বিজ্ঞাপন

লক্ষ্মীপুরে অর্ধেকের বেশি স্কুলে নেই শহিদ মিনার

February 21, 2019 | 10:07 am

।। মো.আতোয়ার রহমান মনির, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার নেই। এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অস্থায়ীভাবে শহিদ মিনার তৈরি করে ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আসছে। স্বাধীনতার এত বছর পরও বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক,শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। তবে শিক্ষা কর্মকর্তা বলছেন, ইতোমধ্যে ডিজাইন অনুযায়ী কয়েকটি শহিদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে প্রতিটি বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার তৈরি করা হবে।

আরও পড়ুন: শ্রদ্ধায়-ভালোবাসায় ভাষা শহিদদের স্মরণ করছে জাতি

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৫টি উপজেলার ১ হাজার ১শত ৩০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়,১৭৮টি মাধ্যমিক ও ১৩৩টি মাদরাসা রয়েছে। সবগুলো প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ১৭৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৪০টিতে শহিদ মিনার নেই। এছাড়া ১৩৩টি মাদরাসার বেশিরভাগ স্থানে ও নেই শহিদ মিনার। চররমনী মোহন ও শাকচর জব্বার মাষ্টার হাট ইউনিয়নেই রয়েছে ১২টি প্রাথমিক ও দুটি উচ্চ বিদ্যালয়। এর মধ্যে একটিতেও নেই শহিদ মিনার। এ দিকে সদর,রায়পুর,রামগতি,রামগঞ্জ ও কমলনগর উপজেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চিত্র একই।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন: শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে কলাগাছের স্মৃতির মিনার

জানা গেছে, রাষ্ট্রভাষা বাংলা প্রতিষ্ঠার হলেও ওইসব প্রতিষ্ঠানগুলোতে আজও শহিদ মিনার নির্মিত না হওয়ায় ভাষা শহিদদের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা জানাতে পারছে না প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীরা। এখানকার শিক্ষার্থীরা বাধ্যহয়ে ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা শহিদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা জানাতে কলাগাছ দিয়ে শহিদ মিনার নির্মাণ করে পালন করছে স্কুলের শিক্ষার্থীরা।

সদর উপজেলার ইউছুফপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুলতানা রাজিয়া জানান, বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার স্থাপনের জন্য কোনো অর্থ তাদের নেই। কলাগাছ দিয়ে বানানো শহিদ মিনারই একমাত্র ভরসা।

বিজ্ঞাপন

শিক্ষার্থীরাসহ কয়েকজন জানান, এবার তারা একত্র হয়ে কলাগাছ দিয়ে শহিদ মিনার তৈরি করেছে। তারা একটি স্থায়ীভাবে শহিদ মিনার তৈরিতে সরকারের সহায়তা কামনা করেন।

আরও পড়ুন: সব পথ মিশে গেছে স্মৃতির মিনারে

রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের চর ইন্দুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মনির হোসেন বেপারী জানান, তাদের বিদ্যালয়ের আশপাশের চার-পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো শহিদ মিনার নেই। প্রতিবছর ২০ ফেব্রুয়ারি কলাগাছ দিয়ে বিদ্যালয়ের মাঠে শহিদ মিনার তৈরি করা হয়।

উপজেলার হাজিরহাট হামেদিয়া ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা যায়েদ হোছাইন ফারুকী জানান, রাষ্ট্রভাষা বাংলা প্রতিষ্ঠার প্রায় অনেক বছর হলেও উপজেলার সবকটি মাদরাসা শহিদ মিনারবিহীন থাকা খুবই দুঃখজনক। তাই শহিদ মিনারবিহীন প্রতিষ্ঠানগুলোতে অতিদ্রুত শহিদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান মোল্লা জানান, মূল অবকাঠামো অনুযায়ীই প্রত্যেক বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার নির্মাণ করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বলছেন, পর্যায়ক্রমে ডিজাইন অনুযায়ী শহিদ মিনার নির্মাণ করা হবে। যাতে আমাদের সন্তানদের মনের মধ্যে সে একুশের প্রতিপালন এবং উদযাপনটা যেন করতে পারে, সে ব্যবস্থা করা হবে।

লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল জানান, ২১ ফেব্রুয়ারি পালন করে কলাগাছ দিয়ে এটা দুঃখজনক। আমাদের ব্যয় কমিয়ে দিয়ে শহিদ মিনার করা হবে আগামীতে লক্ষ্মীপুর-২ আসনের প্রতিটি স্কুলে থাকবে শহিদ মিনার।

সারাবাংলা/এমএইচ

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন