বিজ্ঞাপন

‘স্বর্ণ নীতিমালা-২০১৮’ অনুমোদনে টিআইবির সন্তোষ

October 4, 2018 | 7:23 pm

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: মন্ত্রিসভায় স্বর্ণ নীতিমালা-২০১৮ অনুমোদনে সন্তোষ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ। খসড়া এ নীতিমালাটি বাস্তবায়িত হলে এ খাতে সুশাসন নিশ্চিত হবে বলে মনে করছে সংস্থাটি।

বুধবার (৪ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘মন্ত্রিসভা কর্তৃক বহুল প্রতীক্ষিত ‘স্বর্ণ নীতিমালা-২০১৮’-এর খসড়া অনুমোদন এ খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টায় অবশ্যই একটি সন্তোষজনক পদক্ষেপ। এখন এই নীতিমালার আলোকে দেশের স্বর্ণখাতের সম্পূর্ণ ব্যবস্থাপনা ঢেলে সাজানোর সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

নীতিমালার অভাবে দেশের স্বর্ণ ও স্বর্ণালংকারের মান এবং স্বর্ণবাজারের ওপর স্বর্ণব্যবসায়ীদের যে একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল নীতিমালাটি প্রণয়নের ফলে তা লাঘব হওয়াসহ অবৈধ স্বর্ণ ও স্বর্ণালংকারের আমদানি বন্ধ করা সম্ভব হবে। এ ছাড়া, স্বর্ণ ও স্বর্ণালংকারের মান যাচাই, ক্রেতা ও বিক্রেতার স্বার্থ সংরক্ষণ এবং স্বর্ণশিল্পী বা শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিতকরণে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থার যে ঘাটতি ছিল সেটাও নিরসন করা সহজ হবে।’

বিজ্ঞাপন

এর আগে গতকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে বহুল প্রতিক্ষীত ‘স্বর্ণ নীতিমালা-২০১৮’ এর খসড়া মন্ত্রিসভা কর্তৃক অনুমোদন করা হয়।

নীতিমালাটি প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় টিআইবির সুপারিশসমূহ গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে অংশগ্রহণের সুযোগ প্রদানের জন্য সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ড. জামান বলেন, ‘নীতিমালার অভাবে অনিয়মগুলোই কার্যত অলিখিত নিয়মে পরিণত হয়েছিল যা ছিল স্বর্ণ খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা। স্বর্ণ নীতিমালার কঠোর এবং সতর্ক বাস্তবায়ন এই অবস্থার অবসান ঘটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

সেইসঙ্গে নীতিমালা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এতদিনের সুবিধাভোগী কায়েমি স্বার্থবাদী গোষ্ঠী চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে। সুশাসন প্রতিষ্ঠার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হবে এবং নীতিমালা থেকে বিচ্যূতির যেকোনো সম্ভাবনা শুরুতেই প্রতিরোধ করতে হবে। এ জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও ব্যবসায়ী মহলসহ সকল অংশীজন কর্তৃক নীতিমালার কঠোর বাস্তবায়নের বিকল্প নেই। এ জন্য প্রয়োজন সকল পর্যায়ে রাজনৈতিক সদিচ্ছার পাশাপাশি প্রশাসনিক ও ব্যবসায় খাতে কঠোর শুদ্ধাচারের চর্চা। একই সঙ্গে নীতিমালাটির যথাযথ বাস্তবায়নে স্বর্ণখাতের জন্য এই নীতিমালার আলোকে একটি পূর্ণাঙ্গ আইন প্রণয়ন করতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

প্রসঙ্গত, গত ৯ জুন ২০১৭ স্বর্ণ ব্যবসায় জালিয়াতি ও চোরাকারবারি বিষয়ে টিআইবি কর্তৃক প্রকাশিত এক সংবাদ বিবৃতিতে স্বর্ণখাতে সুশাসন ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালার দাবি জানানোর পর অর্থ মন্ত্রণালয় স্বর্ণ নীতিমালার খসড়া তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদানের জন্য টিআইবিকে অনুরোধ জানায়। এরই প্রেক্ষিতে গত বছরের নভেম্বর মাসে টিআইবি কর্তৃক ‘বাংলাদেশের স্বর্ণখাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা: চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। গবেষণার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে টিআইবি স্বর্ণখাতের নীতিমালার খসড়া তৈরির জন্য বেশকিছু সুপারিশ অর্থ মন্ত্রণালয়কে প্রদান করে।

পরবর্তীতে অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক টিআইবির সুপারিশসমূহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করার পর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় টিআইবি, বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি (এফবিসিসিআই), স্বর্ণব্যবসায়ী এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে ৯ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে এবং এই কমিটি খসড়া স্বর্ণ নীতিমালা তৈরি করে। চলতি বছরের মে মাসে মন্ত্রিসভার অর্থনীতি বিষয়ক কমিটি খসড়াটি অনুমোদন করে মন্ত্রিসভায় প্রেরণ করে।

সারাবাংলা/এমএস/এমআই

বিজ্ঞাপন

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন