রুশ-মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তি বাতিলের কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র

।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।

স্নায়ুযুদ্ধের সময়কালে হওয়া এক ঐতিহাসিক ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একইসঙ্গে ট্রাম্প সতর্ক করে দিয়ে বলেন, আমেরিকা তার প্রতিপক্ষ রাশিয়া ও চীনকে চাপ প্রয়োগ করতে পারমাণবিক অস্ত্র ভান্ডার সমৃদ্ধ করে যাবে। সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে একথা বলা হয়।

পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ ও ইউরোপকে ঝুঁকির হাত থেকে বাঁচাতে ১৯৮৭ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান ও শেষ সোভিয়েত নেতা মিখাইল গর্বাচেভ ‘ইন্টারমিডিয়েট-রেঞ্জ নিউক্লিয়ার ফোর্সেস (আইএনএফ)’ চুক্তিটি স্বাক্ষর করেছিলেন। স্নায়ুযুদ্ধের শেষ সময়ে করা এই চুক্তিতে ৫শ কিলোমিটার থেকে ৫ হাজার ৫শ কিলোমিটার পাল্লার ভূমি থেকে উৎক্ষেপিত পারমাণবিক ও সাধারণ উভয় প্রকার ক্ষেপণাস্ত্র নিষিদ্ধ করা হয়েছিলো।

যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, চুক্তি লঙ্ঘন করে রাশিয়া নভোতর-৯এম৭২৯ নামের যে মধ্যম পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের উদ্ভাবন করেছে তা খুব সহজেই যেকোন ন্যাটো দেশে হামলা চালাতে সক্ষম। চলতি বছরের জুলাইয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে রাশিয়ার পক্ষ থেকে কোন সন্তোষজনক উত্তর দেওয়া হয়নি।

ট্রাম্প বলেন, রাশিয়া পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তিটি লঙ্ঘন করছে। তাই অন্যদের বোধশক্তির উদয় না হওয়া পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক অস্ত্রাগার প্রসারে কাজ করে যাবে। রাশিয়া, চীন বা অন্য যে কেউ যুক্তরাষ্ট্রের সাথে এই খেলাটি খেলতে চায় তারাই হুমকি। রাশিয়া চুক্তিটির ব্যাপারে আন্তরিক নয় এমনকি নিজেদের সাথেও নয়!

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়ার ব্যাপারে রাশিয়ার সিকিউরিটি কাউন্সিলের সেক্রেটারি নিকোলাই পেথ্রোসেভ বলেছেন, চুক্তিটির ব্যাপারে পারস্পরিক ক্ষোভ প্রশমিত করতে রাশিয়া আলোচনায় প্রস্তুত।

ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকোভ বলেন, আমরা আমেরিকার ব্যাখ্যা শুনতে চাই। চুক্তি থেকে সরে গেলে রাশিয়া নিজের নিরাপত্তার কথা ভাববে।

এদিকে মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বল্টন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি থেকে সরে আসলে পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধে তা বাধার কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

জার্মানির পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে বলা হয়, ট্রাম্প এই চুক্তি থেকে সরে আসলে তা হবে ভীষণ পরিতাপের। এ চুক্তিটি ইউরোপের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

পরাশক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বে অন্যতম সামরিক শক্তি রাশিয়ার মধ্যকার এই অস্থিরতায় সাবেক সোভিয়েত নেতা মিখাইল গর্বাচেভ বলেন, পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণে যে প্রচেষ্টা চালানো হয়েছিলো। চুক্তি বাতিল হয়ে গেলে তা নস্যাৎ হয়ে যাবে!

এদিকে বিশ্বশক্তিতে উদীয়মান চীন বেশ নির্ভার। কোন ধরনের চুক্তিতে দেশটি দায়বদ্ধ নেই বিধায় চীনের জন্য এ ধরনের অস্ত্র তৈরিতে কোন বাধা নেই।

সারাবাংলা/এনএইচ