December 23, 2018 | 5:19 am
।। সারাবাংলা ডেস্ক ।।
দেশে ক্রমেই বাড়ছে প্লাস্টিক পণ্যের বহুমুখী ব্যবহার। অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে বর্তমানে এই খাতের রফতানিও দ্রুত সম্প্রসারণ হচ্ছে। চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) আন্তর্জাতিক বাজারে প্লাস্টিক পণ্য বিক্রি থেকে রফতানি আয় হয়েছে ৪ কোটি ৮৭ লাখ মার্কিন ডলার, যা গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৩০ শতাংশ বেশি।
চলতি অর্থবছরে প্লাস্টিক পণ্য থেকে ১০ কোটি ডলারের রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও বাংলাদেশ প্লাস্টিক পণ্য প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিপিজিএমইএ) তথ্য মতে, প্লাস্টিক পণ্যের এক ট্রিলিয়ন ডলারের আন্তর্জাতিক বা বৈশ্বিক বাজার রয়েছে। এই বিশাল বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের চাহিদা রয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে রফতানি আয় দ্রুত বাড়ছে। গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে প্লাস্টিক পণ্য থেকে ৯ কোটি ৮৪ লাখ ডলারের রফতানি আয় হয়েছে। ওই বছরের প্রথম পাঁচ মাসে এই খাতের রফতানি আয় ছিল ৩ কোটি ৭৪ লাখ ডলার।
প্লাস্টিক পণ্যের পাশাপাশি চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে এক কোটি ২১ লাখ ডলারের প্লাস্টিক বর্জ্য রফতানি হয়েছে।
বিপিজিএমইএ সভাপতি ও বেঙ্গল গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজের ভাইস চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন বলেন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ফ্রান্স, পোল্যান্ড, স্পেন, কানাডাসহ বিশ্বের ২৩টি দেশে সরাসরি যাচ্ছে বাংলাদেশের প্লাস্টিক পণ্য। গৃহসজ্জা থেকে অটোমোবাইল, চিকিৎসার সরঞ্জাম কিংবা রফতানিমুখী শিল্পের আনুষঙ্গিক সব পণ্য প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি হচ্ছে। নজর কাড়ছে প্রযুক্তির সমন্বয়ে তৈরি প্লাস্টিকের বাহারি খেলনাও। প্রতিনিয়ত বৈশ্বিক বাজারে আমাদের পণ্যের রফতানি বাড়ছে, কিন্তু পুরোপুরি বাজার সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, ‘এক ট্রিলিয়ন ডলারের বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশি প্লাস্টিক পণ্যের অংশগ্রহণ বাড়াতে এই খাতে বিপুল বিনিয়োগ প্রয়োজন।’
বিপিজিএমইএ’র তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে ছোট-বড় মিলিয়ে পাঁচ হাজার কারখানায় প্রায় ১৫ ক্যাটাগরিতে পণ্য উৎপাদিত হয়। এর মধ্যে পোশাক খাতের জন্য পলিব্যাগ, হ্যাঙ্গার, প্লাস্টিক ক্লিপ, বোতাম; খেলনা সামগ্রীর মধ্যে পুতুল, বল; গৃহে ব্যবহারের জন্য চেয়ার, টেবিল, ডাইনিং টেবিল, বিভিন্ন ধরনের রেক, ঝুড়ি, বাথটাব, জগ, মগ, ঝুড়ি; অফিসে ব্যবহারের জন্য পেপারওয়েট, স্কেল, টেবিল, বলপেন, ফাইল কভার অন্যতম। কৃষি খাতের জন্য পাইপ, সাইকেলের যন্ত্রাংশের মধ্যে বাম্পার, হাতলের কভার, ব্যাকলাইট, স্পোক লাইট, মাছ ও ডিম রাখার ঝুড়ি, ভিডিও ও অডিও ক্যাসেট, কম্পিউটারের উপকরণসহ বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক সামগ্রী তৈরি হচ্ছে।
জসিম উদ্দিন জানান, বর্তমানে ২০টি বড় প্রতিষ্ঠান বিদেশে প্লাস্টিক পণ্য রফতানি করছে। আর দেশে বছরে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদন ও বিপণন হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘রফতানিতে নগদ প্রণোদনার শর্ত শিথিল এবং নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যাংক ঋণপ্রাপ্তি সহজ হলে এই খাতে বিনিয়োগ বাড়বে। আর পোশাক শিল্পের মতো আনুকূল্য পেলে প্লাস্টিক পণ্য দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রফতানি খাতে পরিণত হবে।’
বাসস।
সারাবাংলা/টিআর/এসএন