বিজ্ঞাপন

‘শীর্ষপর্যায়ের আগ্রহে’ আ.লীগে ফিরছেন মনজুর, মনোনয়ন নেবেন রোববার

November 10, 2018 | 8:01 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম ব্যুরো: রাজনৈতিক গুরু এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর উপর অভিমান করে পাঁচ বছর বিএনপির রাজনীতি করেছিলেন, আবার প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে সেই দলও ছেড়েছিলেন। এরপর তিনবছর রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় ছিলেন। বেশ কিছুদিন ধরেই গুঞ্জন ছিল, ফের আওয়ামী লীগে যোগ দিচ্ছেন তিনি।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঠিক আগ মুহূর্তে এসে সত্যি হতে যাচ্ছে সেই গুঞ্জন। আওয়ামী লীগে ফেরার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র এম মনজুর আলম।

চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং ও হালিশহর) আসনে লড়তে রোববার (১১ নভেম্বর) আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করবেন বলে সারাবাংলাকে জানিয়েছেন ‘ভদ্র ও সজ্জন’ হিসেবে পরিচিত সাবেক এই জনপ্রতিনিধি।

বিজ্ঞাপন

শনিবার বিকেলে যোগাযোগ করা হলে এম মনজুর আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কাল (রোববার) মনোনয়ন ফরম নেব।’

আওয়ামী লীগে ফিরছেন কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে মনজুর বলেন, ‘আর কোথায় যাব? আর কোথাও যাওয়ার সুযোগ আছে ? আমার ঘর তো এটাই (আওয়ামী লীগ)।’

আওয়ামী লীগের শীর্ষপর্যায়ের সম্মতিতেই মনজুর মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করছেন বলে তার ঘনিষ্ঠজনেরা জানিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

এই বিষয়ে এম মনজুর আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘অবশ্যই আগ্রহ আছে। সেজন্যই মনোনয়ন ফরম নিচ্ছি। এর বেশি আপাতত বলব না।’

১৯৯৪ সাল থেকে টানা ১৭ বছর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছিলেন বর্ষীয়ান আওয়ামী লীগ নেতা (বর্তমানে প্রয়াত) এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। পুরো সময় মহিউদ্দিনের পরিষদে ছিলেন দক্ষিণ কাট্টলী থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগ সমর্থিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর এম মনজুর আলম। মনজুর আলমের বাবা আবদুল হাকিম কন্ট্রাক্টর ছিলেন পাহাড়তলী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি নগর আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্যও ছিলেন।

মহিউদ্দিনের অনুপস্থিতিতে তাঁর বিশ্বস্ত হিসেবে বেশ কয়েকবার ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পেয়েছিলেন মনজুর। ওয়ান-ইলেভেন পরবর্তী জরুরি অবস্থার সময় মহিউদ্দিন যখন জেলে যান, মনজুর তখনও ভারপ্রাপ্ত মেয়র। তবে মহিউদ্দিন চৌধুরী মুক্ত হওয়ার পর গুরু-শিষ্যের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়।

সেই দূরত্বের জেরে বিএনপিতে যোগ দিয়ে ২০১০ সালের ১৭ জুন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (সিসিসি) নির্বাচনে মেয়র পদে দাঁড়ান মনজুর। প্রায় এক লাখ ভোটের ব্যবধানে বিএনপি সমর্থিত মনজুরের কাছে হেরে যান তৎকালীন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিউদ্দিন চৌধুরী।

বিজ্ঞাপন

নির্বাচনে জেতার পর মনজুরকে দেওয়া হয় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টার পদ।

বিএনপির রাজনীতিতে গেলেও ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী পালন, বঙ্গবন্ধু ও সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের নামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনাসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখেন তিনি।

এদিকে ওই নির্বাচনের বছরখানেক পর থেকেই মহিউদ্দিনের সঙ্গেও দূরত্ব কমে আসে মনজুরের। পরে তাদের মধ্যে আবারও সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। মেয়র থাকাকালে মনজুরের ‘ব্যর্থতা’ নিয়ে নানা মহলে সমালোচনা হলেও মহিউদ্দিনের কন্ঠে কখনোই তা শোনা যায়নি। আর মনজুরের মধ্যেও ছিল শ্রদ্ধা এবং আনুগত্য। মৃত্যুর আগে মহিউদ্দিন মনজুরকে আওয়ামী লীগে ফেরাতে উদ্যোগী ছিলেন।

এরপর ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল বিএনপির প্রার্থী হিসেবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নিলেও মনজুর আলম ভোট গ্রহণ শুরুর তিন ঘণ্টার মাথায় ‘কারচুপির’ অভিযোগে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। সেইসঙ্গে রাজনীতি ছাড়ারও ঘোষণা দেন তিনি।

এরপর তিন বছর ধরে রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় মনজুর আলম কেবল বঙ্গবন্ধু জন্ম-মৃত্যুদিনে পারিবারিক প্রতিষ্ঠান ‘মোস্তফা হাকিম ফাউন্ডেশনের’ পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন অব্যাহত রাখেন।

সারাবাংলা/আরডি/এসএমএন

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন