বিজ্ঞাপন

অর্থনৈতিক সাফল্যের জন্য শ্রমমানের উন্নয়ন জরুরি: যুক্তরাষ্ট্র

February 13, 2019 | 11:29 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্র সরকার মনে করে, অর্থনৈতিক ও গণতান্ত্রিক ক্ষেত্রে একটি দেশের সাফল্যের জন্য শ্রমমানের উন্নয়ন করা ও কর্মী অধিকার সমুন্নত রাখা দু‘টিই খুব জরুরি। বুধবার (১৩ ফেব্রয়ারি) ঢাকায় অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্র মিশন থেকে এই বার্তা পাঠানো হয়।

এতে আরও বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল আর. মিলার যশোর ও খুলনায় তার প্রথম সফর শেষ করেছেন। সফরে তিনি ইউএসএআইডি’র কৃষি, শ্রম ও খাদ্য সহায়তা বিষয়ক কিছু গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি পরিদর্শন করেন এবং খুলনা আমেরিকান কর্নারে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। তার সঙ্গে ছিলেন ইউএসএআইডি’র ডেপুটি মিশন পরিচালক জেইনা সালাহি।

রাষ্ট্রদূত ও তার সফরসঙ্গীরা যশোরে সরকারি কর্মকর্তা, কমিউনিটি নেতা ও ইউএসএআইডি’র কর্মসূচিগুলোতে অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ইউএসএআইডি’র উন্নয়ন কর্মসূচিগুলোর প্রভাব সম্পর্কে সরাসরি মানুষের কাছ থেকে জানাই ছিল এই সফরের উদ্দেশ্য।

বিজ্ঞাপন

এসব কর্মসূচি কীভাবে কৃষিতে উৎপাদনশীলতা ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি জোরদার করছে যশোরে তা দেখেন রাষ্ট্রদূত। সেখানে ‘জনতা ইঞ্জিনিয়ারিং’ ও ‘দ্য মেটাল প্রাইভেট লিমিটেড’র মতো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করছে ইউএসএআইডি। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতিনিধিদলটি স্থানীয় ফুল চাষীদের সঙ্গে দেখা করেন। নতুন আরও কিছু জাতের ফুল চাষ ও উন্নত কৃষি পদ্ধতির মাধ্যমে তারা উৎপাদন বাড়িয়েছেন। এ জন্য ইউএসএআইডি‘র কর্মসূচির আওতায় প্রশিক্ষণ নিয়েছেন ওই চাষীরা। প্রতিনিধিদলটি স্থানীয় কার্প প্রজাতির মাছের সবচেয়ে উৎপাদনশীল ও শক্তিশালী জাত তৈরির কাজে নিয়োজিত মৎস্যবিজ্ঞানীদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন।

রাষ্ট্রদূত মিলার ‘ফল আর্মিওয়ার্ম’ পোকার হুমকির বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) বিজ্ঞানীদের সঙ্গে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করেন। বাংলাদেশে সম্প্রতি আসা এই পতঙ্গটি বিভিন্ন ধরনের ফসলের ক্ষতি করতে পারে।

এ নিয়ে বৈঠকের পর রাষ্ট্রদূত সাংবাদিকদের বলেন, “কৃষকদের সচেতন করা এবং পতঙ্গটি দমনের উপায় বের করতে কৃষি মন্ত্রণালয় ও অন্যান্য সংস্থার ব্যাপক কর্মতৎপরতায় আমি সন্তুষ্ট। তাদের গৃহীত কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে, কৃষকদের ফল আর্মিওয়ার্ম দমনে সহায়তা করতে বিশেষ করে পোকা-মাকড় নিয়ন্ত্রণের উপকরণসহ নতুন পণ্যের নিবন্ধন প্রক্রিয়া দ্রুততর করা।”

বিজ্ঞাপন

খুলনায় রাষ্ট্রদূত মিলার ইউএসএআইডি’র কর্মসূচি ‘নব যাত্রা’র উপকারভোগীদের সঙ্গে কথা বলেন। দারিদ্র্য, ক্ষুধা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এমন মানুষদের জন্যই এ কর্মসূচিটি পরিচালিত হয়। ‘নব যাত্রা’র উপকারভোগীরা ইউএসএআইডি থেকে শেখা প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে কীভাবে খাদ্য উৎপাদনে তাদের স্বনির্ভরতা বাড়াচ্ছে রাষ্ট্রদূত তা দেখেন। প্রতিনিধিদলটি এর পরে একটি চিংড়ি ও মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ প্ল্যান্ট পরিদর্শন করেন। এই শিল্পটি সম্পর্কে ধারণা পেতে ও সেখানকার শ্রম পরিস্থিতি জানতে সেখানে যান তারা।

বার্তায় বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র সরকার মনে করে, অর্থনৈতিক ও গণতান্ত্রিক ক্ষেত্রে একটি দেশের সাফল্যের জন্য শ্রমমানের উন্নয়ন করা ও কর্মী অধিকার সমুন্নত রাখা দুটিই খুব জরুরি। ইউএসএআইডি’র সহায়তাপুষ্ট স্থানীয় ‘ওয়ার্কার্স কমিউনিটি সেন্টার’ পরিদর্শনের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রদূত মিলারের সফর শেষ হয়।

ওয়ার্ল্ডফিশ, এসিডিআই/ভিওসিএ (ভোকা), সিআইএমএমওয়াইটি (সিমিট) উইনরক ইন্টারন্যাশনাল এবং ওয়ার্ল্ডভিশন বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) অন্যান্য সহযোগীদের সহায়তায় প্রতিনিধি দলটির এ সফরের আয়োজন করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্র সরকার তাদের বৈদেশিক উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থা ইউএসএআইডি’র মাধ্যমে ১৯৭১ সাল থেকে বাংলাদেশকে উন্নয়ন সহায়তা বাবদ ৭শ’ কোটি ডলারের বেশি অর্থ দিয়েছে। ২০১৭ সালে সংস্থাটি খাদ্য নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সুযোগ সম্প্রসারণ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার উন্নয়ন, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও কার্যকলাপ এগিয়ে নেওয়া, পরিবেশ সংরক্ষণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলার সামর্থ্য বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের জীবনমানের উন্নয়নে দিয়েছে ২১ কোটি ২০ লাখ ডলারের বেশি।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/জেআইএল/এটি

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন