বিজ্ঞাপন

শোককে শক্তিতে পরিণত করব: তামান্না বুবলী

February 9, 2019 | 10:29 pm

।। সৈকত ভৌমিক, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনে প্রার্থীদের নামের চূড়ান্ত তালিকায় রয়েছেন নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও নরসিংদীর প্রয়াত মেয়র লোকমান হোসেনের স্ত্রী তামান্না নুসরাত বুবলী।

শুক্রবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের ৪১ জনের নাম ঘোষণা করেন।

মনোনয়ন প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণার পর সারাবাংলার সঙ্গে আলাপকালে তামান্না নুসরাত বুবলী বলেন, ‘আমি স্বামী হারানোর শোককে শক্তিকে রূপান্তর করে তৃণমূলের একজন কর্মী হিসেবে চেষ্টা করেছি নরসিংদীবাসীর জন্য কাজ করে যেতে। ভবিষ্যতেও করে যাবো। আমার নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা ও আমার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আমাকে যোগ্য বিবেচনা করেছেন আমার এলাকাবাসীর প্রতিনিধি হিসেবে সংসদে কথা বলার জন্য। সে জন্য আমি কৃতজ্ঞ। একজন সংসদ সদস্য হিসেবে নয় বরং বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন কর্মী হিসেবে আমি আমার এলাকাবাসীর জন্য কাজ করে যেতে চাই।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়াকে আমি দেখছি নরসিংদীর একজন প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে যাওয়ার সুযোগ হিসেবে। আমি সেই সুযোগ পাওয়াতে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।’

‘শোককে শক্তিকে রূপান্তর করার শক্তি, প্রেরণা আমি পেয়েছি আমার নেত্রীর কাছ থেকে। আপনারা হয়ত জানেন আমার স্বামী প্রয়াত লোকমান হক নরসিংদীর একজন জনপ্রিয় মেয়র ছিলেন। উনাকে হারানোর পরে বিগত ৭ বছরে আমি মানসিকভাবে প্রতিমুহূর্তেই ওনার শোক অনুভব করেছি। কিন্তু আমি যখন দেখি আমার নেত্রীর শোককে শক্তিতে রূপান্তর করে এগিয়ে যাওয়া, তা আমাকে প্রেরণা যুগিয়েছে। তিনি উনার স্বজনদের হারিয়েও বাংলার মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্যে যেভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তা আমাকে অনুপ্রেরণা দিয়েছে। উনি কি কখনো উনার স্বজনদের অনুভব করেন নি? অবশ্যই করেছেন। কখনো বাবার মুখ, কখনো মা এর মুখ কখনো বা ছোট্ট ভাই শিশু রাসেলের মুখ যাকে রেহাই দেইনি সেই ঘাতকের দল তাদের সবাইকে হারিয়েও তিনি যেভাবে এগিয়ে চলেছেন সেটা আমাকে প্রেরণা যুগিয়েছে। আমি আমার স্বামীকে হারিয়েছি। আমি আমার শোককে শক্তিতে রূপান্তর করতে চাই,আমার এলাকাবাসীর জন্য কাজ করতে চাই।’

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়নের এই অগ্রযাত্রাতে নরসিংদীতে আপনি কীভাবে কাজ করে যেতে যান ভবিষ্যত দিনগুলোতে? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘নরসিংদী ছিল একটি জরাজীর্ণ শহর। এই এলাকার মানুষ আসলে এর আগে স্বপ্নও দেখতে জানত না। একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে কী কী কাজ করা সম্ভব ও কীভাবে তা বাস্তবায়ন সম্ভব তা যে ব্যক্তি করে দেখিয়েছে তিনিই লোকমান হোসেন।’

২০০৪ সালে নরসিংদী সেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীন প্রথমবারের মত পৌর নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সকল কারচুপি সত্ত্বেও পৌর চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হন প্রয়াত লোকমান হোসেন।

উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রাখার জন্য ২০১১ সালের ১৭ জানুয়ারির নির্বাচনে তিনি বিপুল ভোটের ব্যবধানে দ্বিতীয়বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হন।

বিজ্ঞাপন

তিনি এই নরসিংদীর জন্য কাজ করে গেছেন। শহরের উন্নতি ঘটিয়েছেন। রাস্তাঘাট পাকাকরণ থেকে শুরু করে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নতিকরণ করা ও বিভিন্ন সৌন্দর্যবর্ধন কাজ তিনি করে গেছেন।

তিনি এলাকাবাসীকে বলতেন উনি এমন এক নরসিংদী গড়তে চান যেখানে জনগণ রিকশাতে বসে চা খাবে কিন্তু চা পড়বে না অর্থাৎ রাস্তাঘাটে কোনো ক্ষত থাকবে না। সহধর্মিনী হিসেবে আমি ওনার চলার পথ দেখেছি। উনি আমাকে সবসময় একটা কথা বলতেন যে তুমি যদি মানুষকে ভালোবাসো ও মানুষের উপকার করার চিন্তা করো তোমার বিবেকই তোমাকে সেই রাস্তা দেখিয়ে দেবে। মুখে জনগণের কাছে এটা করব, ওটা করব বললেই কাজ হয় না। সেটাকে কার্যকর করতে হয় বিবেকের তাড়না থেকে, এলাকাবাসীর জন্যে ভালো কিছু করার তাগাদা থেকে। তখনই তাদের স্বপ্নপূরণে কাজ করে যেতে পারবে। আমি সেটাই করতে চাই।

তরুণ প্রজন্ম যেন শিক্ষা গ্রহণ করার পরে দ্রুত কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করতে পারে সে জন্য আমি চেষ্টা করে যাব। আমার এলাকার মেয়েদের সামাজিক নিরাপত্তা ও কর্মক্ষেত্রে তাদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর চেষ্টা আমি করব। নারী অগ্রগতিতে আমি কাজ করতে চাই। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নে যা যা করা দরকার আমি সেগুলো করতে আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাব।

আমি মনে করি একজন নারী যখন সমাজসেবার ব্রত নিয়ে এগিয়ে যায় তখন সেই সমাজের অগ্রগতি কেউ রুখতে পারে না। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এটার সবচাইতে বড় উদাহরণ। আমি সেই পথের একজন কর্মী হিসেবে এগিয়ে যেতে চাই আমার এলাকাবাসীর পাশে থেকে, তাদের সাথে নিয়ে।

২০১১ সালের ১ নভেম্বর নরসিংদী শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মেয়র লোকমান হোসেনকে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়।

সারাবাংলা/এসবি/একে

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন