বিজ্ঞাপন

৮৪ জন ফিরে পেলেন মনোনয়ন, বাতিল ৫৯ প্রার্থী, স্থগিত ৭

December 7, 2018 | 6:35 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল শুনানির দ্বিতীয় দিনে ১৫০ জনের আপিল আবেদন নিষ্পত্তি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

এর মধ্যে ৮৪ জন তাদের মনোনয়ন ফিরে পেয়েছেন। ওই ৮৪ জনের মধ্যে ছয় প্রার্থী ছিলেন যাদের বিরুদ্ধে অন্য প্রার্থীরা মনোনয়ন বাতিল চেয়ে ইসিতে আবেদন করেছিলেন। শুনানি শেষে ইসি ওই ছয়জনের প্রার্থিতা বহাল রাখে।

এছাড়া রিটার্নিং কর্মকর্তার যাচাই-বাছাইয়ে বাদ পড়া ৫৯ প্রার্থীদের প্রার্থিতা ইসিতেও বাতিল হয়েছে এবং ৭ প্রার্থীর প্রার্থিতার বিষয়টি স্থগিত রাখা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (৭ ডিসেম্বর) আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বে চার নির্বাচন কমিশনার আপিল শুনানি করেন।

সকাল ১০টায় শুরু হয় এই আপিল শুনানি। সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত একটানা শুনানি নেওয়া হয়। এরপর কিছুক্ষণ বিরতি শেষে ফের শুনানি চলে দুপুর ১টা পর্যন্ত। জুমার নামাজ ও মধ্যাহ্ন বিরতি শেষে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এই শুনানি চলে।

আপিলে বৈধ যারা

বিজ্ঞাপন

এদিন আপিলে যারা প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন, তারা হলেন— ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনে মো. জিয়া উদ্দিন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনে মো. মুসলিম উদ্দিন, চট্টগ্রাম-৮ আসনে হাসান মাহমুদ চৌধুরী বৈধ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে গিয়াস উদ্দিন, চট্টগ্রাম-৭ আসনে আবু আহমেদ হাসনাত, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনে আবদুল খালেক, কুমিল্লা-১ আসনে আলতাফ হোসাইন, চাঁদপুর-৫ আসনে খোরশেদ আলম খুশু, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে সাইফুল্লাহ (হুমায়ুন মিয়া), বরিশাল-২ আসনে এ কে ফাইয়াজুল হক, পটুয়াখালী-১ আসনে মো. আবদুর রশিদ, বরিশাল-১ আসনে বাদশ মিয়া, বরগুনা-১ আসনে মো. মতিয়ার রহমান তালুকদার, ভোলা-১ আসনে গোলাম নবী আলমগীর, বরিশাল-২ আসনে মাসুদ পারভেজ, ঝালকাঠি-১ আসনে বজলুল হক হারুন (প্রতিপক্ষ মনোনয়নপত্র বাতিল চেয়ে আবেদন করলে তা নমঞ্জুর করে ইসি), পটুয়াখালী-২ আসনে শহিদুল আলম তালুকদার, বরিশাল-৬ আসনে নাসরিন জাহান রত্না (প্রতিপক্ষের আবেদন নামঞ্জুর), বরিশাল-৪ আসনে পংকজ দেবনাথ (মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদের আবেদন নামঞ্জুর), পিরোজপুর-৩ আসনে মো. রুস্তম আলী ফারাজী, বরিশাল-২ আসনে সৈয়দ রুবিনা আক্তার, ভোলা-৪ আসনে নাজিম উদ্দিন আলম (প্রতিপক্ষের আপিল নামঞ্জুর), বরিশাল-৪ আসনে মাহবুবুল আলম।

আপিলে বৈধতা ফিরে পাওয়ার তালিকায় আরও আছেন— ঢাকা-১৬ আসনে আলহাজ্জ্ব এ কে এম মোয়াজ্জেম হোসেন, ঢাকা-৩ আসনে মো. সুলতান আহম্মদ খান, কিশোরগঞ্জ-২ আসনে মো. সালাউদ্দিন (রুবেল), কিশোরগঞ্জ-৬ আসনে মোহাম্মদ মুছা খান, টাঙ্গাইল-৮ আসনে মো. আবদুল লতিফ মিয়া, নরসিংদী-২ আসনে জাইদুল কবির, কিশোরগঞ্জ-১ আসনে খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল খান, গাজীপুর-৩ আসনে মো. জহিরুল হক মন্ডল বাচ্চু, মানিকগঞ্জ-২ আসনে মঈনুল ইসলাম খান, শরিয়তপুর-৩ আসনে সুশান্ত ভাওয়াল, কিশোরগঞ্জ-২ আসনে নুরুল ইসলাম, মুন্সীগঞ্জ-১ আসনে মো. আবদুল্লাহ, কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে ডা. এনামুল হক ইদ্রিস, নারায়গঞ্জ-৪ আসনে মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, টাঙ্গাইল-৬ আসনে আবুল কাশেম, টাঙ্গাইল-৭ আসনে সৈয়দ মজিবর রহমান, শরীয়তপুর-২ আসনে মো. বাদল গাজী, মাদারীপুর-১ আসনে মো. শাহনেওয়াজ, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন খোকা, টাঙ্গাইল-৬ আসনে ব্যারিস্টার এম আশফাকুল ইসলাম, টাঙ্গাইল-৬ আসনে মামুনুর রহমান, টাঙ্গাইল-৩ আসনে এস এম চান মিয়া, মাদারীপুর-২ আসনে আলামিন মোল্লা, ঢাকা-৮ আসনে এস এম সরোয়ার, মাদারীপুর-১ আসনে নাদিরা আক্তার ও ঢাকা-১ আসনে ফাহিমা হোসাইন জুবলি।

এর আগে, শুক্রবার সকালে পটুয়াখালী-২ আসনে শফিকুল ইসলামের আপিল শুনানি নিয়ে তার মনোনয়নপত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল রাখলেও পরে তার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছে ইসি।

এছাড়া মানিকগঞ্জ-২ আসনে এস এম আব্দুল মান্নান, ঢাকা-২ আসনে সুকান্ত শফি চৌধুরী, ফরিদপুর-৪ আসনে আতাউর রহমান, শরীয়তপুর-১ আসনে সরদার এ কে এম নাসির উদ্দিন, রংপুর-১ আলহাজ্জ্ব সি এম সাদিক, কুড়িগ্রাম-৪ আসনে মো. জাকির হোসেন, রংপুর-২ আসনে শ্রী কুমারেশ চন্দ্র রায়. ময়মনসিংহ-৮ আসনে মাহমুদ হাসান, জামালপুর-১ রশিদুজ্জকমান মিল্লাত, ময়মনসিংহ-১ আসনে মো. হাবিবুল্লাহ, ময়মনসিংহ-১১ আসনে আমানুল্লাহ সরকার, নেত্রকোণা-১ আসনে এম এ করিম আব্বাসী, ময়মনসিংহ-৫ আসনে জহিরুল ইসলাম, নেত্রকোণা-৫ আসনে আবু তাহের তালুকদার মনোনয়ন ফিরে পেয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

আপিলেও মনোনয়নপত্র বাতিল যাদের

এদিকে, আপিলের পরও যারা প্রার্থিতা ফিরে পাননি, তারা হলেন— চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনে সামির কাদের চৌধুরী (গিয়াস কাদের চৌধুরীর ছেলে), ফেনী-৩ আসনে আবদুল লতিফ জনি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ মো. শাহজাহান, কুমিল্লা-২ আসনে আব্দুল মজিদ, বরিশাল-৬ আসনে ওসমান হোসেইন, পিরোজপুর-৩ আসনে ডা. সুধীর রঞ্জন বিশ্বাস, ঝালকাঠি-১ আসনে মো. মনিরুজ্জামান, পটুয়াখালী-১ আসনে রুহুল আমিন হাওলাদার, পটুয়াখালী-২ আসনে মিজানুর রহমান খান, ভোলা-৪ আসনে এম এ মান্নান হাওলাদার, ঝালকাঠি-১ আসনে মো. শাহজালাল শামীম, পিরোজপুর-১ আসনে মনিমোহন বিশ্বাস, ঝালকাঠি-১ আসনে ইয়াসমিন আক্তার পপি ও ভোলা-২ আসনে হুমায়ুন কবির।

এই তালিকায় আরও আছেন, নরসিংদী-২ আসনে আলতামাস কবীর, কিশোরগঞ্জ-৪ আসনে সুরঞ্জন ঘোষ, কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে মো. আম্মান খান, শরীয়তপুর-১ আসনে আলমগীর হোসেন, ঢাকা-৮ আসনে আরিফুর রহমান, মানিকগঞ্জ-১ আসনে আতোয়ার হোসেন, কিশোরগঞ্জ-২ আসনে মো. আনিসুজ্জামান, ঢাকা-১৭ আসনে মো. আরিফুজ্জামান খোকন, ঢাকা-৮ আসনে মেজর (অব.) মামুনুর রশীদ, গোপালগঞ্জ-১ আসনে শামসুল আলম খান চৌধুরী, কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে মো. মনিরুজ্জামান নয়ন ও নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে রেহান আফজাল।

এছাড়া ঢাকা ১৫ আসনে মো. ছলিম উদ্দিন, রংপুর-২ হাবিবুল হক সরকার,  ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে গোপাল চন্দ্র রায়, গাইবান্ধা-৩ আসনে তৌফিকুল ফামিল মণ্ডল, কুড়িগ্রাম-৪ ইমরান এইচ সরকার বাতিল, কুড়িগ্রাম চার এস এম জাহাঙ্গীর বাতিল, নীলফামারী তিন মো. আনছার আলী বাতিল, ময়মনসিংহ চার আবু জাফর জাহিদ হোসেনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।

যাদের মনোনয়ন স্থগিত

ঢাকা-৯ আসনে আফরোজা আব্বাস,  ঢাকা-২ আমান উল্লাহ আমান, ঢাকা-২০ সুলতানা আহমেদ, গাইবান্ধা-১ আসনের আফরোজা বারি সাহাবাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ মেহেদী হাসান, সুনামগঞ্জ-৩ সৈয়দ শাহ মোবাশ্বির আলী, রংপুর-১ আসনে সি এম সাদিক।

গত ৮ নভেম্বর তফসিল ঘোষণা করে ইসি, পরে ১২ নভেম্বর পুনঃতফসিল ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী গত ২৮ নভেম্বর ছিল মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন। গত ২ ডিসেম্বর ছিল মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাইয়ের শেষ দিন। এদিন সারা দেশে দাখিল করা ৩ হাজার ৬৫টি মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের পর ২ হাজার ২৭৯টি মনোনয়ন পত্র বৈধ এবং ৭৮৬টি মনোনয়ন পত্র বাতিল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। বাতিল হওয়া প্রার্থীরা তাদের প্রার্থিতা ফিরে পেতে ৩ ডিসেম্বর থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫৪৩ জন আপিল করেন। ৬ ডিসেম্বর শুরু হয়ে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রার্থীদের আপিল গ্রহণের ওপর শুনানি চলবে। পরদিন ৯ ডিসেম্বর মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন এবং ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে। আগামী ৩০ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণ।

সারাবাংলা/জিএস/একে

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন