বিজ্ঞাপন

‘ব্যালটের চেয়ে ইভিএম সহজ, চুরির সুযোগ নেই’

December 18, 2018 | 2:04 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি-বাকলিয়া) আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে পুরোদমে শুরু হয়েছে পরীক্ষামূলক ভোটগ্রহণ। ভোটকেন্দ্রে রাখা ইভিএম মেশিনে ভোট দিচ্ছেন সাধারণ ভোটাররা। ইভিএম নিয়ে কৌতূহল মেটানোর পাশাপাশি সম্যক ধারণাও নিয়ে যাচ্ছেন তারা।

মঙ্গলবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর রেলওয়ে হাসপাতাল কলোনি হাই স্কুল কেন্দ্রে ভোট দিতে এসেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা নাজিম আহমেদ। ইভিএম তত্তাবধানে থাকা কর্মকর্তারা তাকে প্রথমে ভোট দেওয়ার নিয়ম বুঝিয়ে দেন।

ভোট দেওয়ার পর কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে নাজিম আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘ইভিএম নিয়ে অনেক কথা শুনেছিলাম। আসলে এখানে ভোট দেওয়া তো খুব সহজ। আমরা ব্যালটে ভোট দিয়েছি। ব্যালটের চেয়ে অনেক সহজ। মেশিনে আপনি যে মার্কা সিলেক্ট করবেন, সাথে সাথেই সেটা স্ক্রিনে ওকে দেখাবে। চুরির কোনো সুযোগ নেই।’

বিজ্ঞাপন

নগরীর এনায়েত বাজার মহিলা কলেজ কেন্দ্রে কৌতুহলী শিক্ষার্থীরা ভিড় জমিয়েছিলেন ইভিএম দেখতে। শিক্ষক-শিক্ষিকারাও এসে ইভিএম এর মাধ্যমে ভোট দেওয়ার নিয়ম দেখে যান।

যুথী সেন নামে এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রী সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি এবার প্রথম ভোটার। জীবনের প্রথম ভোট ইভিএম-এর মাধ্যমে দেব। কীভাবে ভোট দিতে হবে সব শিখে নিয়েছি। বাসায় গিয়ে বাবা-মা এবং প্রতিবেশীদেরও ইভিএম সম্পর্কে বোঝাব।’

বিজ্ঞাপন

একই কেন্দ্রে ভোট দিয়ে বেরিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা বিঞ্চু ঘোষ সারাবাংলাকে বলেন, ‘আগে ব্যালটে ভোট দিতাম। এটা (ইভিএম) মনে হচ্ছে ব্যালটের চেয়ে ১০০ গুণ ভাল। নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ আমাদের আসনে ইভিএম-এর মাধ্যমে ভোটের আয়োজন করার জন্য। ইভিএম নিয়ে অনেক অপপ্রচার হয়েছে। বাস্তবে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট চুরি বা দুই নম্বরির কোনো সুযোগ নেই। আরেকজনেরও ভোট দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কারণ আঙ্গুলের ছাপ কিংবা এনআইডি দিলে ছবিও চলে আসবে।’

সেনাবাহিনীসহ তিন বাহিনীর তত্তাবধানে চট্টগ্রাম-৯ আসনের ভোট কেন্দ্রগুলোতে ইভিএম প্রদর্শনী ও পরীক্ষামূলক ভোটগ্রহণ চলছে।

দায়িত্বরত সেনা কর্মকর্তা মেজর ফাহাদ আনোয়ার সারাবাংলাকে বলেন, সকাল ১০টা থেকে ইভিএম প্রদর্শনী ও মক ভোটিং শুরু করেছি। অনেকেই ইভিএম দেখতে এবং ভোট দিতে আসছেন। দিন শেষে মোট কতজন ভোট দিয়েছেন সেটা আমরা নির্বাচন অফিসকে জানিয়ে দেব।

চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানা নির্বাচন কর্মকর্তা কামরুল আলম সারাবাংলাকে বলেন, চট্টগ্রাম-৯ আসনের ১৪৪টি ভোটকেন্দ্রের জন্য ২৮৮টি ইভিএম মেশিন আমরা তিন বাহিনীর কাছে দিয়েছিলাম। তবে ভর্তি পরীক্ষা থাকায় ৫টি স্কুলে আজ (মঙ্গলবার) ইভিএম’র মাধ্যমে পরীক্ষামূলক ভোট করা যায়নি। সেগুলোতে পরে শুরু হবে।

বিজ্ঞাপন

প্রতিটি কেন্দ্রে ২টি ইভিএমের মাধ্যমে পরীক্ষামূলক ভোটগ্রহণ চলছে বলে জানিয়েছেন এই নির্বাচন কর্মকর্তা।

কামরুল জানান, ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটারের তথ্য যাচাইয়ে আঙ্গুলের ছাপ, স্মার্ট কার্ড, পুরনো এনআইডি কার্ড অথবা পুরনো ভোটার আইডি কার্ড ব্যবহার করা হবে।

স্মার্ট কার্ড, পুরনো এনআইডি কার্ড অথবা পুরনো ভোটার আইডি কার্ড ব্যবহার করা হবে। স্মার্ট কার্ড পাঞ্চ, আঙ্গুলের ছাপ অথবা আইডি নম্বর যেকোনো একটি কম্পিউটারে দেবার পর ভোটারের প্রোফাইল খুলবে।

তারপর বুথে রাখা একটি ইভিএম মেশিনে তিনি ভোট দিতে যাবেন। ওই ইভিএমে প্রার্থীদের মার্কাসহ নাম থাকবে। সেখানে ভোটার প্রার্থীর মার্কা নিশ্চিত করে পাশের বোতাম টিপে ভোট দেবেন।

বৃদ্ধ বা দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য সেই ভোটারের অনুমতিক্রমে সহযোগী হিসেবে একজন ভোটকেন্দ্রে তার ভোট দিতে সহায়তা করতে পারবেন বলেও জানান তিনি।

চট্টগ্রাম-৯ আসনে ওয়ার্ড আছে ১৪টি। ভোটকেন্দ্র আছে ১৪৪টি। ভোটকক্ষ আছে ৭৪৩টি ভোট। মোট ভোটার তিন লাখ ৯১ হাজার ৬১২ জন। এর মধ্যে দুই লাখ চার হাজার ৪০৩ জন পুরুষ এবং এক লাখ ৮৭ হাজার ২০৯ জন নারী ভোটার।

৩০ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে শুধু এই আসনেই ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এর আগে পরীক্ষামূলক ভোটগ্রহণ ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে।

সারাবাংলা/আরডি/এমআই

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন