বিজ্ঞাপন

মাঠে-কেন্দ্রে তৎপর আ.লীগের একাধিক প্রার্থী, বসে নেই বিএনপিও

October 9, 2018 | 12:50 pm

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: ঘনিয়ে আসছে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন। চলতি অক্টোবরেই নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার কথা রয়েছে। সেই হিসেবে ডিসেম্বরে শেষের দিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে মনোনয়ন লড়াইয়ে রাজনৈতিক মাঠ ততই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। প্রচার-প্রচারণায় সরগরম হয়ে উঠছে প্রতিটি সংসদীয় এলাকা। রাজশাহী বিভাগের ৩৯টি সংসদীয় আসনের প্রতিটিতেই বইছে সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ভোটারসহ হাইকমান্ডের দৃষ্টি আকর্ষণের নানাবিধ তৎপরতা।

গত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতের ভোট বর্জনের ফলে রাজশাহী বিভাগের প্রতিটি আসনে ১৪ দলীয় প্রার্থী ও বিরোধী দল জাতীয় পার্টির প্রার্থী জয়লাভ করে। এছাড়াও একটি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়লাভ করে। কিন্তু আসন্ন সংসদ নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট অংশ নিলে অধিকাংশ আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন হবে। এদিকে টানা দুই মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার ফলে স্থানীয় এমপি-নেতা ও স্থানীয় নেতাদের মধ্যে কোন্দল-বিভেদে জর্জরিত হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের নেতাকর্মীরা টানা মেয়াদে ক্ষমতার বাইরে থাকার কারণে একাট্টা হয়ে নির্বাচনী মাঠে ভেতরে ভেতরে কাজ শুরু করেছে।

রাজশাহীর বিভাগের আট জেলার মোট ভোটার সংখ্যা ১ কোটি ৩৭ লাখ ২৭ হাজার ১৭ জন। বিভাগের ৩৯টি আসনে মোট ভোটকেন্দ্র ৪ হাজার ৮১৫টি, ভোটকক্ষ রয়েছে ২৫ হাজার ১০টি।

বিজ্ঞাপন

রাজশাহী-১

২০০৮ সালের নির্বাচনের সময় বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক আইজিপি ড. এম এনামুল হককে দলীয় মনোনয়ন দেয় বিএনপি। কিন্তু এনামুল হককে হারিয়ে নৌকার প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরী এমপি নির্বাচিত হন। গত নির্বাচনেও ওমর ফারুক চৌধুরী দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হন। সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী ও রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী এবারও নৌকার প্রার্থী। এছাড়াও তানোর উপজেলার আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মুন্ডুমালা পৌরসভার মেয়র গোলাম রাব্বানী, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট মকবুল হোসেন খানও ভোটের মাঠে নৌকার প্রার্থী। এছাড়াও সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি মো. মতিউর রহমান আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন। এদিকে বিএনপি ব্যারিস্টার আমিনুল ইসলাম, সাবেক সচিব এসএম জহুরুল হক বিএনপি থেকে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন। এছাড়াও আমেরিকা প্রবাসী ক্যালোফিনিয়া বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুন্ডমালা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হকের ছেলে সাহাদত হোসেন শাহিদও মনোনয়ন প্রত্যাশী। ২০১৪ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে ইঞ্জিনিয়ার শফিকুল ইসলাম উত্তোলন করেন। তবে তার কাগজপত্রে ক্রটির ফলে তার মনোনয়ন বাতিল হয়। তিনি এবারো জাতীয় পার্টি হতে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন। সেসময় তিনি রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।

রাজশাহী-২

বিজ্ঞাপন

২০০৮ সালে মহাজোট প্রার্থী ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি নির্বাচিত হন। আগামী নির্বাচনেও ১৪ দলীয় জোটগত প্রার্থী হিসেবেও বাদশা মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে আছেন। তবে স্থানীয় আওয়ামী নেতারা, বিভাগীয় শহরের সদর আসনটিতে এবার নিজ দলীয় এমপি’র মনোনয়নের জন্য সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। বিশেষ করে এ আসন থেকে নৌকার সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকারের নাম এগিয়ে রয়েছে। এছাড়াও সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আক্তার জাহান, রাবির সাবেক উপাচার্য ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক আব্দুল খালেক এবং আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদ সদস্য ও মহানগরের সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবালও মনোনয়ন প্রত্যাশায় ভোটের মাঠে সক্রিয় আছেন। অন্যদিকে বিএনপি থেকে মনোনয়নের দৌড়ে রয়েছেন সাবেক রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু।

রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর)

২০০৮ সালের নির্বাচনে এই আসন থেকে প্রথমবারের মতো এমপি হন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মেরাজ উদ্দিন মোল্লা। গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং এক/এগারোর সময় নির্যাতিত নেতা আয়েন উদ্দিন মনোনয়ন দিলে দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করে পরাজিত হন সাবেক এমপি মেরাজ উদ্দিন মোল্লা। পরে তাকে দলের সভাপতি পদ থেকেও তাকে অপসারণ করা হয়। কিন্তু গত বছর জেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে সহ-সভাপতির পদ দেওয়া হয় তাকে। ইতোমধ্যে আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মেরাজ উদ্দিন মোল্লা নতুন করে মাঠে নেমেছেন। তবে এ আসনটিতে নৌকার মনোনয়ন পেতে আটঘাট বেঁধে প্রচার-প্রচারণায় নেমেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ। এ ছাড়াও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মানজাল ও সাংগঠনিক সম্পাদক আলফোর রহমান।

অন্যদিকে বিএনপি থেকে কবীর হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কামরুল মনির, রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত, নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মন্টু ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে ভেতরে ভেতরে কাজ শুরু করেছেন।

বিজ্ঞাপন

রাজশাহী-৪

বর্তমান এমপি ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক। এবার এনামুল হক ছাড়াও তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আবুল কালাম আজাদ এবং বাগমারা উপজেলা চেয়ারম্যান জাকিরুল ইসলাম সান্টু ভোটের মাঠে সক্রিয় প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন। অন্যদিকে এই আসনে এনামুল হকের আগে বিএনপি নেতা আবু হেনা এমপি ছিলেন। তিনি এবারও মনোনয়ন চান। এছাড়াও জেলা বিএনপির সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন তপু, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আমেরিকা প্রবাসী ডা. জাহিদ দেওয়ান শামীম, ২০০৮ সালের নির্বাচনে অংশ নেওয়া আবদুল গফুর, তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সামশুর রহমান মিন্টুও মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে সক্রিয় আছেন।

রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর)

এ আসনের বর্তমান এমপি আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল ওয়াদুদ দারা। আগামী নির্বাচনেও তিনি মনোনয়ন প্রত্যাশী। এছাড়াও এবার মনোনয়ন চান সাবেক এমপি তাজুল ইসলাম মোহাম্মদ ফারুক, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহসানুল হক মাসুদ, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও দুর্গাপুর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ। এ আসনে বিএনপির এমপি ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নাদিম মোস্তফা। এবারও তিনি দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী। এছাড়াও সাবেক এমপি আবদুস ছাত্তার মন্ডল, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম মণ্ডল, পুঠিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন জুম্মাও মনোনয়ন প্রত্যাশী।

রাজশাহী-৬

বর্তমান এমপি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। তিনি ২০০৮ সাল থেকে এখানে এমপি নির্বাচিত হয়ে আসছেন। আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে আছেন। তবে গত নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে অংশ নেন রায়হানুল হক। তিনি এবারও মনোনয়নের প্রত্যাশায় মাঠে নেমেছেন। এছাড়াও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লায়েব উদ্দিন লাবলু, বাঘা পৌরসভার মেয়র আক্কাস আলী মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে মাঠে সরব রয়েছেন। বিএনপির প্রার্থী হিসেবে চারঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান আবু সাইদ চাঁদ, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি বজলুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মোস্তফা মামুন, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন উজ্জ্বল ও বাঘা উপজেলা বিএনপি সভাপতি মানিক বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী।

নাটোর-১

এ আওয়ামী লীগের জন্য মাথাব্যাথা হয়ে দেখা দিয়েছে পারিবারিক দ্বন্দ্ব, বিশেষ করে দেবর-ভাবী-ভাতিজা— অর্থাৎ ত্রিমুখী লড়াই। বর্তমান সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আবুল কালাম। তার বড় ভাই শহীদ মমতাজ উদ্দিনের স্ত্রী শেফালী মমতাজের দ্বন্দ্ব হঠাৎ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। সাবেক এই নারী সংসদ সদস্য ভোটের মাঠে নেমেছেন। এছাড়াও মরহুম মমতাজ উদ্দিনের ছেলে শামীম আহমেদ সাগরও মনোনয়ন প্রত্যাশী। মততাজ উদ্দিন আততায়ীর হাতে নিহত হওয়ার পর গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তার স্ত্রী শেফালী মমতাজ নারী সাংসদ নির্বাচিত হন। এ সময় ওই আসনে তার ভাই অ্যাডভোকেট আবুল কালাম দলীয় মনোনয়ন চেয়ে ব্যর্থ হন। বর্তমান সংসদ নির্বাচনের সময় দেবর মো.আবুল কালাম ও ভাবি শেফালী মমতাজ উভয়েই দলীয় মনোনয়ন চান। এছাড়াও কৃষক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুল হক আতিক, সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা আরিফুর রহমান উজ্জ্বল, আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক সিলভিয়া পারভীন লেনী এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বকুলসহ লে. কর্নেল (অব.) রমজান আলী সরকারও মনোনয়ন প্রত্যাশী।

বিএনপি থেকে চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও সাবেক মন্ত্রী মরহুম ফজলুর রহমান পটলের সহধর্মিণী অধ্যক্ষ কামরুন্নাহার শিরীন। এ ছাড়াও গোপালপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র মনজুরুল ইসলাম বিমল, বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি তরিকুল ইসলাম টিটু। জাতীয় পার্টি থেকে সাবেক সংসদ সদস্য আবু তালহা, জেলা জাতীয় পার্টির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান মনির। অন্য দলগুলোর মধ্যে ওয়ার্কার্স পার্টি পলিট ব্যুরো সদস্য আনছার আলী দুলাল, সাম্যবাদী দল কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট বীরেন সাহা, ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সভাপতি অধ্যক্ষ ইব্রাহীম খলিল ও জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক তাসনিম আলমও মনোনয়ন লড়াইয়ে মাঠে নেমেছেন।

নাটোর-২

আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শিমুল। তরুণ এই রাজনৈতিক নেতার উত্থান ঘটে চারদলীয় জোটের শাসনামলে বিএনপি সরকারের উপমন্ত্রী রুহুল কুদ্দুস তালুকদারের রাজনীতির জবাবে নাটোরের রাজপথে। এছাড়াও ২০১৩ সালে নাটোরের কানাইখালি মোড়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা মোহাম্মদ নাসিমসহ অন্যান্য নেতাদের উপস্থিতিতে জনসভার মঞ্চে সদর আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকারের সঙ্গে হাতাহাতিতে লিপ্ত হন জেলা যুবলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক শিমুল। শিমুলের উত্থানে ভাগ্য বিপর্যয় ঘটে সাবেক আহাদ আলী সরকারের। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন শিমুল। তবে নির্বাচন জিতে মাঠ দখলে অপ্রতিরোধ্য হয়ে পড়েন এই তরুণ আওয়ামী লীগ নেতা শিমুল। একদিকে আহাদ আলী সরকারের সঙ্গে পুরনো দ্বন্দ্ব অন্যদিকে ক্ষমতায় আসার পর নাটারের প্রভাবশালী তিন নেতার সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়। এরা হলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম রমজান, পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরী জলি এবং জেলা যুবলীগের সভাপতি বাছিরুর রহমান খান চৌধুরী এহিয়াসহ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মরহুম অ্যাডভোকেট হানিফ আলী শেখের ছোটভাই ও বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মালেক শেখও একাট্টা হয়ে আগামী নির্বাচনে নাটোর সদর আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশায় মাঠে নেমেছেন।

এদিকে উমা চৌধুরী জলিও পারিবারিক রাজনৈতিক ঐতিহ্যের কারণে শিমুলের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে এরইমধ্যে আবির্ভূত হয়েছেন।

তার বাবা প্রয়াত শঙ্কর গোবিন্দ চৌধুরী ছিলেন বঙ্গবন্ধুর একান্ত সহচরদের একজন এবং তিনি ছিলেন নাটোর আওয়ামী লীগের প্রাণপুরুষ। তাই এবার জলিকে ঘিরেও শিমুল বিরোধী একটি প্রভাবশালী বলয় গড়ে উঠেছে সদরে। এছাড়াও জেলা যুবলীগের সভাপতি বাছিরুর রহমান খান চৌধুরী এহিয়াও শহরের প্রভাবশালী চৌধুরী পরিবারের সন্তান। নাটোর শহরে পারিবারিকভাবে প্রভাবশালী ব্যবসায়ী এই নেতা আর্থিকভাবেও প্রতিপত্তিশালী। এক সময় এমপি শিমুলের সঙ্গে দহরম-মহরম থাকলেও স্বার্থের দ্বন্দ্বে এখন তার ঘোর প্রতিদ্বন্দ্বী। এছাড়াও জেলা আওয়ামী লীগের ১নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম রমজানের সাথেও বর্তমান এমপির ক্ষমতাকেন্দ্রিক দূরত্ব তৈরি হয়েছে।

অন্যদিকে জেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপমন্ত্রী অ্যাডভোকেট এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু হেভিওয়েট প্রার্থী। তার স্ত্রী জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি সাবিনা ইয়াসমিন ছবিও প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন। এছাড়াও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য মজিবর রহমান সেন্টুও মাঠে রয়েছেন।

নাটোর-৩

বর্তমান এমপি আইসিটি প্রতিমন্ত্রী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জুনাইদ আহমেদ পলক। এ আসন থেকে তিনবার নির্বাচিত হন জেলা বিএনপির নেতা অধ্যাপক কাজী গোলাম মোর্শেদ। অষ্টম সংসদ নির্বাচনে তিনি এ আসন থেকে বিজয়ী হওয়ার পর বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। অধ্যাপক গোলাম মোর্শেদ ছাড়াও বিএনপি থেকে সিংড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, উপজেলা বিএনপি সহ-সভাপতি ডা. নজরুল ইসলাম, সিংড়া পৌর সভার মেয়র শামীম আল রাজী মনোনয়ন প্রত্যাশী। এছাড়াও পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম আনু মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন।

এদিকে এবার নৌকার মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে আছেন জুনাইদ আহমেদ পলক। তবে ১৪ দলের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সিংড়া উপজেলা সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজানও মনোনয়ন প্রত্যাশী। এ ছাড়াও জাতীয় পার্টি থেকে অ্যাডভোকেট আবু তাহের ও জামায়াতে ইসলামের অধ্যাপক বেলাল উজ জামান ও ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের মাওলানা আজিজুর রহমানও মনোনয়ন প্রত্যাশায় গণসংযোগ করছেন।

নাটোর-৪

বর্তমান এমপি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও বর্তমান সংসদ সদস্য অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস। এ ছাড়াও প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন গুরুদাসপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও গুরুদাসপুর পৌরসভার মেয়র শাহনেওয়াজ মোল্লা, বড়াইগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি আহাম্মদ আলী মোল্লা, বর্তমান এমপির কন্যা ও কেন্দ্রীয় যুব মহিলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কুহেলি কুদ্দুস মুক্তি।

এছাড়াও গত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাবেক নেতা ও বর্তমানে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য রতন সাহা। তিনি ভৌগোলিকভাবে আসনটিকে নৌকার আসন উল্লেখ করে সারাবাংলাকে বলেন, এলাকার মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের পাশাপাশি রাজনীতির গুণগত এবং ইতিবাচক পরিবর্তনের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। প্রায় দুই যুগের বেশি নাটোরের রাজনীতিতে যুক্ত আছি। তাই দল যদি আগামীতে মূল্যায়ন করলে নৌকাকে বিজয়ী করতে পারব।

এদিকে এ আসন থেকে বিএনপির জেলা সভাপতি সাবেক উপমন্ত্রী অ্যাডভোকেট এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুসহ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও চেম্বার সভাপতি আমিনুল হক, সাবেক সংসদ সদস্য মোজাম্মেল হক, গুরুদাসপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও থানা বিএনপির সভাপতি আব্দুল আজিজ, বড়াইগ্রাম পৌরসভার সাবেক মেয়র ইসাহাক আলী। এছাড়াও জাতীয় পার্টি থেকে কেন্দ্রীয় জাপা যুগ্ম সম্পাদক ও সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট শিল্পপতি আলাউদ্দীন মৃধা ও সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কাশেম সরকারও মনোনয়ন প্রত্যাশায় গণংসযোগে রয়েছেন।

নওগাঁ-১

বর্তমান এমপি সাধন চন্দ্র মজুমদার। তিনি বিপুল ভোটের ব্যবধানে তিনবারের নির্বাচিত বিএনপির এমপি ডা. ছালেক চৌধুরীকে পরাজিত করে আসনটি নৌকার দখলে নেন। গত নির্বাচনেও দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য হন সাধন চন্দ্র মজুমদার। এদিকে বিএনপি থেকে নিয়ামতপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি ডা. ছালেক চৌধুরী, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল ইসলাম, নওগাঁ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সহ-সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন, পোরশা উপজেলা বিএনপির সাবেক সম্পাদক মাসুদ রানা, জাতীয় পার্টির আকবর আলী কালু মনোনয়ন প্রত্যাশী। এছাড়াও বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল বাসদ হতে সাপাহার উপজেলার আদিবাসী নেতা মঙ্গল কিস্কু, ইসলামী আন্দোলনের (ইসা) পোরশা উপজেলার সাবেক সভাপতি আলহাজ মোস্তাফিজুর রহমান, বর্তমান সভাপতি মৌলানা ওমর আলী ও নিয়ামতপুর উপজেলা ইসার নেতা মৌলানা রেজাউল করিম ভোটের মাঠে রয়েছেন।

নওগাঁ-২

বর্তমান সংসদ সদস্য হুইপ শহীদুজ্জামান সরকার। তিনি এবারও মনোনয়ন প্রত্যাশী। তিনি ছাড়াও  আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় উপকমিটির সাবেক সহসম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার ড. আখতারুল আলম।

অন্যদিকে বিএনপি থেকে কেন্দ্রীয় কমিটির কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য সামসুজ্জোহা খান, নওগাঁ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি খাজা নাজিবুল্লাহ চৌধুরী, নওগাঁ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম লিটন মনোনয়ন প্রত্যাশী। এছাড়াও জাতীয় পার্টি (জাপা) থেকে জেলা কমিটির সহ-সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য বিএসএ হুমায়ন কবির চৌধুরী, জেলা কমিটির সদস্য অধ্যাপক আবিদা আক্তারও মনোনয়ন প্রত্যাশী। এছাড়াও বিকল্প ধারার যুগ্ম মহাসচিব আবদুর রউফ মান্নান ও বাসদ থেকে দেবলাল টুডুর নামও আলোচনায় রয়েছে।

নওগাঁ-৩

বর্তমান সংসদ সদস্য মো. ছলিম উদ্দীন তরফদার (সেলিম)। এছাড়াও মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক সংসদ সদস্য বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) চেয়ারম্যান ড. আকরাম হোসেন চৌধুরী। অন্যদিকে বিএনপি থেকে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবেক সংসদ সদস্য আখতার হামিদ সিদ্দিকী (নান্নু), জেলা বিএনপির সদস্য রবিউল আলম বুলেট ও দলের বদলগাছী উপজেলা শাখার সভাপতি ফজলে হুদা আকন্দ বাবুল সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন। এছাড়াও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও নওগাঁ জেলা শাখার সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ-ইনু) নেতা মুক্তিযোদ্ধা ওয়াজেদ আলী, জামায়াতের আবুল কালাম আজাদও মনোনয়ন প্রত্যাশী।

নওগাঁ-৪

এ আসনে বর্তমান এমপি বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী মুহা. ইমাজউদ্দিন প্রমাণিক। তিনি এবার বয়সের ভারে ন্যুব্জ। তাই এবার মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে আছেন নওগাঁ জেলা আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সভাপতি আবদুল বাকী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমদাদুল হক মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক সরদার জসিম উদ্দিন, সহ-সভাপতি আবদুল লতিফ শেখ ও ব্রহানী সুলতান মাহামুদ।

বিএনপি থেকে সাবেক সংসদ সদস্য ও বর্তমান উপজেলা বিএনপির সভাপতি শামসুল আলম প্রামাণিক ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সদস্য আবদুল মতিন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. ইকরামুল বারী, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মকলেছুর রহমান, জাতীয় পার্টি থেকে জেলা জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক ও মান্দা উপজেলা শাখার সভাপতি আলতাব হোসেন, জেলা জামায়াতের আমির খন্দকার আবদুর রাকীব।

নওগাঁ-৫

এ আসনটি আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিলের আসন হিসেবে পরিচিত। কিন্তু ২০১৩ সালের ৬ মার্চ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত জাতীয় সংসদে অপরিহার্য ছিলেন তিনি। কিন্তু তার মৃত্যুর পর উপনির্বাচনে বিজয়ী হন জেলা আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মালেক। এরপর ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলামকে হারিয়ে পুনরায় এমপি হন। আগামী নির্বাচনেও আবদুল মালেক আওয়ামী লীগের শক্তিশালী প্রার্থী। আবদুল জলিলের মৃত্যুর পর আওয়ামী লীগে বিভক্তি দেখা দেয়। এবার আওয়ামী লীগে মনোনয়ন দৌড়ে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মালেক ছাড়াও প্রয়াত নেতা আবদুল জলিলের ছেলে জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক  ব্যারিস্টার নিজাম উদ্দিন জলিল জন এগিয়ে আছেন। এছাড়াও নওগাঁ পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি দেওয়ান ছেকার আহমেদ শিষাণও মনোনয়ন প্রত্যাশায় মাঠে রয়েছেন।

বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা লে. কর্নেল (অব.) আবদুল লতিফ খান, জেলা বিএনপির সভাপতি নওগাঁ পৌর মেয়র নজমুল হক সনি, জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের জেলা আহ্বায়ক সাবেক এমপি রায়হান আক্তার রনি, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ধলু। এছাড়াও নওগাঁ জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক ইফতারুল ইসলাম বকুল, জাসদের (ইনু) পক্ষ থেকে জেলা জাসদের সাংগঠনিক সম্পাদক সাংবাদিক আজাদ হোসেন মুরাদও মনোনয়ন প্রত্যাশী।

নওগাঁ-৬

বর্তমান সংসদ সদস্য নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইসরাফিল আলম। তিনি এবারও মনোনয়ন লাভের ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছেন। এছাড়াও রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক সুমন, রানীনগর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন হেলাল ও আব্দুর রহমান। বিএনপি থেকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আনোয়ার হোসেন বুলু, কেন্দ্রীয় তাঁতী দলের সহ-সাধারণ সম্পাদক এছাহক আলী, নওগাঁ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি সিরাজুল ইসলাম সিরাজও মাঠে রয়েছেন।

জয়পুরহাট-১

বর্তমান এমপি জেলা আওয়ায়ামী লীগের সভাপতি সামছুল আলম দুদু। এ ছাড়াও মনোনয়নপ্রত্যাশীদের দৌড়ে আছেন পাঁচবিবি পৌরসভার মেয়র হাবিবুর রহমান হাবিব, জয়পুরহাট সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম। তবে দশম সংসদ নির্বাচনে জয়পুরহাট-১ আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেওয়া হলেও দল মনোনীত নেতা আ স ম মোক্তাদির তিতাস নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় সেটা আওয়ামী লীগের দখলে যায়। তবে এবার মাঠে রয়েছে জাতীয় পার্টির ওই নেতা তিতাস। এছাড়াও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বর্তমানে সিনিয়র সহ-সভাপতি নৃপেন্দ্রনাথ মণ্ডল পিপি, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি ও রেড ক্রিসেন্টের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মোমিন আহমেদ চৌধুরী জিপি, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অধ্যক্ষ খাজা শামছুল আলম, জয়পুরহাট সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও দোগাছী ইউপি চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম, জয়পুরহাট পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক, পাঁচবিবি পৌরসভার বর্তমান মেয়র ও পাঁচবিবি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন।

বিএনপি থেকে বর্তমান সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোজাহার আলী প্রধানের ছেলে রানা প্রধান, জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি ও বিশিষ্ট শিল্পপতি মমতাজ উদ্দিন মন্ডল, জেলা সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ শামছুল হক, জেলা সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নাফিজুর রহমান পলাশ, জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গফুর মণ্ডল, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মানবতাবিরোধী আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে আমৃত্যু কারাদণ্ডে দণ্ডিত সাবেক মন্ত্রী আব্দুল আলীমের ছেলে ফয়সল আলীম। এদিকে জামায়েতের একক প্রার্থী হিসেবে জেলা আমির ডা. ফজলুর রহমান সাঈদও চালিয়ে যাচ্ছেন।

জয়পুরহাট-২

বর্তমান এমপি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন। অন্যদিকে জেলার সাধারণ সম্পাদক সোলায়মান আলী নৌকা পেতে জোরেশোরে নির্বাচনী গণসংযোগ করছেন। এছাড়াও কালাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুল ইসলাম বেলাল তালুকদার মনোনয়ন প্রত্যাশী।

২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা মহাজোটের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনকে সামান্য ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন। এবারও ওই আসনে বিএনপি থেকে আগামীতে দলের মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন গোলাম মোস্তফা। এছাড়াও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও ক্ষেতলাল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রওনকুল ইসলাম টিপু চৌধুরী ও আক্কেলপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কমলও মনোনয়ন ধানের শীষের মনোনয়ন প্রত্যাশী।

বগুড়া-১

বর্তমান এমপি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কৃষিবিদ আবদুল মান্নান। আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এই প্রার্থীর বিপরীতে বিএনপিতে রয়েছে একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী। বিএনপির প্রার্থী হিসেবে সাবেক সংসদ সদস্য কাজী রফিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সদস্য শোকরানা, সোনাতলা উপজেলা চেয়ারম্যান আহসানুল তৈয়ব জাকির, ডা. শাজাহান আলী ও মোশাররফ চৌধুরী এবং জাতীয় পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থীর মধ্যে আছেন অধ্যক্ষ মোকসেদুল আলম।

বগুড়া-২

বর্তমান সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির জেলা সভাপতি শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ। জোটের অঙ্কে দশম জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আসনটি ছেড়ে দেওয়ায় নির্বাচিত হন তিনি। এবারও তিনি মনোনয়ন প্রত্যাশী। তবে আগামীতে জাতীয় পার্টিকে ছাড় দিতে নারাজ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা। এ আসনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন ব্যবসায়ী আকরাম হেসেন, শিবগঞ্জ পৌর মেয়র তৌহিদুর রহমান মানিক, ডা. রেজাউল আলম জুয়েল, আজিজুল হক ও মোস্তাফিজার রহমান।

অন্যদিকে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীর মধ্যে আছেন সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট হাফিজার রহমান, উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক মীর শাহে আলম, মহিলা দলের নেত্রী নূর আফরোজ জ্যোতি ও এম আর ইসলাম স্বাধীন। এছাড়াও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক ও সাবেক ডাকসু ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ জামায়াত নেতা মাওলানা আলমগীর হোসাইনও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রচার প্রচারণায় সরব রয়েছেন।

বগুড়া-৩

বর্তমান সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির বর্তমান নুরুল ইসলাম তালুকদার। গত নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ নেতা আনছার আলী মৃধার হঠাৎ মৃত্যুতে তার ছেলে মারুফ রাব্বী মৃধা প্রার্থী হিসেবে কাজ শুরু করেছেন। এছাড়াও সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম রাজু, অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ আমির আলী হল শাখার সাবেক সভাপতি অজয় কুমার সরকার, প্রবাসী আসাদুর রহমান লাইজু ও অ্যাডভোকেট তবিবর রহমান গণসংযোগ করছেন। অন্যদিকে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে শহর বিএনপির সভাপতি হামিদুল হক চৌধুরী হিরু, আদমদীঘি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল মুহিত তালুকদার, অ্যাডভোকেট শেখ মোখলেছুর রহমান ও সুলতান মাহমুদ চৌধুরী মাঠে রয়েছেন।

বগুড়া-৪

বর্তমান এমপি জাসদ (ইনু) জেলা সভাপতি রেজাউল করিম তানসেন। এবারও তিনি ১৪ দলীয় জোটগত প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন প্রত্যাশী। তবে এবার এ আসনে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী মাঠে রয়েছে। এরা হলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন। কাহালু পৌর মেয়র হেলাল উদ্দিন কবিরাজ মাঠে রয়েছেন। অন্যদিকে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ব্যবসায়ী নেতা মোশারফ হোসেন, সাবেক এমপি মোস্তফা আলী মুকুল, সাবেক এমপি ডা. জিয়াউল হক মোল্লা। জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য সাংবাদিক আব্দুস সালাম বাবু, ফারুক আহম্মেদ, হাজী নুরুল ইসলাম বাচ্চু এবং জামায়াতের নেতা মাওলানা তায়েব আলী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে মাঠে রয়েছেন।

বগুড়া-৫

বর্তমান সংসদ সদস্য হাবিবর রহমান। এবার সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মজিবর রহমান মজনু ও ধুনটের আওয়ামী লীগ নেতা নুরুন্নবী তারেক মাঠে রয়েছে। অন্যদিকে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে সাবেক এমপি গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ, শেরপুর উপজেলা সভাপতি জানে আলম খোকা, বগুড়ার পৌর মেয়র মাহবুবুর রহমান ও কেন্দ্রীয় সদস্য কেএম মাহবুবুর রহমান হারেজ। জাতীয় পার্টির অ্যাডভোকেট শাজাহান তালুকদার ও তাজ মোহাম্মদ প্রার্থী হিসেবে গণসংযোগ করছেন।

বগুড়া-৬

বিএনপির জন্য মযার্দার আসন এটি। কারণ এ আসনে প্রর্থী হন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তবে একাদশ সাধারণ নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হতে পারবেন কি না— এমন শঙ্কা আছে। তিনি প্রার্থী না হলে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের নাম আলোচনায় আছেন। তবে আইনি জটিলতায় তারও প্রার্থিতা বাতিলের সম্ভাবনা রয়েছে। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান প্রার্থী হতে না পারলে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে নাম শোনা যাচ্ছে দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা সভাপতি ভিপি সাইফুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন চাঁনের নাম। এদিকে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মমতাজ উদ্দিন প্রার্থী হিসেবে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও অন্যান্য সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম মন্টু, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনজরুল আলম মোহন, সাবেক ছাত্রনেতা ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সফিকও মনোনয়ের দৌড়ে এগিয়ে আছেন।

এই আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলাম ওমর। তিনি এবারও মনোনয়ন প্রত্যাশী। এছাড়াও জাসদের অ্যাডভোকেট এমদাদ হোসেন ও ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের আনম মামুনুর রশীদও প্রার্থী।

বগুড়া-৭

এ আসনে বর্তমান এমপি জাতীয় পার্টির অ্যাডভোকেট আলতাফ আলী। তিনি এবারও জোটের পক্ষ থেকে মনোনয়ন লাভের প্রত্যাশা করছেন। তবে এ আসনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশন (বিএমএ) বগুড়া শাখার সভাপতি ডা. মোস্তফা আলম নান্নু, গাবতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এ এইচ আজম খান, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক টি জামান নিকেতা, সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম আসাদুর রহমান দুলু, বগুড়া শহর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক রফি নেওয়াজ খান রবিন।

তবে আইনি জটিলতা না থাকলে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নাম আলোচনায় রয়েছে। এছাড়াও সাবেক এমপি হেলালুজ্জামান তালুকদার ও সরকার বাদলও প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন। এছাড়াও জাতীয় পার্টির (জেপি) নেতা জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম মন্টুও মাঠে রয়েছেন।

পাবনা-১

বর্তমান এমপি জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু। তিনি এবারও মনোনয়ন প্রত্যাশী। এছাড়াও সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদও নৌকার প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা করছেন। এছাড়াও সম্ভাব্য মনোনয়ন সাঁথিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, আবদুল্লাহ আল মাহমুদ দেলোয়ারও মনোনয়ন প্রত্যাশী।

বিএনপি থেকে সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে সাবেক মন্ত্রী ও এমপি মেজর (অব.) মনজুর কাদের, বিএনপির সহযোগী সংগঠন কেন্দ্রীয় তাঁতী দলের সহ-সভাপতি ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হাজী ইউনুস আলী, বিএনপি কর্মজীবী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও ধোপাদহ ইউনিয়নের পর পর দুইবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দিন খান।

এছাড়াও জাতীয় পার্টি থেকে কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস-চেয়ারম্যান ও জাতীয় তাঁতী পার্টির সভাপতি সরদার শাহজাহানও মাঠে রয়েছেন। অন্যদিকে জামায়াতের প্রার্থী নিজামীর ছেলে ব্যারিস্টার নাজিব মমিন ছাড়াও বেড়া উপজেলার জামায়াত নেতা ডা. আব্দুল বাসেত খানও জোটের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নের মাঠে আছেন।

পাবনা-২

বর্তমান এমপি জেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি খন্দকার আজিজুল হক আরজু। এছাড়াও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ও প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান কৃষিবিদ ড. মির্জা এম এ জলিল, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক এমপি মরহুম আহমেদ তফিজ উদ্দিনের বড় ছেলে আহমেদ ফিরোজ কবির, ট্যারিফ কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক সচিব ড. মজিবুর রহমান, রাকসুর সাবেক জিএস এবং যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য খন্দকার জাহাঙ্গীর কবির রানা।

বিএনপির সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট এম সেলিম রেজা হাবিব, কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য ও অ্যাবের সাবেক মহাসচিব কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন, জেলা বিএনপির সহসভাপতি সাইফুর রহমান, জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ও উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও বিজিএমএ’র সদস্য শিল্পপতি আবদুল হালিম সাজ্জাদ, জেলা বিএনপির সভাপতি মেজর (অব.) কেএস মাহমুদ মাঠে রয়েছেন।

এছাড়াও জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা কমিটির সভাপতি সাবেক এমপি ও সাবেক জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা মুকবুল হোসেন সন্টু, খিলাফত মজলিশের জেলা কমিটির সভাপতি রওশন আলী মাস্টার নির্বাচনের মাঠে সক্রিয় রয়েছেন।

পাবনা-৩

বর্তমান এমপি মকবুল হোসেন। তিনি ছাড়াও এ আসনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হলেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. আবদুল হামিদ মাস্টার, পাবনা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা অ্যাডভোকেট শাহ আলম, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবদুল আলিম, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক আতিকুর রহমান আতিক, চাটমোহর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন সাখো ভোটের মাঠে সক্রিয় রয়েছেন।

এদিকে বিএনপির সম্ভাব্য মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে চাটমোহর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কে এম আনোয়ারুল ইসলাম; রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা ও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মাসুদ খন্দকার এবং চাটমোহর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো. হাসাদুল ইসলাম হীরাসহ জাতীয় পার্টি থেকে অ্যাডভোকেট আ. ছাত্তারও মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে ভোটের মাঠে রয়েছেন।

পাবনা-৪

বর্তমান এমপি জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরিফ ডিলু। আগামী সংসদ নির্বাচনেও তিনি শক্ত প্রার্থী। এছাড়াও জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সাবেক এমপি পাঞ্জাব আলী বিশ্বাস দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী। ১৯৮৬ সালে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল থেকে এ আসনে সর্বকনিষ্ঠ এমপি হন তিনি। এছাড়াও কেন্দ্রীয় মৎস্যজীবী লীগের সহসভাপতি বিশিষ্ট শিল্পপতি ও সমাজসেবক প্রকৌশলী মো. আবদুল আলীম, আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সদস্য ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রবিউল আলম বুদু মনোনয়ন প্রত্যাশী।

বিএনপি থেকে সাবেক এমপি সিরাজুল ইসলাম সরদার, বিএনপি নেতা ও বিশিষ্ট শিল্পপতি আকরাম আলী খান সঞ্জু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, সাবেক পৌর মেয়র মকলেছুর রহমান বাবলু ও পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টুসহ জামায়াত নেতা আবু তালেব মন্ডল, জাতীয় পার্টির সাবেক জেলা সভাপতি হায়দার আলীও মনোনয়ন প্রত্যাশায় মাঠে আছেন।

পাবনা-৫

বর্তমান এমপি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্স। এছাড়াও জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রেজাউল রহিম লাল, পাবনা পৌরসভার সাবেক মেয়র ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোশারফ হোসেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মাজহারুল ইসলাম মানিক মনোনয়ন প্রত্যাশায় সক্রিয় রয়েছেন।

এদিকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী বিআইডব্লিউটিসির সাবেক চেয়ারম্যান শ্রমিক নেতা অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস ও পাবনা পৌরসভার তিনবার নির্বাচিত মেয়র কামরুল হাসান মিন্টু। অন্যদিকে জেলা জাতীয় পার্টির সহসভাপতি ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা আলী ওরফে নাসির চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের খান কদরও মনোনয়ন প্রত্যাশী।

সিরাজগঞ্জ-১

বর্তমান এমপি আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। এবারও তিনি যদি কোনো কারণে প্রার্থী না হন তবে সে ক্ষেত্রে তার ছেলে ইঞ্জিনিয়ার তানভীর শাকিল জয় মনোনয়ন প্রত্যাশী। অন্যদিকে বিএনপি জোটগত নির্বাচন করলে উপজেলা বিএনপির সভাপতি সেলিম রেজা তালুকদার, শহর বিএনপির সভাপতি নাজমুল হাসান তালুকদার রানা, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মকবুল হোসেন চৌধুরী ও কণ্ঠশিল্পী কনক চাপা এ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী।

সিরাজগঞ্জ-২

বর্তমান এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্না। তবে এ আসনে কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদিকা জান্নাত আরা তালুকদার হেনরীও মনোনয়ন প্রত্যাশী। অন্যদিকে জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আমিনুল ইসলাম ঝন্টু এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও মোহাম্মদ হানিফও মনোনয়ন প্রত্যাশী।

সিরাজগঞ্জ-৩

এ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য গাজী ম ম আমজাদ হোসেন মিলন। এছাড়াও মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে ভোটের মাঠে কাজ করছেন পেট্রোবাংলার সাবেক চেয়ারম্যান হোসেন মনসুর, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শিল্পপতি লুৎফর রহমান দিলু, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সুইট, সাবেক সংসদ সদস্য ইসাহাক তালুকদারের ছেলে অ্যাডভোকেট ইমরুল হোসেন ইমন তালুকদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল হাদী আলমাজি জিন্নাহ।

অন্যদিকে বিএনপি দলীয় জোটের মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে সাবেক এমপি আব্দুল মান্নান তালুকদার, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সাইফুল ইসলাম শিশির, তাড়াশ উপজেলা বিএনপি সভাপতি খন্দকার সেলিম জাহাঙ্গীর, উপজেলা চেয়ারম্যান আইনুল হক ও ঢাকা আইনজীবী ফোরামের নেতা অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা রয়েছেন।

সিরাজগঞ্জ-৪

এ আসনের বর্তমান এমপি আওয়ামী লীগের তানভীর ইমাম। এছাড়াও মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হাজী জাহেদুল ইসলাম, সাবেক এমপি আব্দুল লতিফ মির্জার মেয়ে মুক্তি মির্জা, উপজেলা চেয়ারম্যান মারুফ বিন হাবিব ও সাবেক এমপি শফিকুল ইসলাম শফি। অন্যদিকে ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে সাবেক এমপি এম. আকবর আলী, উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কাজী কামাল, নারী নেত্রী অ্যাডভোকেট সিমকী ইমাম, কেন্দ্রীয় যুবদলের সদস্য আব্দুল ওয়াহাব, উপজেলা বিএনপির উপদেষ্টা কেএম শরফউদ্দিন মঞ্জু ও জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম খান।

সিরাজগঞ্জ-৫

বর্তমান এমপি আব্দুল মজিদ মণ্ডল। তবে আসন্ন নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হবেন না বলে এরইমধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন। তাই এবার এ আসনে সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে ভোটের মাঠে জোরেশোরে প্রচারণা করছেন বর্তমান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের অন্তর্গত বনানী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মীর মোশাররফ হোসেন, কেন্দ্রীয় যুবলীগের ক্রীড়া সম্পাদক মুশফিকুর রহমান মোহন। অন্যদিকে ১৮ দলের পক্ষ থেকে তরুণ নেতা কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলীম, বিএনপি নেতা গোলাম মওলা খান বাবলু ও চৌহালী উপজেলা চেয়ারম্যান মেজর (অব.) মামুনও গণসংযোগ করছেন। এছাড়াও অধ্যক্ষ আলী আলম জামায়াতের মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে ভোটের মাঠে আছেন।

সিরাজগঞ্জ-৬

বর্তমান এমপি হাসিবুর রহমান স্বপন। এ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক এমপি চয়ন ইসলাম, কেন্দ্রীয় যুবলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. সাজ্জাদুল হায়দার লিটন। অন্যদিকে ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত ডা. এম এ মতিনের ছেলে এমএ মুহিত, সাবেক এমপি কামরুদ্দিন এহিয়া খান মজলিশ, হোসেন শহীদ গ্যাদন মাহমুদ ও কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি গোলাম সরোয়ার।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১

বর্তমান এমপি গোলাম রাব্বানী। এবারও তিনি সম্ভাব্য প্রার্থী। সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ এনামুল হকসহ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. সামিল উদ্দীন আহম্মেদ শিমুল এবং আওয়ামী লীগ নেতা প্রকৌশলী মাহতাব উদ্দীন মনোনয়ন প্রত্যাশী। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান মিয়া, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য বেলাল-ই-বাকী ইদ্রিশী। এছাড়াও জাতীয় পার্টি থেকে আলাউদ্দিন টিপু ও জাসদ নেতা আজিজুর রহমান আজিজও প্রার্থী হিসেবে সরব রয়েছেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২

এ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বিশ্বাস। এছাড়াও মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে ভোটের মাঠে রয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি জিয়াউর রহমান, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম আনোয়ার, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান খুরশেদ আলম বাচ্চু, নাচোল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের। ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, গোমস্তাপুর উপজেলা চেয়ারম্যান বাইরুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আসাদুল্লাহ আহমেদ, সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সৈয়দা আশিফা আশরাফি পাপিয়া। এছাড়াও জামায়াতের জেলা অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অধ্যাপক ইয়াহিয়া খালেদও তৎপরতা চালাচ্ছেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩

এই আসনে বর্তমান এমপি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওদুদ। তিনি এরারও মনোনয়ন প্রত্যাশী। তিনি ছাড়াও এবার আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী ভোটের মাঠে তৎপরতা চালাচ্ছেন। এরা হলেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওদুদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রুহুল আমিন। অন্যদিকে বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে দলের যুগ্ম মহাসচিব হারুনুর রশিদ হারুন। এছাড়াও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক আব্দুল ওয়াহেদও মনোনয়ন প্রত্যাশী। এছাড়াও ঢাকা মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি নুরুল ইসলাম বুলবুল, জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি নজরুল ইসলাম সোনা, জেলা জাসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনিরও প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন।

আরও পড়ুন-

মাঠের লড়াইয়ে শক্তিশালী জাপা, আ.লীগে একাধিক প্রার্থী

সারাবাংলা/এনআর/একে

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন