বিজ্ঞাপন

দ্বিতীয় দিন শেষে চালকের আসনে বাংলাদেশ

November 12, 2018 | 3:20 pm

।। স্পোর্টস ডেস্ক ।।

বিজ্ঞাপন

সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে সফরকারী জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৬০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ ৫২২ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে। রান পাহাড়ে চাপা পড়ে ব্যাটিংয়ে নামা জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় দিন শেষে এক উইকেট হারিয়ে তুলেছে ২৫ রান। স্বাগতিক বাংলাদেশ এগিয়ে ৪৯৭ রান। উইকেটে অপরাজিত ব্রায়ান চারি (১০) এবং ডোনাল্ড তিরিপানো (০)। তাইজুল ফিরিয়ে দেন ওপেনার হ্যামিলটন মাসাকাদজাকে। বিদায়ের আগে জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক ৪৪ বলে করেন ১৪ রান।

দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।প্রথম দিন প্রথম আর শেষ সেশনে উইকেট হারায় বাংলাদেশ। দলীয় ২৬ রানের মাথায় টপঅর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে বিপাকে পড়লেও মুশফিকুর রহিম এবং মুমিনুল হকের দুর্দান্ত দুটি সেঞ্চুরিতে প্রথম দিন শেষে বাংলাদেশ ৫ উইকেট হারিয়ে তোলে ৩০৩ রান।

ম্যাচের শুরুতে সতর্ক থেকে খেললেও ইনিংসের সপ্তম ওভারে বিদায় নেন ওপেনার ইমরুল কায়েস। পেসার কাইল জারভিসের বলে উইকেটের পেছনে চাকাভার গ্লাভসবন্দি হন তিনি। লাফিয়ে উঠা বল ব্যাটের ভেতরের কানায় স্পর্শ করলে ১৬ বলে কোনো রান না করেই বিদায় নিতে হয় ইমরুলকে। দলীয় ১৩ রানের মাথায় বাংলাদেশ প্রথম উইকেট হারায়। স্কোরবোর্ডে আর তিন রান যোগ হতেই বিদায় নেন আরেক ওপেনার লিটন দাস। জারভিসের বলে ইনিংসে নবম ওভারে মিডউইকেটে মাভুতার তালুবন্দি হন তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে ৩৫ বলে ৯ রান করেন লিটন।

বিজ্ঞাপন

ইনিংসের ১২তম ওভারে তিরিপানোর বলে খোঁচা দিয়ে দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাচ তুলে দেন অভিষিক্ত মোহাম্মদ মিঠুন। বিদায়ের আগে কোনো রান করতে পারেননি তিনি। দলীয় ২৬ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ব্যক্তিগত ৯ রানে ক্যাচ তুলে দিয়েও জীবন পান মুমিনুল হক। প্রথম সেশন শেষে বাংলাদেশ তিন উইকেট হারিয়ে তোলে ৫৬ রান। দ্বিতীয় সেশনে আর কোনো উইকেট যায়নি। শেষ সেশনে নামার আগে বাংলাদেশের সংগ্রহ বেড়ে দাঁড়ায় ২০৭/৩। তার আগেই ক্যারিয়ারের সপ্তম টেস্ট সেঞ্চুরি করেন মুমিনুল। তৃতীয় সেশনে ব্যাটিংয়ে নেমে মুশফিক ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ টেস্ট সেঞ্চুরির দেখা পান।

তৃতীয় সেশন শেষের কিছু আগেই বিদায় নেন মুমিনুল হক। দলীয় ২৬ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারানোর পর জুটি গড়েন মুমিনুল-মুশফিক। তেন্দাই চাতারার বলে ব্রায়ান চারির হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ২৪৭ বলে ১৯টি বাউন্ডারিতে ১৬১ রান করা মুমিনুল। ইনিংসের ৮৬তম ওভারে আউট হন তিনি। তার আগে মুশফিকের সঙ্গে ২৬৬ রানের জুটি গড়েন মুমিনুল। ২৯২ রানের মাথায় বাংলাদেশ চতুর্থ উইকেট হারায়। দিনের খেলা এক ওভার বাকি থাকতে বিদায় নেন নাইটওয়াচম্যান তাইজুল ইসলাম (৪)। দলীয় ২৯৯ রানে বাংলাদেশ হারায় পঞ্চম উইকেট। ৫ উইকেট হারিয়ে ৩০৩ রান করে প্রথম দিন শেষ করে টাইগাররা।

দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনে কোনো উইকেট হারায়নি বাংলাদেশ। ৫ উইকেট ৩৬৫ রান তুলে দ্বিতীয় সেশন শুরু করেন মুশফিক-মাহমুদুল্লাহ। দ্বিতীয় সেশনের শুরুতেই বিদায় নেন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (৩৬)। ৩৭২ রানের মাথায় ষষ্ঠ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর দ্রুত বিদায় নেন আরিফুল হক (৪)। আরিফুলের উইকেট নেওয়ার মধ্য দিয়ে পাঁচ উইকেট তুলে নেন কাইল জারভিস। এরপর জুটি গড়েন মুশফিক-মিরাজ। দ্বিতীয় সেশন শেষে বাংলাদেশের রান বেড়ে দাঁড়ায় ৪৭০/৭। তৃতীয় সেশনের শুরুতেই দেশের চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে ডাবল সেঞ্চুরি তুলে নেন মুশফিক। এটা তার দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি। এর আগে মুশফিক বাংলাদেশের হয়ে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন। তারপর তামিম এবং সাকিব ডাবল সেঞ্চুরি করেন। ৪০৭ বলে ১৬টি চার আর একটি ছক্কায় ডাবল সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন মুশফিক। দেশের হয়ে টেস্টে ব্যক্তিগত ইনিংস সর্বোচ্চ ২১৯ রান করে অপরাজিত থাকেন মুশফিকুর রহিম। ৪২১ বলে ১৮টি চার আর একটি ছক্কায় মুশফিক তার ইনিংসটি সাজান। ১০২ বলে ৫টি চার আর একটি ছক্কায় ৬৮ রানে অপরাজিত থাকেন মেহেদি হাসান মিরাজ। এই দুজন ১৪৪ রানের জুটি গড়ে অবিচ্ছিন্ন থাকেন।

বিজ্ঞাপন

সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশকে ১৫১ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে জিম্বাবুয়ে। ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করে গাজী টিভি। এছাড়া, ম্যাচটি র‌্যাবিটহোলবিডি তে ক্লিক করেও সরাসরি উপভোগ করা যায়।

বাংলাদেশের হয়ে অভিষেক হয় ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ মিঠুন এবং পেসার খালেদ আহমেদের। বাংলাদেশের প্রথমশ্রেণির ক্রিকেটে সবচেয়ে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে অভিষিক্ত হন মিঠুন। ৮৮টি প্রথমশ্রেণির ম্যাচ খেলে সাদা পোশাকে অভিষেক হয় তার। একাদশে ফিরেছেন কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান। ফলে, সিলেট টেস্টের পর এবার মিরপুর টেস্টে দুই পেসারে ফিরেছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় টেস্টে জায়গা হয়নি স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপু, ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্ত এবং পেসার আবু জায়েদ রাহীর। আগের ম্যাচে ১১ উইকেট নেওয়া স্পিনার তাইজুলের সঙ্গী মেহেদি মিরাজ।

বাংলাদেশ একাদশ: মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), ইমরুল কায়েস, লিটন দাস, মুশফিকুর রহিম, মুমিনুল হক, মোহাম্মদ মিঠুন, খালেদ আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, মেহেদি হাসান মিরাজ, আরিফুল হক এবং তাইজুল ইসলাম।

জিম্বাবুয়ে একাদশ: হ্যামিলটন মাসাকাদজা (অধিনায়ক), ব্রায়ান চারি, ব্রেন্ডন টেইলর, শন উইলিয়ামস, সিকান্দার রাজা, পিটার মুর, রেগিস চাকাভা, ব্রেন্ডন মাভুতা, ডোনাল্ড তিরিপানো, কাইল জারভিস এবং তেন্দাই চাতারা।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এমআরপি

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন