বিজ্ঞাপন

নিজের সাজা নিরপরাধ ভাইকে খাটানোর অভিযোগে কারাদণ্ড

January 28, 2019 | 3:44 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম ব্যুরো: কৌশলে নাম পাল্টে নিজের অপরাধের সাজা নিরপরাধ ভাইকে খাটানোর অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় একজনকে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

সোমবার (২৮ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আল ইমরান খান এই আদেশ দিয়েছেন।

দণ্ডিত স্বপন দাশ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার উত্তর বামনডেঙ্গা গ্রামের দেবেন্দ্র জলদাশের ছেলে।

বিজ্ঞাপন

অপরাধ না করে সাজা খাটা অমর দাশ তার আপন চাচাতো ভাই। তিনি একই গ্রামের রেবতী জলদাশের ছেলে।

নগর পুলিশের সহকারি কমিশনার (প্রসিকিউশন) কাজী শাহাবুদ্দিন আহমেদ সারাবাংলাকে জানান, ২০০৪ সালের আগস্টে নগরীর ডবলমুরিং থানা এলাকায় বন্দুকযুদ্ধের পর স্বপনসহ চারজনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। স্বপন পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। তাদের ডাকাত হিসেবে উল্লেখ করে অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে পৃথক দুটি মামলা দায়ের হয়।

ওই মামলায় গ্রেফতারের তিন বছর পর ২০০৭ সালে জামিনে বের হন স্বপন। কিন্তু মামলা দায়েরের সময় স্বপনকে যখন তার নাম জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, তখন সে অমর দাশ বলে জানিয়েছিল। এর ফলে দুটি মামলার এজাহারে তার নাম উল্লেখ ছিল ‘অমর দাশ’।

বিজ্ঞাপন

২০১৭ সালে অস্ত্র মামলায় ১৭ বছর এবং বিস্ফোরক আইনে ৫ বছরসহ মোট ২২ বছরের সাজা হয় স্বপনসহ (অমর) আসামিদের। এজাহারে স্বপনের (অমর) ঠিকানা লেখা ছিল সদরঘাট থানা এলাকায়। সেই হিসেবে জামিনে বেরিয়ে পলাতক স্বপনের সাজা পরোয়ানা যায় সদরঘাট থানায়।

গত বছরের ৫ জুলাই সদরঘাট থানা পুলিশ সাজা পরোয়ানামূলে অমরকে গ্রেফতার করে। আকস্মিক গ্রেফতারে অমর বিস্মিত হয়। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। এ সময় সে বারবার নিজেকে নির্দোষ দাবি করে। পুলিশ বিষয়টি তদন্তের উদ্যোগ নেয়। কারাগারে গিয়ে ২০০৪ সালে গ্রেফতার হওয়া আসামির (স্বপন দাশ) শনাক্তকরণ চিহ্ন মেলানো হয়। কিন্তু অমরের শনাক্তকরণ চিহ্নে আগের চিহ্নের সঙ্গে মিল পাওয়া যায়নি।

এরপর একই মামলায় কারাগারে থাকা আসামি মতিনকে দিয়ে অমরকে শনাক্ত করানো হয়। মতিন জানায়-২০০৪ সালে গ্রেফতার হওয়া আসামি (স্বপন) আর অমর একই ব্যক্তি নন।

প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়ার পর গত ২৩ আগস্ট স্বপনকে গ্রেফতার করে সদরঘাট থানা পুলিশ। এরপর অমরকে মুক্ত করতে পুলিশ আইনি লড়াইয়ের উদ্যোগ নেন।

বিজ্ঞাপন

কারাবন্দি অমর পুলিশের সহযোগিতায় হাইকোর্টে রিট করেন। গত বছরের ২৮ অক্টোবর হাইকোর্টের বিচারপতি হাবিবুল গণি ও বিচারপতি বদরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চ অমরকে সাজার দায় থেকে অব্যাহতি দিয়ে মুক্তি দেওয়ার দেওয়ার আদেশ দেন।

আইনি লড়াই শেষে ১১ নভেম্বর অমর চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান। পুলিশ স্বপনের বিরুদ্ধে নগরীর ডবলমুরিং থানায় নিরপরাধ অমরকে ফাঁসানোর অভিযোগে আরেকটি মামলা করেন।

ওই মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল ও অভিযোগ গঠনের পর ৪ জনের সাক্ষ্য নিয়ে আদালত এই রায় দিয়েছেন।

সারাবাংলা/আরডি

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন