বিজ্ঞাপন

কক্সবাজার-২: নৌকায় ঐক্য, বিভক্ত বিএনপি-জামায়াত

December 25, 2018 | 10:51 am

।। ওমর ফারুক হিরু, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

কক্সবাজার: কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনে নৌকার প্রার্থীর বিজয়ে কিছুটা অন্তরায় ছিল বিদ্রোহী প্রার্থী গণফ্রন্ট থেকে মনোনয়নপ্রাপ্ত ড. আনসারুল করিম। কিন্তু শেষ মূহুর্তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তিনি সমর্থন দিয়েছেন দলীয় প্রার্থী আশেক উল্লাহ রফিককে। মান-অভিমান সব ভুলে সকলে এখন নৌকাকে বিজয়ী করতে ঐক্যবদ্ধ।

অন্যদিকে নির্বাচনি মাঠের জরিপ বলছে, ওই আসনে বিভক্ত বিএনপি-জামায়াত। বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের বিভক্তি তো আছেই, এছাড়া খোদ বিএনপিই দু’ভাগে বিভক্ত। একটি পক্ষ তথাকথিত ২৩ দল সমর্থিত আপেল প্রতীকের প্রার্থী জামায়াত নেতা হামিদুর রহমান আযাদের পক্ষে। আরেকটি পক্ষ জেলা বিএনপির চক্ষুশূল ধানের শীষের প্রার্থী আলমগীর মুহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ ফরিদের পক্ষে মাঠে কাজ করছেন। বিএনপি-জামায়াতের ভোট তিনভাগে বিভক্ত হওয়ায় ধানের শীষ অথবা আপেল প্রতীকের প্রার্থীর জয়ের আশা প্রায় ‘শূন্য’ বলে মনে করছেন স্থানীয় রাজনৈতিক বোদ্ধারা।

কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনে বিএনপি তথা ঐক্যফ্রন্ট থেকে প্রাথমিক মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল আলমগীর মুহাম্মদ মাহফুজউল্লাহ ফরিদকে (বিএনপি থেকে এক সময় বহিস্কৃত)। কিন্তু দলটি ধানের শীষের চূড়ান্ত মনোনয়ন দেয় জামায়াত নেতা হামিদুর রহমান আযাদকে। এর ফলে আইনি জটিলতায় ধানের শীষ প্রতীক হামিদুর রহমান আযাদের হাতছাড়া হয়ে যায়। বরাদ্দ পান আপেল প্রতীক। তবুও পুরো মাঠ ছিল একক দখলে। জোটের প্রার্থী হিসেবে বিএনপির সব স্তরের নেতাকর্মীরাও ছিল তাঁর পক্ষে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত ড. আনসারুল করিম গণফ্রন্টে যোগ দিয়ে মাছ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনের মাঠে নামায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আশেক উল্লাহ রফিকের জয়ে ‘শঙ্কা’ তৈরী হয়। তবে শেষ পর্যন্ত সেই শঙ্কা উড়ে যায়।

উচ্চ আদালতে আইনি লড়াই করে শেষ মুহূর্তে এসে ধানের শীষ প্রতীক ফেরত পান আলমগীর ফরিদ। ফলে পাল্টে যায় ভোটের হিসাব। জামায়াতের প্রার্থী হামিদুর রহমান আযাদের ‘একক সুবিধায়’ আঘাত হানেন আলমগীর ফরিদ। একই সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নৌকার প্রার্থী আশেক উল্লাহ রফিককে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান ড. আনসারুল করিম। এখন তিনিও রীতিমত কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন আশেক উল্লাহ রফিককে বিজয়ী করতে। এর ফলে নির্বাচনি মাঠ আশেক উল্লাহ রফিকের পক্ষে চলে আসে। জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী মহাজোট।

আলমগীর ফরিদ আইনী লড়াইয়ে ধানের শীষ প্রতীক ফেরত পাওয়ার পর থেকে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে রীতিমত গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। গত ২২ ডিসেম্বর জেলা বিএনপি মতবিনিময় সভা ডেকে ২৩ দলের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে আপেল প্রতীকের প্রার্থী হামিদুর রহমান আযাদকে বিজয়ী করতে তৃণমূল নেতাকর্মীদের কাজ করার আহ্বান জানান।

বিজ্ঞাপন

মহেশখালীর বেশ কয়েকজন বিএনপির নেতার সাথে কথা বলে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত বিএনপির নেতাকর্মী বা সমর্থকেরা বুঝে উঠতে পারছে না বিএনপির প্রার্থী কে। কার পক্ষে তারা অবস্থান নেবে। দ্বিধাদ্বন্দ্বে একবার বিরক্ত তারা। ফলে মাঝখানে একক সুবিধা ভোগ করবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আশেক উল্লাহ রফিক।

মহেশখালী-কুতুবদিয়ার রাজনৈতিক সচেতন কয়েকজন ব্যক্তি জানান, বিএনপি-জামায়াতের বিভক্তির কারণে এ আসনে নৌকা প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত। কারণ আওয়ামী লীগে বর্তমানে কোনো গ্রুপিং নেই। তারা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে নিজেদের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে কাজ করছে। তাছাড়া বিএনপির মনোনয়ন নাটকের কারণে তাদের ভোটের বিশাল একটি অংশ হাতছাড়া হয়ে যাবে।

জেলা বিএনপির অবস্থানের বিষয়ে জানতে চাইলে ধানের শীষের প্রতীকের মনোনীত প্রার্থী আলমগীর মুহাম্মদ মাহফুজউল্লাহ ফরিদ জানান, ‘মহেশখালী-কুতুবদিয়ায় ভোটের মাঠে জেলা বিএনপির কোনো কাজ নেই। তাদের পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান ভোটে কোন প্রভাব ফেলবে না। তাছাড়া মাঠের নেতাকর্মীরা আমার পক্ষে আছে। কাজেই জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।’

নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আশেক উল্লাহ রফিক বলেন, ‘ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগকে কেউ হারাতে পারে না। মহেশখালী-কুতুবদিয়ার নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ। ইনশাআল্লাহ এ আসনে নৌকার বিজয় নিশ্চিত।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এসএমএন

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন