বিজ্ঞাপন

রোজার প্রভাবে বাজার চড়া

May 5, 2019 | 3:49 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: রোজা শুরু হতে বাকি আর মাত্র এক বা দুইদিন। প্রতিবছরের মতো এবারও বাজারে পুরোদমে পড়েছে রোজার প্রভাব। কমবেশি বেড়েছে সব পণ্যের দাম। রোজার সবচেয়ে প্রয়োজনীয় পণ্য পণ্য ছোলা ও চিনির সঙ্গে বেড়েছে মসুর ডালের দাম। বাড়তির দিকে রয়েছে তেলের দামও। তবে স্থির রয়েছে পেঁয়াজের দাম।

বিজ্ঞাপন

অন্যদিকে সবজির বাজারের মধ্যে বাড়তেই আছে বেগুনের দাম। বেগুনের কেজি এখন ৮০ টাকার ঘর ছুঁইছুঁই করছে। রোজা সামনে রেখে রাজধানীর সব বাজারেই ক্রেতাদের বাড়তি চাপ রয়েছে। রোজার আগেই মাসের বাজার সেরে নিতে তৎপর ক্রেতারা। ফলে দম ফেলার ফুসরত নেই বিক্রেতাদেরও।

আরও পড়ুন- রমজানে দ্রব্যমূল্য ১ টাকাও বাড়বে না: সাঈদ খোকন

রোববার (৫ মে) রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ কয়েকটি বাজার এসব দৃশ্য দেখা গেছে।

বিজ্ঞাপন

কারওয়ান বাজারের পাইকারি অংশে দেশি পেঁয়াজ ২৬ থেকে ২৮ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে। আর ভারতীয় পেঁয়াজের দাম ২০ থেকে ২২ টাকা কেজি। বাজারের প্রতিটি দোকানে পেঁয়াজের মূল্য তালিকাও টানানো হয়েছে। এক সপ্তাহ আগেও যে পেঁয়াজ ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে সেই দোকানেই এখন ঝুলছে ২৮ টাকার মূল্যতালিকা।

পেঁয়াজের পাইকারি বিক্রেতা খালেক সারাবাংলাকে বলেন, মাস খানেক আগে দেশি পেঁয়াজের দাম ২০ থেকে ২২ টাকা ছিল। এখন ২৮ টাকা। আরেক বিক্রেতা শহিদুল বলেন, পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমেছে। বাজারে মূল্য তালিকাও টানানো হয়েছে।

অন্যদিকে মহাখালীর বউবাজারে দেশি পেঁয়াজ ৩৫ ও ভারতীয় পেঁয়াজ ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

পেঁয়াজের দাম সপ্তাহান্তে কমলেও রসুনের দাম বেড়েছে। পাইকারি বাজারে এক সপ্তাহ আগে ৯৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও রোববার ১০৮ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে। আর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি রসুন ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি বাজারে আদা ৯০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আর খুচরা বাজারে দাম পড়ছে ১৪০ টাকা।

এদিকে, রোজার অন্যতম ভোগ্য পণ্য ছোলা ৮০ থেকে ৮৫  টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহ খানেক আগে একই মানের ছোলা ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অর্থাৎ সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিতে ছোলার দাম বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা।

বিজ্ঞাপন

কাওরান বাজারের কিচেন মার্কেটের মায়ের দোয়া স্টোরের বাবলু সারাবাংলাকে জানান, ছোলা ৭৫ থেকে ৮০ টাকা, মসুর ডাল ৫৫  থেকে ১০০ টাকা, মটর ৪০ টাকা, বেসন ৬০ থেকে ১০০ টাকা ও চিনি ৫৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। তিনি বলেন, খেজুর প্রকারভেদে ২২০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। লবঙ্গ এর দাম স্থির থাকলেও বেড়েছে এলাচের। কিছুদিন আগেও ভালো মানের এলাচ কেজিপ্রতি ২২০০ টাকা থাকলেও এখন দাম ২৮০০ টাকা কেজি। তবে তার দাবি বাজারে নতুন করে কোন পণ্যের দাম খুব একটা বাড়েনি। বরং রোজার দ্বিতীয় দিন থেকে পণ্যের দাম আরও কমবে বলে তার ধারণা।

আরেক বিক্রেতা চৌধুরী স্টোরের মালিক মো. মোশাররফ হোসেন বলেন, নতুন করে পণ্যের দাম বাড়েনি। যা বাড়ানোর তা ১৫ দিন আগেই বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সেসময় সব পণ্যের দামই কিছু না কিছু বেড়েছে।

মেসার্স এম আর ট্রেডার্সের প্রোপাইটার সেলিম আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, গত দুই তিনদিন ধরেই বাজার কমতির দিকে। চিনি, ছোলা ও তেলের দাম কিছুটা কমেছ। তবে মসুর ডালের দাম বেড়েছে। বাজারে সব পণ্যেরই পর্যাপ্ত মজুদ আছে। গত কয়েকদিন খুব বেশি চাহিদা ছিল, এখন সেই চাহিদা কমতে শুরু করেছে। দুই রোজার মধ্যেই দাম কমে যাবে।

অন্যদিকে চালের বাজার স্থির রয়েছে। নতুন চাল উঠতে শুরু করায় কোন কোন চালের দাম কমতেও শুরু করেছে। তবে কিছুটা বেড়েছে পোলাওয়ের চালের দাম। এক মাসে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়ে কেজিতে পোলাওয়ের চাল বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১০০ টাকা কেজিতে।

মগবাজার থেকে বাজার করতে এসেছেন আলাউদ্দিন। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, সব পণ্যের দামই বেড়েছে। পোলাওয়ের চাল ৯৫ টাকা ছিল, এখন দাম চাচ্ছে ১১০ টাকা।

ফার্মগেট থেকে আসা ফাতেমা খাতুন বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরেই সব পণ্যের দাম বাড়ছে। আজও বাড়তির দিকে। দাম বেশি থাকলেও তো কিনতে হবে। আর রোজার বাজার বলে কথা।’

সবজির বাজার স্থির থাকলেও বাড়তির দিকে রয়েছে বেগুনের দাম। এক সপ্তাহ আগে বেগুন ৫০ টাকায় বিক্রি হলেও রোববার বিভিন্ন বাজারে তা ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। কারওয়ান বাজারে পেঁপে ৬০ টাকা, শশা ৪০ টাকা, টমেটো ৩৫ টাকা, বেগুন ৮০ টাকা, করলা ৬০ টাকা ও আম ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা যায়।

মহাখালীর বউবাজারে পেঁপে ৫০ টাকা, শশা ৪০ টাকা, ঢেঁড়শ ৪০ টাকা, কাকরোল ৬০ টালা, পটল ৫০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা ও কাঁচামরিচ ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

এদিকে, গরু ও খাসির মাংসের দাম স্থির থাকলেও কিছুটা বেড়েছে ব্রয়লার ও পাকিস্তানি কক হিসেবে পরিচিত মুরগির দাম। তবে দাম কমেছে দেশি মুরগির। কারওয়ানবাজারে গরুর মাংস ৫৫০ টাকা ও খাশি ৭৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। সব দোকানেই ঝুলছে মূল্য তালিকা। আর মুরগি ব্রয়লার ১৬০ টাকা, পাকিস্তানি ৩০০ ও দেশি মুরগি ৫৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। সততা মুরগির আড়তের বিক্রেতা সুমন বলেন, ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে। পাকিস্তানি মুরগির দামও কেজিতে বেড়েছে ৫০ টাকা। তবে দেশি মুরগির দাম কেজিতে ৫০ টাকা কমে এখন ৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সারাবাংলা/ইএইচটি/এসএমএন

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন