বিজ্ঞাপন

ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করা হলে ইউরোপ লক্ষ্যবস্তু হবে: পুতিন

October 25, 2018 | 12:07 pm

।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।

বিজ্ঞাপন

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তি ‘ইন্টারমিডিয়েট-রেঞ্জ নিউক্লিয়ার ফোর্সেস (আইএনএফ)’ বাতিল করে এবং ইউরোপে মিসাইল সরবরাহ করে তাহলে ইউরোপ লক্ষ্যবস্তু হবে বলে জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বৃহস্পতিবার (২৫ অক্টোবর) সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে একথা জানানো হয়।

বুধবার (২৪ অক্টোবর) পুতিন সাংবাদিকদের বলেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র আইএনএফ চুক্তি থেকে বেরিয়ে যায় তাহলে প্রশ্নটি হলো তারা তাদের মিসাইলগুলো দিয়ে করবেটা কি? যদি তারা ওসব মিসাইল ইউরোপে সরবরাহ করে তাহলে আমাদের প্রতিক্রিয়া একই হবে।

এক্ষেত্রে ইউরোপ লক্ষ্যবস্তু হবে উল্লেখ করে পুতিন জানান, যুক্তরাষ্ট্র যদি ইউরোপের কোন দেশে মধ্যম পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করে তবে রাশিয়া ঐ দেশগুলোকে নিজেদের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার আওতায় আনবে।

বিজ্ঞাপন

যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপকে কেন বিপদে ফেলতে চায় তা তিনি বুঝতে পারছেন বলেই জানান পুতিন। পুতিন বলেন, ইউরোপের দেশগুলোর বুঝা উচিত তারা ঝুঁকিতে পড়বে। আমি এটার কোন কারণ দেখি না। এটা আমাদের পছন্দ নয়। আমরা এটা চাই না।

১৯৮৭ সালে স্নায়ুযুদ্ধের সময়কালে রাশিয়া ও আমেরিকার মধ্যে হওয়া ঐতিহাসিক ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তি ‘ইন্টারমিডিয়েট-রেঞ্জ নিউক্লিয়ার ফোর্সেস (আইএনএফ)’ থেকে ট্রাম্পের সরে আসার ইঙ্গিতের পরিপ্রেক্ষিতে পুতিন এই কড়া জবাব দিলেন।

স্নায়ুযুদ্ধের সময়কালে হওয়া এক ঐতিহাসিক ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একইসঙ্গে ট্রাম্প সতর্ক করে দিয়ে বলেন, আমেরিকা তার প্রতিপক্ষ রাশিয়া ও চীনকে চাপ প্রয়োগ করতে

বিজ্ঞাপন

ইউরোপকে ঝুঁকির হাত থেকে বাঁচাতে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান ও শেষ সোভিয়েত নেতা মিখাইল গর্বাচেভ আইএনএফ চুক্তিটি স্বাক্ষর করেছিলেন। স্নায়ুযুদ্ধের সময়ে করা এ চুক্তিতে ৫শ কিলোমিটার থেকে ৫ হাজার ৫শ কিলোমিটার পাল্লার ভূমি থেকে উৎক্ষেপিত পারমাণবিক ও সাধারণ উভয় প্রকার ক্ষেপণাস্ত্র নিষিদ্ধ করে দেশ দুটি। সেসময় যুক্তরাষ্ট্র তার ইউরোপ মিত্র ব্রিটেন ও পশ্চিম জার্মানি থেকে নিজেদের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা সরিয়ে নেয় এবং সোভিয়েত ইউনিয়নও ইউরোপে আঘাত হানা যাবে এমন ক্ষেপণাস্ত্র নিষ্ক্রিয় করে।

কিন্তু গত সপ্তাহে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, রাশিয়া পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তিটি লঙ্ঘন করছে। দেশটি চুক্তির ব্যাপারে আন্তরিক নয়। অপর পরাশক্তি চীন এই চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত নয় বলে চুক্তিটি অকার্যকর বলেও জানান ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্র জানায়, রাশিয়া ২০১৪ সাল থেকে নিষিদ্ধ করা ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তির বিকাশ করছে। নভোতর-৯এম৭২৯ নামের যে মধ্যম পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের উদ্ভাবন রুশরা করেছে তা খুব সহজেই যেকোন ন্যাটোভুক্ত দেশে হামলা চালাতে সক্ষম। চলতি বছরের জুলাইয়ে এ বিষয়ে রাশিয়ার কাছে বিস্তারিত জানতে চাওয়া হলেও সদুত্তর পাওয়া যায়নি।

তবে পুতিন এই দাবি অস্বীকার করে বলেন, আমরা নই বরং যুক্তরাষ্ট্রই এ চুক্তি ভেঙ্গেছে। চুক্তিটি ভেঙ্গে গেলে অস্ত্রের প্রতিযোগিতা বাড়বে। যা হবে খুব ভয়াবহ।

বিজ্ঞাপন

স্নায়ুযুদ্ধের সময়কালে হওয়া এক ঐতিহাসিক ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একইসঙ্গে ট্রাম্প সতর্ক করে দিয়ে বলেন, আমেরিকা তার প্রতিপক্ষ রাশিয়া ও চীনকে চাপ প্রয়োগ করতে

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাটো মিত্ররা ট্রাম্পের চুক্তি থেকে সরে যাবার বিষয়ে ব্যাখ্যা জানতে বৃহস্পতিবার আলোচনায় বসছেন। সামরিক জোটটির প্রধান জেনস স্টোলেটেনবার্গ বলেন, আমার মনে হয়না রাশিয়ার নতুন ক্ষেপণাস্ত্রকে হুমকি মনে করে ইউরোপের দেশগুলোতে নতুন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। তবে চুক্তি ভঙ্গের জন্য রাশিয়াকে অভিযুক্ত করেন ন্যাটো প্রধান।

জার্মানির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ট্রাম্প এই চুক্তি থেকে সরে আসলে তা হবে ভীষণ পরিতাপের। সামরিক ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তিটি ইউরোপের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

সারাবাংলা/এনএইচ

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন