বিজ্ঞাপন

আজ রংপুর যাচ্ছেন শেখ হাসিনা

December 23, 2018 | 5:44 am

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে দলের নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ নিতে রোববার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে রংপুর সফরে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে রংপুরসহ আশপাশের জেলায় নির্বাচনী উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

রোববার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার পর হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে আকাশ পথে রওনা দিয়ে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে অবতরণ করে সড়কপথে দুই নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর নিজ শ্বশুরালয়ে কিছুটা সময় কাটাবেন বলে জানা গেছে। সেখানে তিনি দুটি নির্বাচনী জনসভায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নৌকা মার্কায় ভোট চেয়ে সরকারের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে আহ্বান জানাবেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের রংপুরের নির্বাচনি প্রচারণা কার্যক্রমকে সার্বিকভাবে সফল করার জন্য দলীয় নেতাকর্মীসহ সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সকাল ১০টায় রংপুরের তারাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাচনি প্রচার কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করবেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে পীরগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আওয়ামী লীগের নির্বাচনি জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

বিজ্ঞাপন

জনসভায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় নেতারা, রংপুর জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা এবং রংপুরের বিভিন্ন নির্বাচনি এলাকার আওয়ামী লীগ ও মহাজোট মনোনীত প্রার্থীরা উপস্থিত থাকবেন।

এছাড়া পরদিন সোমবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় রাজধানী ঢাকার কামরাঙ্গীরচর মাঠে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নির্বাচনি প্রচার কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তার আগে শনিবার (২২ ডিসেম্বর) ‘দুটি পাতা একটি কুঁড়ি’র দেশ এবং ৩৬০ আউলিয়ার পূণ্যভূমি খ্যাত সিলেট হযরত শাহজালাল (রহ.) ও হযরত শাহপরান (রহ.) মাজার ও হযরত গাজী বুরহান উদ্দিনের মাজারও জিয়ারত করেন তিনি। পরে সার্কিট হাউসে বিশ্রাম শেষে এক নির্বাচনী জনসভায় অংশ নেন এবং নৌকা ও মহাজোটের প্রার্থীকে বিজয়ী করার আহ্বান জানান। এর আগে একাদশ জাতীয় নির্বাচনে হ্যাট্রিক জয়ের লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রাক নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণা শুরু হয়েছিল সিলেট থেকে। সিলেটের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দেন শেখ হাসিনা। চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি সিলেটবাসীর জন্য বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে নৌকায় ভোট চেয়ে প্রাক নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।

এদিকে, জাতীয় নির্বাচনে সিলেট থেকে নির্বাচনি প্রচারণা শুরুর রেওয়াজ থাকলেও এবার সে পথে না হেঁটে স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানোর মাধ্যমে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণায় নামে দলটি। গত ১২ ডিসেম্বর টুঙ্গিপাড়ায় জাতির জনকের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ভোটের মাঠে নির্বাচনি প্রচারযুদ্ধে নামেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেদিন যাত্রাপথে তিনি রাজবাড়ী জেলার ভাঙ্গার মোড়, ফরিদপুরের মোড়, রাজবাড়ী রাস্তার মোড়, পাটুরিয়ার আরোয়া ইউনিয়ন, মানিকগঞ্জ পৌরসভা, রাবেয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল প্রাঙ্গণ (ধামরাই) ও সাভারের জালেশ্বর মৌজার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পথসভায় বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে গাড়ি থেকে নেমে অপেক্ষারত নেতকার্মীদের উদ্দেশ্যে হাত নাড়েন।

বিজ্ঞাপন

এ ধারাবাহিকতায় গত শুক্রবার (২১ ডিসেম্বর) গুলশান ইয়থ ক্লাব মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক জনসভায় ভাষণ দেন। শনিবার দুপুর আড়াইটায় সিলেট সরকারি আলীয়া মাদ্রাসা মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক নির্বাচনি জনসভায় যোগ দেন শেখ হাসিনা।

রোববার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে তারাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় অংশ নেবেন। এরপর দুপুর আড়াইটায় পীরগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক জনসভায় যোগ দেবেন। এছাড়াও, সুধাসদন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিং’র মাধ্যমে কয়েকটি জেলায় সংযুক্ত হয়ে সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে দেশবাসীর কাছে নৌকায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, মযার্দাপূর্ণ সিলেট-১ আসনটিতে বিজয়ী হওয়ার ক্ষেত্রে একটি মিথ আছে। সরকার গঠনের ক্ষেত্রে এ আসনে জয় লাভের বিকল্প নেই এমন একটি মিথ দীর্ঘদিন থেকে চালু আছে। তাই এ আসন থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করে আওয়ামী লীগ। বিশেষ করে সিলেটের প্রতি আওয়ামী লীগ সভাপতির এক ধরনের দুর্বলতা সব সময়ই রয়েছে। তিনি ১৯৮১ সালের মে মাসে দেশে ফিরে ঢাকার বাইরে প্রথমেই সিলেট সফর করেছিলেন এবং জনসভায় বক্তব্য দিয়েছিলেন। তাই, সিলেট-১ আসন একটি মর্যাদাপূর্ণ আসন বলে খ্যাত। স্বাধীনতার পর থেকেই এ আসনে যে দলের প্রার্থী জয় পেয়েছেন, সে দলই সরকার গঠন করেছে এমনটিই মিথ প্রচলিত রয়েছে। বিশেষ করে ১৯৯১ সালে অনুষ্ঠিত পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট বিভাগের ১৯টি আসনের মধ্যে শুধু সিলেট-১ আসনে বিএনপির খন্দকার আবদুল মালিক জয়ী হয়েছিলেন। ওই নির্বাচনে বাকি ১৮টি আসনে দলীয় প্রার্থীরা পরাজিত হলেও সরকার গঠন করেছিল বিএনপি।

তেমনিভাবে সপ্তম, অষ্টম ও নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও দুইবার আওয়ামী লীগ ও একবার বিএনপির প্রার্থী এ আসনে জয়ী হলে তাদের দল সরকার গঠন করে। এর মধ্যে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী (স্পিকার), ২০০১ সালে বিএনপির এম সাইফুর রহমান (অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী) এবং ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের আবুল মাল আবদুল মুহিত (অর্থমন্ত্রী) জয়ী হন। এ কারণেই আসনটি প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। এরবার সিলেট-১ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের ভাই এ কে আবদুল মোমেন। সে লক্ষে তিনি শনিবারও সিলেট বিভাগের ১৯ টি আসনে নৌকা ও মহাজোটের মনোনীত প্রার্থীকে সরকারের উন্নয়নের ধাররাবাহিকতা বজায় রাখতে ভোট প্রার্থনা করেন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এনআর/টিআর/ইএইচটি/এসএন

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন