বিজ্ঞাপন

প্রার্থীদের ‘সৌহার্দ্য’ দেখে আশাবাদী রিটার্নিং কর্মকর্তারা

November 28, 2018 | 9:52 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম ব্যুরো: বিএনপির প্রার্থীরা নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের পক্ষপাতমূলক আচরণ এবং তাদের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ আনলেও চট্টগ্রামে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়া নিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশ ছিল। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে সৌহাদ্যপূর্ণ পরিবেশ দেশে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন দুই রির্টানিং কর্মকর্তা। এই সম্পর্ক অব্যাহত থাকলে নির্বাচনও উৎসবমুখরভাবে শেষ করা যাবে বলে মত দিয়েছেন তারা।

বুধবার (২৯ নভেম্বর) দিনভর মনোনয়ন পত্র জমাদানের পর সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন দুই রিটার্নিং কর্মকর্তা চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. আব্দুল মান্নান ও জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন। বিভাগীয় কমিশনার চট্টগ্রাম নগরী ও আশপাশের এলাকার ৬টি এবং জেলা প্রশাসক জেলার ১০টি আসনের নির্বাচনী দায়িত্বে আছেন।

বিজ্ঞাপন

বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল মান্নান বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে মনোনয়ন পত্র জমাদান সম্পন্ন হয়েছে। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা হয়নি। প্রার্থীদের মধ্যে অত্যন্ত আন্তরিকতা দেখেছি। তারা পরস্পর করমর্দন করেছেন। আলিঙ্গন করেছেন। খুব সুন্দর পরিবেশ। আশা করছি, নির্বাচনও সুন্দরভাবে সম্পন্ন হবে।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন বলেন, প্রার্থীদের একজনের বিরুদ্ধে আরেকজনের অভিযোগ, পাল্টাপাল্টি এসব ছিল না। পরস্পরের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক দেখেছি। উৎসবমুখর পরিবেশ ছিল। এই পরিবেশ যেন আমরা নির্বাচন পর্যন্ত ধরে রাখতে পারি। এটা বজায় থাকলে নির্বাচনও উৎসবমুখর হবে। প্রার্থীদের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনেরও গুরুতর কোন অভিযোগ পাইনি।

এরআগে মনোনয়ন পত্র জমা দিতে এসে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না থাকার অভিযোগ করেন।

বিজ্ঞাপন

আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন এখনও সরকারের পদলেহী আচরণ করছে। নির্বাচন কমিশনকে আহ্বান জানাব, তারা যেন দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি করে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন দেয়। তিনি বলেন, আমরা আচরণবিধি মেনে চলছি। গায়েবি মামলা দিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের নির্যাতন করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে গায়েবি মামলায় নির্যাতন বন্ধ ঠেকিয়ে দেওয়া হবে।

আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘জনগণকে বাইরে রেখে ক্ষমতায় যাওয়ার প্রক্রিয়া চলছে, তা স্পষ্ট। তবে জনগণ নির্বাচিত সরকারের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। দেশের মানুষ গণতন্ত্রকামী, মৌলিক অধিকার ও আইনের শাসনের পক্ষে। আর গণতন্ত্রবিরোধীরা অন্য দিকে। মানুষ গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতার পক্ষেই অবস্থান নেবে।

বিজ্ঞাপন

লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না থাকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপির অনেক প্রার্থী এখনও জেলে। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বহু মনোনীত প্রার্থী বিশেষ করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রাখা হয়েছে। আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ আদালতে দোষী সাব্যস্ত না হলে যে কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। এখন সরকার আইনের ‘অপব্যাখ্যা’ দিয়ে খালেদা জিয়াকে নির্বাচনের বাইরে রাখার চেষ্টা করছে।

তবে নৌকা মার্কার প্রার্থী জাসদ একাংশের নেতা মঈনউদ্দিন খান বাদল বলেন, ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড অবশ্যই তৈরি হয়েছে। আমরা যারা এমপি আছি, কোন উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করছি না। সরকারি কোনো কর্মসূচিতে যাচ্ছি না। বিরোধী দলগুলো যেসব অভিযোগ করছে এর কোন ভিত্তি নেই।’

আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী এম এ লতিফ বলেন, সারাদেশে নির্বাচন নিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। আওয়ামী লীগ-বিএনপিসহ সব দলের প্রার্থীরা উৎসবমুখর পরিবেশে মনোনয়ন পত্র দাখিল করছে। অথচ বিএনপি শুধু অভিযোগ করছে, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই। এই ধরনের অভিযোগ করে তারা নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে।

মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার সময় চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর) আসনের প্রার্থী এম এ লতিফ ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী দুজন সামনাসামনি পড়ে যান। তখন উভয়ে কোলাকুলি করেন।

বিভাগীয় কমিশনার জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম মহানগরীসহ আশপাশের এলাকার ৬টি আসনে ৮৩ জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন।

জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, জেলার ১০টি আসনে মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন ৯৭ জন।

২৩৫টি মনোনয়ন পত্র সংগ্রহের বিপরীতে মোট ১৮০ জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন।

সারাবাংলা/আরডি/এমএইচ

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন