বিজ্ঞাপন

‘ইসিকে ছোট করে তার অধিনে নির্বাচন করছেন কেন’

December 5, 2018 | 9:54 pm

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: নির্বাচন কমিশন নিয়ে সমালোচনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা ও জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম বলেছেন, ‘আপনারা যদি এটিকে (ইসি) ছোটই করবেন, তাহলে এর অধীনে নির্বাচন করছেন কেন? আওয়ামী লীগ ও বাংলার জনগণ চায়, নির্বাচন কমিশন এমন একটি উচ্চতায় থাকুক, যেখানে কেউ থাকে স্পর্শ করতে না পারে। আমরা সেই সম্মান দিতে চাই।

বুধবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেলে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির সভা শেষে তিনি এই মন্তব্য করেন।

বিএনপি নেতাদের প্রতি ইঙ্গিত করে এইচ টি ইমাম বলেন,  ‘কে কি বললেন কিংবা অন্যে কী সমালোচনা করলেন এটি নিয়ে খুব বেশি মাথা ঘামাই না। কারণ পাগলে কী না বলে ছাগলে কী না খায়? এই সমস্ত বিষয়ের মধ্যে না গিয়ে দুটি বিষয়ে অবহিত করতে চাই।’

বিজ্ঞাপন

আপনারা কি জানেন, বিএনপি থেকে কতজন জঙ্গি এবং যারা জঙ্গিবাদের আশ্রয়দাতা, প্রশয়দাতা তাদের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে?

এ বিষয়ে ২০০৩ ও ২০০৪ সালে বাংলা ভাইয়ের নেতৃত্বে জেএমবি উত্থানের পিছনে মদদ ও ওপৃষ্ঠপোকষকারী হিসাবে নাদিম মোস্তফা, আবু হেনা ও রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর নাম উল্লেখ করেন তিনি। তিনি বলেন, এরা প্রত্যেকেই এবারের নির্বাচনে বিএনপির প্রর্থী। এখন বুঝতে পারেন কি ধরনের মানুষকে নিয়ে এসেছে।

বিএনপি থেকে ২৬ জন জামায়াতে ইসলামীর নেতাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। আমরা যাকে মনোনয়ন দিয়েছি বা দিচ্ছি বা যাদের বিবেচনা করছি তাদের অবশ্যই আওয়ামী লীগের একেবারে প্রাথমিক সদস্য হতেই হবে। দলের সদস্য না হলে কেউ মনোনয়ন চাইতে পারে না। কিন্তু বিএনপি জামায়াতের যাদেরকে মনোনয়ন দিলেন, এরা কি বিএনপির সদস্য? নাকি বিএনপি জামায়াতের লোকগুলোকে ডেকে এনে সদস্য করেছে? এদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে নানা রকম জঙ্গিবাদী মামলা আছে।

বিজ্ঞাপন

এই বিষয়গুলো রিটানিং কর্মকর্তাদের বিবেচনায় নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে এইট টি ইমাম বলেন, ‘তারা বিবেচনা করলে এক কথা আর যদি না করেন তাহলে এটি তো আমাদের ওপর দায়িত্ব বর্তায়। আমরা তো নির্বাচন কমিশনে অবশ্যই অভিযোগ করবো। যেই সমস্ত জঙ্গিবাদী মানুষকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সামনের দিকে আমাদের দিক থেকে আরও ব্যাপক প্রচার হবে। আমরা আপনাদের সমর্থন চাই। আর একটি বড় কথা বলবো, নির্বাচন কমিশন এবং নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার উন্নয়ন যা কিছু করা, গর্বের সাথে বলছি, করেছে একমাত্র আওয়ামী লীগ। আর অন্য কোনো দল নয়।’

‘আমরা চাই, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ চায়, বাংলার জনগণ চায়, নির্বাচন কমিশন এমন একটি উচ্চতায় থাকুক, যেখানে কেউ থাকে স্পর্শ করতে না পারে। আমরা তাকে সেই সম্মান দিতে চাই। আপনাদের গণমাধ্যমেরও দায়িত্ব আছে।’

‘আপনারা কথায় কথায় যদি নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করেন। বিএনপি কী বললো, কিংবা অমুক দল কী বললো, এগুলো নিয়ে। আজকে বিএনপি নেতাদের বলেছি, আপনারা যদি এটিকে (ইসি) ছোটই করবেন, তাহলে এর অধীনে নির্বাচন করছেন কেন? নির্বাচন তো নির্বাচন কমিশন পরিচালনা করছে। আর সংবিধান অনুযায়ী আমরা দলের থেকে সরকার এবং সরকারের যা দায়িত্ব পালন করছি।’

বিজ্ঞাপন

সরকার তো রুটিন কাজের বাইরে কিচ্ছু করছে না। সরকারের দায়িত্ব নিরাপত্তা বিধান করা। সেটি তো আমরা করবোই।

নির্বাচন কমিশনের পাশের ট্রেনিং একাডেমিতে প্রশিক্ষণ দেওয়ার দিকটি তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, ‘এবারকার নির্বাচনে ৭ লাখ সিভিলিয়ান অফিসার বিভিন্ন স্ট্রেজের তারা নির্বাচনে সহায়তা করবেন এবং আইন-শৃংখলা রক্ষার জন্য প্রায় ১০ লাখের মতো সেনাবাহিনীসহ সদস্য থাকবেন। এত বিশাল বাহিনী, এত বিশাল কর্মযজ্ঞ, পরিচালনা করছে যে নির্বাচন কমিশন সেই নির্বাচন কমিশনকে আমরা ছোট করবো? তার মর্যাদা তো আমরাই রক্ষা করবো। তার মর্যাদা আরও বৃদ্ধি করবো। বাংলাদেশ যেমন উচ্চতায় উঠছে, জননেত্রী শেখ হাসিনা যেমন বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিকভাবে একটা নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন, তেমনি আমরা চাই, আমাদের নির্বাচন কমিশনও ওই উচ্চতায় যাক। এটি আমাদের সকলের দায়িত্ব এবং কর্তব্য।’

গণমাধ্যমের কাছে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আপনারা নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করার জন্য যা কিছু করার আপনারাও সহায়তা করুন। এই সংগ্রামে আপনারা আমাদের সঙ্গে থাকুন, সহায়ক হোন।’

একই সভায় আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ও উপকমিটির সদস্য সচিব ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ প্রতিনিয়ত মিথ্যাচার করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে। নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়কে এখন কার্যালয় বলা যাবেনা, এটা মিথ্যাচারের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।’

বিএনপি মনোনয়ন বাণিজ্য করেছে দাবি করে হাছান মাহমুদ বলেন,  ‘তাদের দলের মনোনয়ন বাতিল হওয়া নিয়ে নানা প্রশ্ন গত কয়েকদিন ধরে তুলছেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো রাজনৈতিক দল ৩০০ আসনে ৮০০ মনোনয়ন দেয়নি। এই ৮০০ নমিনেশন দেওয়ার পেছনে মূল কারণ হচ্ছে মনোনয়ন বাণিজ্য। এই মনোনয়ন বাণিজ্য নিয়ে তাদের পার্টি অফিসে মারমারিও হয়েছে। এতগুলো মনোনয়ন দেওয়ার পর তাদের ৫৫৬ জনের মনোনয়ন টিকেছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে বাছাইয়ের পর এতগুলো মানুষের মনোনয়ন টিকেছে এরকম ঘটনা আগে ঘটে নাই। তারা যার কাছ থেকে চাঁদা পেয়েছে তাকেই মনোনয়ন দিয়েছে। এমনকি আমার নির্বাচনী এলাকায় ৫ জনকে মনোনয়ন দিয়েছে।’

আগামী ১১ ডিসেম্বর সকাল ১১টায় এফডিসির গেট থেকে তারকারা নৌকার নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণা শুরু করবেন বলেও জানান তিনি। ঢাকা, চট্টগ্রামসহ কয়েকটি বিভাগেরও তারকারা প্রচারণা চালাবেন বলেও জানান তিনি।

প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির সদস্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিনসহ তারকা অভিনেত্রীদের মধ্যে শমী কায়সার, রোকেয়া প্রাচী, অরুণা বিশ্বাস, শাকিল খান, রিয়াজ ও ফেরদৌস উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এনআর/এমআই

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন