্টকে দ্রোহের মাস হিসেবে পালন করুন: রব‘আইন প্রয়োগ হবে সন্ত্রাসীদের ওপর, শিক্ষার্থীদের ওপর নয়’৫ ঘণ্টা পর শিক্ষকদের জিম্মায় ১২ শিক্ষার্থীর মুক্তিকুবি শিক্ষকদের ক্যাম্পাসে প্রবেশে বাধা, মানববন্ধন করলেন ৬ জনইন্টারনেট বন্ধের ধাক্কায় জুলাইয়ে রেমিট্যান্স ১৯০ কোটি ডলারশিক্ষার্থী হতাহত ও ধ্বংসযজ্ঞে সিভাসু শিক্ষকদের উদ্বেগশিক্ষার্থী আটক হলে ‘উদ্ধার করবে’ চবি প্রশাসনআবু সাঈদ নিহতের ঘটনায় সাক্ষ্য নেবে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনশেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন আইসিসি প্রসিকিউটরের সব খবর...
বিজ্ঞাপন