বিজ্ঞাপন

ভারতের লোকসভা নির্বাচন নিয়ে একটি সহজ গাইড

April 10, 2019 | 2:02 pm

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

আগামীকাল থেকে শুরু হতে ভারতের লোকসভা নির্বাচন। মোট সাতটি ধাপে অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন। বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক নির্বাচন এটি। পুরো বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশের বেশির বসবাস ভারতে। ইতোমধ্যে দেশজুড়ে নির্বাচন ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র উত্তেজনা।

বিজ্ঞাপন

ভারতের এই বছরের নির্বাচনে দেশটির ভোটার সংখ্যা ৯০ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। ২১টি প্রদেশ থেকে এই ভোটাররা পার্লামেন্টের প্রতিনিধি নির্বাচিত করবেন।

এদিকে, এই নির্বাচনে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসতে জোর লড়াই চালাবেন ক্ষমতাসীন হিন্দু জাতীয়তাবাদী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অপরদিকে, মোদিকে পরাজিত করতে একজোট হয়েছেন দেশজুড়ে প্রধান বিরোধীদলগুলো।

জয়ী দল কী পাবে?

এই নির্বাচনে জয়ী দল পাবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতন্ত্র নিয়ন্ত্রণের বৈধতা। আর ওই সরকারের আমলে ভারতের অর্থনীতি যুক্তরাজ্যকে ছাড়িয়ে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বর্তমানে অর্থনৈতিক শক্তির তালিকায় ভারতের স্থান ষষ্ঠ।

বিজ্ঞাপন

ভারতের বর্তমান জনসংখ্যা হচ্ছে ১৩৪ কোটি। আর কয়েক বছরের মধ্যেই তা চীনকে ছাড়িয়ে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশে পরিণত হতে যাচ্ছে। আসন্ন এই নির্বাচনে জয়ী দল পাবে ওই বিপুল জনসংখ্যার ভাগ্য নির্ধারণের দায়িত্ব।

একবিংশ শতাব্দীর শুরু থেকে ভাগ্য বদলেছে লাখো ভারতীয়র। দরিদ্রতা ঘুচিয়ে সচ্ছলতার মুখ দেখেছেন অনেকে। কিন্তু এখনো দেশটিতে বহু সংস্কার বাকি। এসবের মধ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে বেকারত্ব। বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার অত্যন্ত বেশি।

এছাড়া, বিগত কয়েক বছর ধরে দেশটিতে শস্যমূল্য কম হওয়ায় কৃষকদের মধ্যেও দেখা গেছে লাখো কৃষকের মধ্যে। পাশাপাশি পারমাণবিক শক্তিধর দেশটির সঙ্গে অন্যান্য দেশের সম্পর্ক, বিশেষ করে পাকিস্তানের সম্পর্ক কি রূপ নেয় তা দেশটির আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য ব্যাপক গুরুত্ব বহন করে।

বিজ্ঞাপন

এগিয়ে আছেন কারা?

নির্বাচনে যে দল বা জোট সবচেয়ে বেশি আসনে জয়ী হবে সে দল বা জোটের নেতাই প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন। এক্ষেত্রে এইবারের নির্বাচনে মোদির সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী হচ্ছেন বিরোধীদল কংগ্রেসের প্রধান রাহুল গান্ধী।

ভারতের পার্লামেন্ট দুই ভাগে ভাগ করা- উচ্চকক্ষ রাজ্যসভা ও নিম্নকক্ষ লোকসভা। নিম্নকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে যেকোনো দল বা জোটকে অন্তত ২৭২টি আসনে জয়ী হতে হবে। কক্ষটিতে মোট আসনের সংখ্যা ৫৪৩টি। গত লোকসভা নির্বাচনে মোদির ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন জোট ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক এলায়েন্স (এনডিএ) ২৮২ আসনে জয়ী হয়েছিল। অন্যদিকে, কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড প্রোগ্রেসিভ এলায়েন্স (ইউপিএ) জিতেছিল মাত্র ৪৪ আসনে।

ভোট গ্রহণ

ব্যাপক সংখ্যার নির্বাচনি কর্মকর্তা ও নিরাপত্তাকর্মীদের সংশ্লিষ্টতায় ১১ এপ্রিল থেকে ১৯ মে পর্যন্ত মোট সাত ধাপে অনুষ্ঠিত হবে ভারতের লোকসভা নির্বাচন। ভিন্ন ভিন্ন প্রদেশে ভিন্ন ভিন্ন ধাপে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

এইবারের নির্বাচনে নতুন ভোটারের সংখ্যা ৮ কোটির বেশি। এদের মধ্যে দেড় কোটির বয়স ১৮ থেকে ১৯ বছরের মধ্যে।

বিজ্ঞাপন

ভোট গ্রহণের জন্য দেশজুড়ে স্থাপন করা হয়েছে ১০ লাখ ভোটকেন্দ্র। ভোট গণনা শেষ হবে ২৩ মে। ধারণা করা হচ্ছে ওইদিনই ফলাফল প্রকাশ পাবে।

কে জিতবে?

এই নির্বাচনটিকে অনেকে মোদির ওপর একটি গণভোট হিসেবে দেখছেন অনেকে। হিন্দু জাতীয়তাবাদী এই নেতা অনেকেরই পছন্দের শীর্ষে রয়েছেন। আবার অনেকে তার বিরুদ্ধে হিন্দু-মুসলিম বিভেদ সৃষ্টিতে প্রণোদনা দেওয়ার অভিযোগও এনেছেন।

কয়েক মাস আগেও নির্বাচনে মোদি ও বিজেপির নিরঙ্কুশ জনপ্রিয়তা ছিল। কিন্তু গত ডিসেম্বরে আঞ্চলিক নির্বাচনে একাধিক প্রধান রাজ্যে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোটের কাছে বিজেপি পরাজিত হওয়ার পর জাতীয় পর্যায়ের ভোট নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র প্রতিযোগিতার ধারণা।

এমনকি কে জিতবে তা নিয়ে বিভক্ত বিশ্লেষকরাও। তবে সম্প্রতি পাকিস্তানের সঙ্গে সৃষ্ট উত্তেজনা পরিস্থিতি বিজেপিকে প্রচারণা চালানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এনে দিয়েছে। এখন তারা প্রত্যাশা করতেই পারে যে, দেশপ্রেমের টানে এগিয়ে আসা ভোটারদের ভোটে কংগ্রেসসহ বিরোধীদলগুলোর আনা বাঁধা উতরে জয়ের দেখা পাবে। (বিবিসি অবলম্বনে)

সারাবাংলা/আরএ

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন