হাথুরুর কোচিংয়ে ৯ সিরিজে হেরেছে শ্রীলঙ্কা

।। স্পোর্টস ডেস্ক ।।

বাংলাদেশ দলের হেড কোচ থাকা অবস্থায় দলের নির্বাচক ছিলেন লঙ্কান কোচ চন্দিকা হাথুরুসিংহে। নিজের ইচ্ছেমতো দলে খেলোয়াড় আনা, বাদ দেওয়ারও অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। এরপর তিনি বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যান নিজ দেশ শ্রীলঙ্কায়। সেখানেও নিজের ইচ্ছেমতো খেলোয়াড় নির্বাচন করেছেন হাথুরু। কদিন আগে ব্রিসবেনে লঙ্কানদের পরাজয়ে শ্রীলঙ্কার ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ক্ষমতা খর্ব করা হয় হাথুরুসিংহের।

শ্রীলঙ্কা জাতীয় দলের কোচের সঙ্গে নির্বাচক কমিটিতেও রাখা হয়েছিল হাথুরুকে। যেমনটা তিনি ছিলেন বাংলাদেশে। কিন্তু বাংলাদেশে সাফল্য পেলেও নিজ দেশ শ্রীলঙ্কার হয়ে তেমন কোনো সাফল্য নেই হাথুরুর। যার ফলশ্রুতিতে দল নির্বাচনের দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেয়া হয় এই কোচকে। দল নির্বাচনে আর সরাসরি হস্তক্ষেপ করার সুযোগ পাচ্ছেন না তিনি।

কার্যকর ও স্বচ্ছ নির্বাচন প্রক্রিয়া গঠনে ব্যর্থ হাথুরুর কোচ হওয়ার প্রধান শর্তই ছিল নির্বাচক হিসেবে স্বাধীনতা দেওয়া। তবে, এই ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ায় হাথুরুসিংহে পরবর্তীতে কী করেন সেটাই এখন দেখার বিষয়।

২০১৭ সালের শেষ দিকে চন্দিকা হাথুরুসিংহে বাংলাদেশের কোচের দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড তাকে থেকে যাওয়ার অনুরোধ করলেও শোনেননি, ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে চলে যান। নিজ দেশ শ্রীলঙ্কার দায়িত্ব নেন। লঙ্কানদের নিয়ে তার প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট ছিল টাইগারদের বিপক্ষেই।

নিজের প্রথম অ্যাসাইনমেন্টে বাংলাদেশে এসেছিলেন হাথুরু। গত বছরের জানুয়ারিতে জিম্বাবুয়ে-বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কাকে নিয়ে আয়োজিত ত্রিদেশীয় সিরিজটি লঙ্কানরাই জিতেছিল। এরপর শুধুই আক্ষেপের পালা। ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটের শেষ তিনটি সিরিজেই হোয়াইটওয়াশ হয়েছে লঙ্কানরা। টানা ৯টি সিরিজে জিততে পারেনি হাথুরুর শিষ্যরা। এর মধ্যে আছে তিনটি টেস্ট সিরিজ, চারটি ওয়ানডে সিরিজ আর দুটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ।

টেস্ট সিরিজ:
২০১৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে জিতেছিল লঙ্কানরা। এরপর ইংল্যান্ডের কাছে তিন ম্যাচ টেস্ট সিরিজে ধবলধোলাই হয়। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজটিও হারে হাথুরুর শিষ্যরা। আর সবশেষ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের দুটিতে হেরে আরও একবার ধবলধোলাই হয়েছে শ্রীলঙ্কা। প্রথম ম্যাচে ইনিংস ও ৪০ রানে আর দ্বিতীয় ম্যাচে ৩৬৬ রানে হেরেছে দলটি।

ওয়ানডে সিরিজ:
বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় সিরিজে বাংলাদেশ আর জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে সিরিজ জিতেছিল শ্রীলঙ্কা। তার আগে ২০১৬ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুয়েকে নিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজে জিতেছিল লঙ্কানরা। ২০১৬ সালের সেই সিরিজ আর বাংলাদেশের ত্রিদেশীয় সিরিজের মাঝে শ্রীলঙ্কা খেলেছে আরও সাতটি সিরিজ কিংবা মেগা ইভেন্টে। কোনোটিতেই সিরিজ জেতা হয়নি তাদের। বাংলাদেশে হাথুরুর প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট জিতলেও এরপর টানা চারটি সিরিজে জয় নেই লঙ্কানদের। সবশেষ তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশ হয় হাথুরুর দলটি।

টি-টোয়েন্টি সিরিজ:
২০১৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে একমাত্র টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জিতেছিল লঙ্কানরা। তার আগে নিজেদের মাঠে নিদাহাস ট্রফিতে বাংলাদেশের কাছে হেরে ছিটকে পড়েছিল টুর্নামেন্ট থেকে। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে জয়ের পর থেকে আর কোনো জয় নেই হাথুরুর শিষ্যদের। এরমধ্যে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হেরেছে লঙ্কানরা।

সারাবাংলা/এমআরপি