রূপগঞ্জ বদলে দেওয়ার নায়ক ‘গাজী সাহেব’ ছাড়া পথ নাই

।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: ‘বর্তমান সংসদ সদস্য গাজী সাহেব গত ১০ বছর ধরে এমপি আছেন। তার আমলের আগে যে রূপগঞ্জ ছিলো সেই রূপগঞ্জের সঙ্গে আজকের রূপগঞ্জের কোনও মিল নেই; রূপগঞ্জকে আমূল বদলে দেওয়া মানুষটাকে ভোট দেব নাতো কাকে দেব? চোখের সামনে তো আর কাউকে দেখি না-তাই ভোটটা এবারও গাজী সাহেবকেই’, এসব কথা নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের রূপগঞ্জের বাসিন্দাদের।

স্থানীয়রা বলছেন, ‘দেশে নির্বাচনই হয় দেশের জনপ্রতিনিধিদের নির্বাচিত করার জন্য, যারা দেশের ও দেশের মানুষের মঙ্গলের জন্য কাজ করবে। তাই দেশের জনগণ তাকেই নির্বাচিত করবে যিনি মানুষের উন্নয়নের জন্য কাজ করেছে বিগত বছরগুলোতে। আমাদের এলাকাতে একচেটিয়াভাবে উন্নয়ন করেছেন গোলাম দস্তগীর গাজী, তাই তাকে ভোট দেওয়ার কোনও বিকল্প নেই আমাদের কাছে।’

আর নৌকার প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজী সারাবাংলাকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে। আমি পরপর দুই মেয়াদে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। আমার সর্বোচ্চটুকু দিয়ে আমি জনগণের সেবা করার চেষ্টা করেছি। ২০০৮ সালে যখন আমি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হই, তখন রূপগঞ্জে রাস্তাঘাট ছিল না, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ ছিল না, বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধতায় ঘর থেকে বের হওয়া যেত না। সেই রূপগঞ্জ এখন বদলে গেছে। রূপগঞ্জে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে।’

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০০৮ সালে প্রথম গোলাম দস্তগীর গাজী নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন, এরপর দ্বিতীয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ২০১৪ সালে।

জানা যায়, নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই তিনি এলাকার উন্নয়নে সর্বোচ্চ ভূমিকা রেখেছেন। স্বাধীনতার পরবর্তী সময় থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত উপজেলার শিক্ষাক্ষেত্রে লাগেনি উন্নয়নের ছোঁয়া। ২০০৮ সালেও অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থা ছিলো নাজুক। ফলে শিক্ষাক্ষেত্রে পিছিয়ে ছিলো রূপগঞ্জ উপজেলা। এখন রূপগঞ্জে বদলে গেছে শিক্ষার চিত্র। এছাড়া রূপগঞ্জে শতভাগ শিক্ষার্থী এখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানমুখী। ফলে রূপগঞ্জে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের সংখ্যা এখন শূণ্যের কোঠায়। রূপগঞ্জে শিক্ষাক্ষেত্রে এতো কিছুর পরিবর্তন হয়েছে গোলাম দস্তগীরের হাত ধরে।

তাঁর একান্ত প্রচেষ্টায় রূপগঞ্জে ৪১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন করে ভবন নির্মাণের কাজ চলছে, বেসরকারি ৩২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারিকরণ হয়েছে। এছাড়া তার ব্যক্তিগত উদ্যোগে উপজেলায় ৮টি কলেজ ও ৫টি মাধ্যমিক স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আর সরকারিভাবে ২০০৯ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত (চলতি) রূপগঞ্জ উপজেলায় শিক্ষার উন্নয়নে ব্যয় করা হয়েছে ২৫ কোটি ৮ লাখ টাকা। যার পুরোটা কৃতিত্ব গোলাম দস্তগীর গাজীর।

এদিকে, রূপগঞ্জ উপজেলা সূত্রে জানা গেছে, গত ১০ বছরে গোলাম দস্তগীর গাজী রূপগঞ্জের উন্নয়নে প্রায় ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকার উন্নয়নমূলক কাজ করা হয়েছে। এরমধ্যে অন্যতম তারাব পৌরসভা। ২০০২ সালের ৭ অক্টোবর প্রতিষ্ঠিত হয় তারাব পৌরসভা। তারাব পৌরসভা এখন আধুনিক ও উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ফাতেমা বেগম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আগে বাড়ি থেইক্যা বাইর হইলে কাদা-পানি পাড়াইতে হইত, কিন্তু এখন বাড়ির সামনে রাস্তায় গাড়ি (স্থানীয় রিকশা) দিয়া ঘরের দরজায় যাইতে পারি। এই অবস্থার বদল হইছে কেবলমাত্র গাজী সাহেবের জন্য।’

নারায়ণগঞ্জ-১ আসন: এলাকার উন্নয়নই ‘ভোটের মাঠে’ কথা বলবে

জানা যায়, গত দুই মেয়াদে ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ব্যয় করে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করেছেন গোলাম দস্তগীর গাজী। আরও অনেক উন্নয়নমূলক কাজ এখনও চলমান। এর মধ্যে ভুলতা ফ্লাইওভার অন্যতম। ২৯৮ কোটি ৫৬ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৫ টাকা ব্যয়ে ফ্লাইওভারটি নির্মাণ হচ্ছে। এছাড়া বীরপ্রতীক গাজী সেতুর নির্মাণ কাজও শেষ, যেকোনো দিন সেতুটি উদ্বোধন করা হবে।

আর আমেনা বেগম বলেন, ‘পানি পাইছি, গ্যাস পাইছি, বিদ্যুৎ পাইছি, কয়েক বছর আগেও পানি নিয়ে কত কষ্ট করছি। খাইতে পানি পাই নাই, দিনের পর দিন গোসল না কইরা থাকছি, অনেক দূর থিকা কলসি দিয়া পানি আনতে হইত। আর এখন আমরা বিশুদ্ধ পানি পাইতেছি-পানির কোনো কষ্ট নাই-আমাদের এসব সমাধান তো গাজী সাহেবই করছে, তাইলে তারে ভোট দিমু নাতো, কারে দিমু। আর কাউরে তো চিনিই না।’

কেবল তাই নয়, গোলাম দস্তগীর গাজী আধঁরিয়া উপজেলা শিক্ষা কার্যালয় প্রসার ও সংস্কার এবং পূর্ব দড়িকান্দি শিক্ষা কার্যালয় প্রসার ও সংস্কার, গোলাকান্দাইল উওর জিপিএস প্রসার ও সংস্কার এবং সাওঘাট জিপিএস সংস্কার, গোলাকান্দাইল উওর ও পূবগাওঁ সংস্কার ও দড়িকান্দি পশ্চিম জিপিএস সংস্কার, দক্ষিণপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ ও দড়িকান্দি পশ্চিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ, জাঙ্গি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ ও গোলাকান্দাইলে পরিতোষের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সিসি দ্বারা উন্নয়ন, দড়িকান্দি গ্যাগার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সিসি দ্বারা উন্নয়ন ও হোরগাওঁ দক্ষিন পাড়া গ্রামে সাবমার্সিবল পাম্প স্থাপন,পূর্ব বলাইখাঁ আরএইচডি ক্যানেল পর্যন্ত পানি নিস্কাশন ড্রেন নির্মাণ, গোলাকান্দাইল ফয়জুল করিম মাদ্রাসা, কবরস্থান রাস্তার পরিধি বাড়িয়েছেন।

একইসঙ্গে গোলাকান্দাইল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংযোগ সড়ক বাড়ানো, গোলাকান্দাইল হাঁটাবো রাস্তা উন্নয়ন ও গোলাকান্দাইল সিরাজের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা উন্নয়ন, হরিণা ইসমাইল সাউথ ও কুশাবো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ বৃদ্ধি, গোলাকান্দাইল নীলভিটা ও সাওঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষ বাড়ানো, গোলাকান্দাইল ক্যানেল পর্যন্ত পানি নিস্কাশনের পাইপ স্থাপন এবং গোলাকানান্দাইল ইউপির বিভিন্ন বিদ্যালয়ের আসবাবপত্র সরবরাহ,সোলার স্ট্রিট লাইট স্থাপন করা হয়েছে। গোলাকান্দাইল দক্ষিণ নতুন বাজারে,সাওঘাট উওরপাড়া ও পূর্বপাড়া মন্দিরের সামনে, বড় দড়িকান্দি রাস্তায়,মটখোলা ও আমলাব কবরস্থানের সামনে, হোরগাও দক্ষিণপাড়া জামে মসজিদ, মাহনা নতুন কুঁড়ি কিন্ডারগার্টেন স্কুল, গোলাকান্দাইল জামাল মেম্বারের বাড়ি, গোলাকান্দাইল দক্ষিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোলাকান্দাইল উওরপাড়া জামে মসজিদ,আধুনিক জামে মসজিদের সামনের রাস্তা প্রশস্ত করেছেন এই সংসদ সদস্য।

এছাড়া পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে, দড়িকান্দি কালভার্ট পর্যন্ত, ৪নং অনদিশ বাবুর বাড়ি পর্যন্ত, মজিবর রহমান ভূইঁয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাট, চারিতালুক মজিদের বাড়ি হতে রাস্তা পুনর্নির্মাণ,কুমারটেক বুড়ির পুকুরপাড়া হতে রাস্তা পুনর্নির্মাণ, মাহনা পরাগ টেক্সটাইল ব্রিজ পর্যন্ত সেচখাল পুনঃখনন, নতুন বাজার পর্যন্ত ড্রেনেজ খাল পুনঃখনন, ডহরগাঁও রাস্তা পুনর্নির্মাণ, পূর্ব বলাইখাঁ আরএইচডি ক্যানেল পর্যন্ত পানি নিস্কাশন ড্রেন নির্মাণ, গোলাকান্দাইল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংযোগ সড়ক সিসি দ্বারা উন্নয়ন, মাহনা খন্দাকারের মিল হতে আ. হক মেম্বারের টেক পর্যন্ত রাস্তা পুননির্মাণ, গোলাকান্দাইল হাটাবো রাস্তা উন্নয়ন ও গোলাকান্দাইল সিরাজের বাড়ি পর্যন্তু রাস্তা নির্মাণ, গোলাকান্দাইল নীলভিটা ও সাওঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ বৃদ্ধি ও গোলাকান্দাইল ক্যানেল পর্যন্ত পানি নিস্কাশনের পাইপ স্থাপন করেছেন গোলাম দস্তগীর গাজী।

তাই নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের ভোটাররা বলছেন, ‘এই এলাকাতে যা যা উন্নয়ন হয়েছে সেগুলোই কথা বলবে এবারের নির্বাচনে। আমরা যারা এ এলাকায় বাস করি, তারা জানি সেসব উন্নয়ন আমাদের জীবনকে কতটা উন্নত করেছে।’

সারাবাংলা/এসজেড/জেএ/এমও