বিজ্ঞাপন

ডিজিটাল নম্বর প্লেট: ৭ বছরেও সমন্বয় হয়নি বিআরটিএ-ডিএমপির

January 30, 2019 | 7:36 am

।। জামশেদ নাজিম, অতিথি প্রতিবেদক ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: ছিনতাই-অপহরণ-চুরি ঠেকাতে যানবাহনে ডিজিটাল নম্বর প্লেট বসানোর প্রকল্প শুরু হয়েছে ২০১২ সালে। তবে, বিষয়টি নিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ও বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) মধ্যে কোনো সমন্বয় না হওয়ায় প্রকল্পের সুফল পাচ্ছেন নাগরিকরা।  বিষয়টি নিয়ে এক সংস্থা আরেক সংস্থাকেই দুষছে। আর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার না দেওয়ায় বিআরটিএ-এর সার্ভারে থাকা গাড়ির তথ্য সম্পর্কে জানতে পারছেন না আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।  এ সম্পর্কে কোনো তথ্য না পাওয়ায় গাড়ি চুরির মতো অপরাধ দমনে বেগ পেতে হচ্ছে পুলিশকে।

ডিএমপি সূত্র জানায়, যেকোনো অপরাধের ক্ষেত্রে অপরাধীরা যানবাহন ব্যবহার করে আসছে। চুরি ও ছিনতাইসহ হত্যার ঘটনায় অপরাধীরা প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল প্রতিনিয়ত ব্যবহার করছে। এসব অপরাধ দমনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে ডিজিটাল নম্বার প্লেট, এই ভাবনা থেকে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ডিজিটাল নম্বর প্লেট প্রকল্প হাতে নেয় বিআরটিএ। তবে যে প্ররিকল্পনা নিয়ে এ প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয়, তা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে পারছে না প্রতিষ্ঠানটি।

পরিকল্পনা অনুসারে, গাড়ি চুরি রোধ অথবা চুরি গেলেও দ্রুত খুঁজে বের করাসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় চিহ্নিত করে ডিজিটাল নম্বর প্লেট ও রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আইডেন্টিফিকেশন (আরএফআইডি) স্টিকার বিতরণ প্রকল্পের আওতায় ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ ১২টি স্থানে আরএফআইডি স্টেশন বা টাওয়ার স্থাপন করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম।  এসব স্টেশনে বিশেষ ক্ষেত্রে কিছু গাড়ির অবস্থান শনাক্ত করা হলেও তা চাহিদা পূরণ করছে না। ঢাকার বাইরে এ স্টেশন না থাকায় প্রকল্পের লক্ষ্য পূরণ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। শুধু তাই নয়, সাত বছর পার হলেও আরএফআইডি শনাক্ত করার এসব যন্ত্র এখনো পুলিশকে দেওয়া হয়নি।

বিজ্ঞাপন

এ প্রসঙ্গে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের যুগ্ম কমিশনার মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ‘বিভন্ন দেশে অপরাধীদের শনাক্ত করতে গাড়িতে ডিজিটাল নম্বর প্লেট ব্যবহার করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশে বিআরটিএ ডিজিটাল নম্বর প্লেট কী কাজে ব্যবহার করছে, তাদের কাছে কী তথ্য আছে তার কিছু ডিএমপিকে জানানো হয় না।  এমনকি ডিজিটাল নম্বর প্লেট সিস্টেমটা আমাদের ডিএমপির কাছে এখনো আসেনি।’

গাড়ি চুরি রোধ অথবা চুরি গেলেও দ্রুত খুঁজে বের করাসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় চিহ্নিত করে ডিজিটাল নম্বর প্লেট ও আরএফআইডি স্টিকার বিতরণ শুরু হয় ২০১২ সালের অক্টোবরে। নম্বর প্লেট ও স্টিকার বাবদ যানবাহন অনুযায়ী ৪ হাজার ৬২৮ ও ২ হাজার ২৬০ টাকা গ্রাহকদের কাছ থেকে আদায় করে বিআরটিএ।  প্রায় ৪০ লাখ গাড়ির জন্য ১৯ লাখ ৬০ হাজার ডিজিটাল নাম্বার-প্লেট তৈরি হয়।  এসব ডিজিটাল নম্বর প্লেট তৈরিতেই ব্যয় করা হয়েছে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা।  এ প্রকল্প বাস্তবায়নে কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান টাইগার আইটি বাংলাদেশ লিমিটেড।

জানতে চাইলে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) মাহবুব আলম বলেন, ‘ডিজিটাল নম্বর প্লেটের সুফল পাচ্ছেন না গ্রাহকরা।  প্রকল্পটি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে ঢাকার অপরাধ অনেকটা কমে আসতো।  ডিজিটাল নম্বর প্লেট করা হলেও যে লক্ষ্য ছিল, তা বাস্তবায়ন করা হয়নি।’

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে বিআরটিএ’র পরিচালক (রোড সেফটি) শেখ মোহাম্মদ মাহবুব-ই-রব্বানী বলেন, ‘ডিজিটাল নম্বর প্লেট প্রকল্প করা হয় ভুয়া লাইসেন্স প্রতিরোধের জন্য।  ঢাকার ১২টি স্থানে আরএফআইডি স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে দিয়ে গাড়ি প্রবেশ করলে তার তথ্য পাওয়া যায়। ’

পুলিশের সঙ্গে কেনো সমন্বয় করা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে মাহবুব-ই-রব্বানী বলেন, ‘অপরাধ দমনের কাজ পুলিশের, বিআরটিএ-এর নয়।’ পুলিশ চাইলে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে সিসি ক্যামেরা বসিয়ে অপরাধ দমন করতে পারে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

সারাবাংলা/এমএনএইচ/ইএইচটি

বিজ্ঞাপন

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন