বিজ্ঞাপন

খালেদা জিয়ার নির্দেশনার অপেক্ষায় বিএনপি

February 8, 2019 | 7:22 pm

। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: এ মুহূর্তে বিএনপির প্রধান এজেন্ডা দলকে সংগঠিত করা এবং দলীয় প্রধান খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করা। কিন্তু কোন পথে বা কোন উপায়ে এই দুইটি কাজ তারা যথাযথভাবে সম্পন্ন করবে, সেটাই ঠিক করতে পারছে না। খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য কঠোর আন্দোলন, নাকি দলকে সংগঠিত করার জন্য ধৈর্য্য ধারণ- কোনোকিছু ঠিক করতে পারছে না। খালেদা জিয়ার কাছ থেকেও পাচ্ছে না চূড়ান্ত কোনো দিক-নির্দেশনা।

খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং বিএনপির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আইনি প্রক্রিয়া এবং রাজপথের আন্দোলন- দুটিই আমরা সমানভাবে চালাব। আর বিএনপির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে নতুন করে কিছু বলার আছে বলে মনে করি না। একটা নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি এতদিন যেভাবে চলেছে, ভবিষ্যতে সেভাবে চলবে।’

গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের সাজা হয় খালেদা জিয়ার। কারাগার, হাসপাতাল আর আদালতের বারান্দায় কেটে গেল বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার এক বছর। ওইদিন থেকেই নাজিমুদ্দীন রোডের কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রয়েছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

খালেদা জিয়ার কারাবন্দির একবছর পূর্তি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে প্রতিবাদ সভা আয়োজন করেছে বিএনপি। অবশ্য দিনটি উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করতে চেয়েছিল দলটি। কিন্তু অমর একুশে গ্রন্থমেলার কারণে শেষ পর্যন্ত সেই কর্মসূচি বাতিল করে তারা।

গত প্রায় চার যুগ ধরে বিএনপির নেতৃত্ব দেওয়া বেগম খালেদা জিয়া এই মুহূর্তে জিয়া অর্ফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টে দুর্নীতি সংক্রান্ত পৃথক দু’টি মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ডাদেশ নিয়ে কারাবন্দি রয়েছেন।

প্রথমে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছর সাজা হলেও উচ্চ আদালতে সেটি বেড়ে ১০ বছর হয়। আর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বিচারিক আদালত সাতবছরের সাজা দেন বেগম খালেদা জিয়াকে।

বিজ্ঞাপন

গত একবছরে খালেদা জিয়ার পুরো সময়টাই কেটেছে নাজিমুদ্দীন রোডের কারাগারে। চিকিৎসার জন্য মাঝে কিছুদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় রাখা হয় তাকে।

বিএনপি শুরু থেকেই অভিযোগ করে আসছিল, কারাগারে খালেদা জিয়াকে যথাযথ মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে না। তার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়ার ব্যাপারেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ‘চরম’ অসহোযোগিতা করছে। কারাগারে খালেদা জিয়ার থাকার জায়গাটাও ‘মানবিক’ নয়।

এ নিয়ে খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যরা এবং তার দলের শীর্ষ নেতারা বেশ কয়েকবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন। যথাযথ চিকিৎসা এবং ভালো পরিবেশে তাকে রাখার জন্য স্বরাষ্ট্রমস্ত্রীকে মৌখিক ও লিখিতভাবে অনুরোধ জানিয়েছেন।

বিভিন্ন মামলায় বার বার আদালতে হাজিরা দিতে অস্বীকৃতি জানালে কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরেই খালেদা জিয়ার জন্য আদালত স্থাপন করা হয়েছে। সেখানেই মাঝে মধ্যে হাজিরা দিচ্ছেন নাইকো দুর্নীতি মামলার অন্যতম আসামি খালেদা জিয়া।

বিজ্ঞাপন

গত এক বছরে নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও বিএনপির শীর্ষ নেতারা একাধিকবার খালেদা জিয়ার সঙ্গে কারাগারে দেখা করেছেন। কারাবিধি অনুযায়ী পরিবারের সদস্যরাও নিয়মিত দেখা করার সুযোগ পেয়েছেন তার সঙ্গে। যদিও বিএনপির পক্ষ থেকে বারবার অভিযোগ তোলা হয়েছে, আত্মীয় স্বজন ও রাজনৈতিক সহকর্মীদের সঙ্গে দেখা করার ক্ষেত্রে খালেদা জিয়াকে কারাবিধির চেয়ে কম সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে নির্বাচনের আগে নানারকম শর্তের কথা বললেও খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখেই ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যায় বিএনপি। কিন্তু সে নির্বাচনে অভাবনীয় বিপর্যয় ঘটে তাদের। ২৯৬ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করে মাত্র ৭টি আসনে জয় পায় তারা। পরাজয়ের পর নির্বাচনের ফল প্রত্যাখান করে এখন পর্যন্ত শপথ গ্রহণ থেকে বিরত রয়েছে বিএনপি।

সারাবাংলাা/এজেড/একে

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন