বিজ্ঞাপন

বাদ পড়ায়ও এক সুতোয় গাঁথা সৌম্য-তাসকিন

January 7, 2018 | 6:05 pm

মোসতাকিম হোসেন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

বিজ্ঞাপন

দুজনের ওয়ানডে অভিষেক প্রায় কাছাকাছি সময়ে। ২০১৪ সালে ভারতের বিপক্ষে অভিষেকেই চমকে দিয়েছিলেন তাসকিন আহমেদ, চন্ডিকা হাথুরুসিংহে সে সময় কেবল দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। তিন মাস পর জিম্বাবুয়ের সঙ্গে ওয়ানডে অভিষেক হলো সৌম্য সরকারের। এরপর ফর্মের কারণে দুজন কোনো ওয়ানডে সিরিজে বাদ পড়েননি। সেই ‘দুর্ভাগ্যও’ একসঙ্গে হলো, ত্রিদেশীয় সিরিজে তাসকিন-সৌম্য একসঙ্গেই বাদ পড়লেন।

কাকতালই বটে, সেটিও হাথুরুসিংহে বিদায় নেওয়ার ঠিক পর পর! বাদ পড়াটাও যেন অদৃশ্য একটা সুতোয় বেঁধে দিল সৌম্য-তাসকিনকে।

ওয়ানডে দল থেকে যে দুজন বাদ পড়তে পারেন, সেই আভাস পাওয়া গিয়েছিল আগেই। ওয়ানডে ফর্মটা সৌম্যর ভালো যাচ্ছিল না বেশ কিছুদিন ধরেই। সর্বশেষ ছয় ওয়ানডেতে সৌম্য মাত্র একবার দুই অঙ্ক ছুঁতে পেরেছেন, সর্বোচ্চ ২৮। টি-টোয়েন্টিতে ভালো করলেও বিপিএলে আবার নিজেকে হারিয়ে ফেলেছিলেন। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন সেই ধারাবাহিকতার অভাবই উল্লেখ করলেন কারণ হিসেবে।

বিজ্ঞাপন

‘সৌম্য সব ফরম্যাটেই কিছুদিন ধরে খেলে যাচ্ছে। ওর প্রতিভা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। যেহেতু একটু ধারাবাহিকতার মধ্যে নেই, এজন্য আমরা ওকে বিরতি দিয়েছি। মানসিকভাবে নিজেকে ফিরে পাওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক ম্যাচে সৌম্যর একটা বিরতি প্রয়োজন। ধারাবাহিকতা রক্ষা করা খুব কঠিন জিনিস। একবার যদি ব্রেক ডাউন হয় তাহলে এটা ফিরে পাওয়া খুব কঠিন।’

মিনহাজুল দাবি করলেন, সৌম্য তাদের পরিকল্পনাতেই আছেন, ‘সৌম্য আমাদের পরিকল্পনার মধ্যেই আছে। আর সে আমাদের পুলভুক্ত খেলোয়াড়। আমরা আশা করি সে আবার ফর্মে ফিরে আসবে।’

তবে ২০১৫ বিশ্বকাপের পর সৌম্য বাংলাদেশের ওয়ানডে দলের অপরিহার্যই হয়ে গিয়েছিলেন। এরপর পাকিস্তান, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে কাটিয়েছেন নিজের সেরা সময়। ২০১৫ সালের শেষে জিম্বাবুয়ের বাংলাদেশ সফরে চোটের কারণে দলে ছিলেন না। কাকতালীয়ভাবে, তাসকিনও ওই সিরিজে চোটের জন্য দর্শক হয়ে ছিলেন। দুজন দলে নিয়মিত হওয়ার পর ওই একটা ওয়ানডে সিরিজেই একসঙ্গে স্কোয়াডে ছিলেন না।

বিজ্ঞাপন

এরপর সৌম্য আফগানিস্তানের সঙ্গে সিরিজে খেলেছেন সব ম্যাচে। ইংল্যান্ডের সঙ্গে ওয়ানডের প্রথম একাদশে সুযোগ না পেলেও স্কোয়াডে অন্তত ছিলেন। নিউজিল্যান্ড সিরিজে অবশ্য সুযোগ পেয়েছিলেন মাত্র একটি ওয়ানডেতে। তাসকিন যদিও আফগানিস্তান, ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড সিরিজে সবকটি ম্যাচেই খেলেছেন।

গত বছর শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ওয়ানডেতে আবার দুজন হয়েছেন নিয়মিত। এরপর আয়ারল্যান্ডের ত্রিদেশীয় সিরিজ ও চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেও দুজন খেলেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার দুঃস্বপ্নের ওয়ানডে সিরিজও ভালো যায়নি দুজনের। সৌম্য তো ব্যর্থই, তাসকিনও তিন ম্যাচে পেয়েছেন মাত্র দুই উইকেট। কিন্তু সব ম্যাচেই রান দিয়েছেন ওভারপ্রতি ছয়ের বেশি।

সেই হিসেবে তাসকিনের বাদ পড়াটাও খুব একটা অপ্রত্যাশিত নয়। বিপিএলে শুরুটা ভালো হলেও পরের দিকে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলেছেন। এখানেও কাকতাল, চিটাগং ভাইকিংসের হয়ে সৌম্য-তাসকিন ছিলেন সতীর্থ। মনে করিয়ে দেওয়া যায়, প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীনও চিটাগং ভাইকিংসের উপদেষ্টা হিসেবেই ছিলেন।

তাসকিনের ব্যাপারেও মিনহাজুল আবেদীনের কন্ঠে সৌম্যর মতোই প্রতিধ্বনি, ‘তাসকিন আহমেদেরও একই অবস্থা। শেষ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে প্রত্যাশিত ফর্মে ছিল না। সেই হিসেবে আমরা মনে করি ওর ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলার প্রয়োজন আছে। বিশেষ করে লংগার ভার্সন ক্রিকেট। এই কারনেই তাকে একটা বিরতি দেওয়া হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

আপাতত বিসিএলে দুজন নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ পাচ্ছেন। তবে ওয়ানডেতে ফেরার জন্য আসল পরীক্ষাটা হবে সামনের মাস থেকে শুরু প্রিমিয়ার লিগে। কে জানে, বাদ পড়াটা যেমন একসঙ্গে, দুজনের ফেরাটাও হয়তো একসঙ্গেই হবে!

সারাবাংলা/এএম

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন