বিজ্ঞাপন

ডাকসু: হলের বাইরে ভোটকেন্দ্র চায় ছাত্র ইউনিয়ন-ছাত্র ফেডারেশন

January 28, 2019 | 10:23 pm

।। ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাবি: আগামী ১১ মার্চ অনুষ্ঠেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদের নির্বাচনে আবাসিক হলের বাইরে একাডেমিক ভবনে ভোটকেন্দ্র দেওয়ার দাবি জানিয়েছে ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্র ফেডারেশন।

সোমবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে আলাদা কর্মসূচি থেকে সংগঠনের নেতারা এই দাবি জানিয়েছেন। এদিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সমাবেশ করে ছাত্র ইউনিয়ন। অন্যদিকে মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্র ফেডারেশন।

আগামীকাল (মঙ্গলবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় তাদের দাবিগুলো অনুমোদন না পেলে ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা হবে বলেও কর্মসূচি থেকে হুঁশিয়ারি দেন সংগঠন দু’টির নেতারা।

বিজ্ঞাপন

সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি জিএম জিলানী শুভ বলেন, ডাকসু নির্বাচন আয়োজনে আন্তরিকতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সদিচ্ছার বহিঃপ্রকাশ। তবে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে না পারলে সেই নির্বাচন প্রহসনের বেশি কিছু হবে না। শিক্ষার্থীরা যাতে নির্ভয়ে ও স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিতে পারে, তার জন্য আমরা হলের বাইরে একাডেমিক ভবনে ভোটকেন্দ্র করার দাবি জানিয়েছি। নির্বাচনের যথাযথ পরিবেশ নিশ্চিত করতে কালকের সিন্ডিকেট সভায় শিক্ষার্থীদের ন্যায়সঙ্গত দাবিগুলোকে চূড়ান্ত অনুমোদন দিতে হবে।

প্রগতিশীল ছাত্রজোটের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সমন্বয়ক সালমান সিদ্দিকী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও হলগুলোতে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের দখলদারিত্ব রয়েছে। গণরুম, গেস্টরুমের মাধ্যমে তারা তাদের কর্তৃত্ব বজায় রাখছে। প্রশাসনও রীতিমতো তাদের সহযোগিতা করছে এমন অভিযোগ রয়েছে। সহাবস্থান ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত না করেই ডাকসু নির্বাচন দিলে তা সুষ্ঠু হবে না। তাই আমরা এবারের ডাকসু নির্বাচনের ভোটকেন্দ্রগুলো হলের বাইরে একাডেমিক ভবনে করার দাবি জানিয়েছি। সিন্ডিকেট সভায় এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত না হলে আমরা নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করব।

সমাবেশে সংহতি জানিয়ে সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নূর বলেন, সব ছাত্র সংগঠনের দু’টি মৌলিক দাবি- ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল সব সংগঠনের সহাবস্থান ও হলের বাইরে ভোটকেন্দ্র। হলে সহাবস্থান নেই, তাই ভোটকেন্দ্র অবশ্যই হলের বাইরে হতে হবে। হলে ভেতরে ভোটকেন্দ্রে ৩০ ডিসেম্বরের মতো আরও একটি কলঙ্কিত নির্বাচন হোক- তা আমরা চাই না। আমাদের যেসব শিক্ষকরা নির্বাচনের উদ্যোগ নিয়েছেন, তাদের কর্মকাণ্ডে আমরা স্বাধীনতা ও স্বায়ত্তশাসন দেখতে চাই।

বিজ্ঞাপন

ডাকসুর সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ দৌজা বলেন, ছাত্ররা হলের বাইরে ভোটকেন্দ্র করার দাবি তুলেছেন, যদিও গঠনতন্ত্রে ভোটকেন্দ্র হলে করার কথা বলা হয়েছে। বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই হলের থাকেন না। তাই তারা একাডেমিক ভবনে ভোটকেন্দ্র চায়। আমার মনে হয়, এই দাবি যৌক্তিক। ছাত্রদের এই দাবির সঙ্গে একাত্মতা জানাচ্ছি।

এদিকে দুপুরে মধুর ক্যান্টিনে ডাকসু নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র, প্যানেল ভাবনা ও নির্বাচনি আচরণবিধির বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে ছাত্র ফেডারেশন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জাহিদ সুজন। ছাত্র ফেডারেশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, হল প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে হলের ভেতরে প্রায় সব শিক্ষার্থীর ওপর আধিপত্য বিস্তার ও নিয়ন্ত্রণ করছে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। গণরুম ও গেস্টরুম নির্যাতনে অনেক শিক্ষার্থী শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণায় ভুগেছেন। নির্যাতনের শিকার হয়ে হাফিজুর মোল্লা মারা গেছেন। হাফিজুর হাজার হাজার নির্যাতিত সাধারণ শিক্ষার্থীর প্রতিচ্ছবি। এই অবস্থায় হলে ভোটকেন্দ্র রাখলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। হলের বিশেষ ভীতিকর পরিস্থিতিতে অনুষদে ভোটকেন্দ্র নিতে কোনো বাধা নেই।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি গোলাম মোস্তফা, বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি উম্মে হাবিবা ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল হক উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/কেকে/এটি

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন