বিজ্ঞাপন

রোহিঙ্গা সংকটে বাংলাদেশে দাঙ্গার শঙ্কা : ক্রাইসিস ওয়াচ

January 4, 2018 | 10:53 am

এমএকে জিলানী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

বিজ্ঞাপন

ঢাকা : চলমান রোহিঙ্গা সংকটের কারণে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধতে পারে। চলতি বছর (২০১৮ সাল) বাংলাদেশে ভোটের বছর। এ বছরে রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে।

যুদ্ধ এবং চরমপন্থা প্রতিরোধ বিষয়ে বেলজিয়ামভিত্তিক বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্রাইসিস ওয়াচ বুধবার এক প্রতিবেদনে এ শঙ্কার কথা জানিয়েছে।

নতুন বছর ২০১৮ সালে বিশ্বের কোথায় কোথায় সহিংস সংঘর্ষ হতে পারে, এমন ১০টি আশঙ্কা নিয়ে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। ওই প্রতিবেদনের ৩ নম্বরে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশে সহিংস সংঘাতময় ঝুঁকির কথা বলা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর কারণে শুধু বাংলাদেশই নয় পুরো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ঝুঁকিতে আছে। নির্যাতিত এবং নিপীড়িত এই জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশ হাসিমুখে ঠাঁই দিয়েছে। লম্বা সময় ধরে বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে (প্রায় ১০ লাখ)  এই আশ্রয় দিতে হচ্ছে।  এতে স্থানীয় বাসিন্দাদের কর্মকাণ্ডে প্রভাব পড়ছে।

এরই মধ্যে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে স্থানীয় জনগণের সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। রোহিঙ্গারা স্থানীয় শ্রমবাজারে ঢুকে পড়েছে। স্থানীয়দের শ্রমমূল্য কমে যাওয়ায় ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। যারা এক সময়ে রোহিঙ্গাদের হাসিমুখে বরণ করেছিল তাদের মধ্যে এখন বিরক্ত ও ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

রোহিঙ্গা সমস্যা অতি দ্রুত সমাধান না করতে পারলে সামনের দিনে ভয়াবহ ঝুঁকিতে পরবে বাংলাদেশ। এমনকি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধারও আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া ভোটের বছরে রোহিঙ্গা সমস্যা বাংলাদেশের রাজনীতিতেও বড় ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, পুলিশের তল্লাশি চৌকিতে হামলা এবং নিরাপত্তা বাহিনীর ১২ জন কর্মীকে হত্যার অভিযোগে চলতি বছরের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রাখাইনে সন্ত্রাস নির্মূল কার্যক্রম হাতে নেয়। এতে নিরীহ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর শুরু হয় খুন, ধর্ষণ, হত্যাসহ অমানবিক নির্যাতন। পুড়িয়ে দেওয়া হয় রাখাইনে রোহিঙ্গাদের গ্রামের পর গ্রাম। যা জাতিগত নিধন এবং গণহত্যায় রূপ নেয়। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।

বিজ্ঞাপন

রাখাইনে সহিংসতা জোরালো হওয়ার পর হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সাড়ে ছয়লাখেরও বেশি মানুষ। সব মিলিয়ে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের একাধিক আশ্রয় শিবিরে অবস্থান করছে।

বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও রাষ্ট্র প্রধানরা এ ঘটনাকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে অভিহিত করেছেন। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন এই ঘটনাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের ‘পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’ আখ্যা দিয়েছে। রাখাইন সহিংসতাকে জাতিগত নিধন আখ্যা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও। তুমুল সমালোচনা করছে যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ।

সারাবাংলা/জেআইএল/একে

 

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন