বিজ্ঞাপন

‘লিগ্যাল এইডের সহায়তা কোনো দান নয়, অধিকার’

May 5, 2019 | 9:25 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে সরকারি ব্যবস্থাপনায় সহায়তা পাওয়া কোনো দান বা করুণা নয়। এটা দরিদ্র ও অসহায় মানুষের অধিকার। রাষ্ট্রের এক অপরিহার্য দায়িত্ব এটি। রোববার (৫ মে) বিকেলে সুপ্রিম কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাকক্ষে ‘উচ্চ আদালতে সরকারি আইনি সেবা: চলমান প্রক্রিয়া ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

লিখিত বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি বলেন, “আর্থিকভাবে অসচ্ছল, সহায়-সম্বলহীন এবং অসমর্থ বিচারপ্রার্থী জনগণকে আইনগত সহায়তা দিতে ‘আইনগত সহায়তা প্রদান আইন-২০০০’ করা হয়। এটি সত্যিই একটি নন্দিত আইন। বাঙালি জাতির স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপ্ন দেখেছিলেন একটি স্বাধীন বিচার বিভাগের। তাই ২৮ এপ্রিলকে লিগ্যাল এইড দিবস ঘোষণা করায় সরকারকে সাধুবাদ জানাই।“

ন্যায়বিচার প্রাপ্তি এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকার একটি সার্বজনীন মৌলিক মানবাধিকার উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, মানবাধিকার সংরক্ষণ এবং দরিদ্রবান্ধব ও জনকল্যাণকর বিচার ব্যবস্থার অন্যতম শক্তি হলো লিগ্যাল এইড। আইনের দৃষ্টিতে সমতার যে বাণী আমরা বারবার উচ্চারণ করি, আইনগত সহায়তা ছাড়া তা কখনোই সম্ভব নয়।’

আইনগত সহায়তার পরিসংখ্যান উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘২০০৯ সাল থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত সারাদেশে সর্বমোট ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৭৯০ জনকে বিভিন্নভাবে আইনগত সহায়তা দেওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটি ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত মার্চ পর্যন্ত ১৩ হাজার ৮৩১ জনকে সহায়তা হয়েছে। যা প্রশংসনীয়।’

বিজ্ঞাপন

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘লিগ্যাল এইড বিষয়ক আইন-কানুনকে প্রতিটি ল স্কুলের সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। সরকারি খরচে পরিচালিত মামলাগুলো দ্রুততার সঙ্গে নিষ্পত্তির ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক হতে হবে। সমাজের সবচেয়ে নির্যাতিত-নিপীড়িত ব্যক্তি বিশেষভাবে নারী ও শিশুরা লিগ্যাল এইড থেকে যেন বঞ্চিত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘নিষ্পতিযোগ্য মামলাগুলো আদালতে যাওয়ার আগেই ইউনিয়ন লিগ্যাল এইড অফিস ও জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে নিষ্পতি করা প্রয়োজন।’ এছাড়া মাদকাসক্তদের কারাগারে না পাঠিয়ে সমাজের মূলস্রোতে রেখে কিভাবে মাদক নিয়ন্ত্রণ করা যায় তা নিয়েও ভাববার সময় এসেছে বলেও জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ‘পত্রিকার পাতা খুললেই নারী ও শিশু নির্যাতনের ভয়াবহ চিত্র দেখা যায়। আগের চেয়ে এটি অনেকগুণ বেড়ে গেছে। শুধু ধর্ষণই নয় বরং নির্মমভাবে হত্যাও করা হচ্ছে। আসামিদের অনেকেই ক্ষমতাবান ও প্রভাবশালী হয়ে থাকে। ফলে বিচার প্রার্থীরা অনেক সময় সঠিক বিচার পাচ্ছে না। বিচার প্রার্থীরা প্রয়োজনে উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হতে পারেন।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘স্থগিতাদেশের কারণে মামলার বিচার কাজ থমকে আছে এমন অভিযোগ নিয়ে কোনো সরকারি কৌশলি এখন পর্যন্ত আমার দফতরে আসেনি। পিপিদের আরও বেশি সক্রিয় হতে হবে।’ এ ব্যাপারে আইনমন্ত্রীর ‍দৃষ্টিও আকর্ষণ করেন অ্যাটর্নি জেনারেল।

সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির সভাপতির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম আমিন উদ্দিন, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনামসহ বিচারপতি ও আইনজীবীরা।

সারাবাংলা/ইউজে/এমও

বিজ্ঞাপন

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন