বিজ্ঞাপন

রাজস্ব কর্মকর্তা ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মানিলন্ডারিং মামলা

May 20, 2019 | 3:05 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন ও দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) সম্পদের মূল তথ্য গোপনের অভিযোগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এক কর্মকর্তা ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করেছে দুদক।

বিজ্ঞাপন

অভিযুক্তরা হলেন এনবিআরের শুল্ক রেয়াত ও প্রত্যার্পণ পরিদফতরের রাজস্ব কর্মকর্তা (সাময়িক বরখাস্ত) মো. শহীদ খান ও তার স্ত্রী মমতাজ বেগম।

সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে রাজধানীর রমনা মডেল থানায় মামলা করেন দুদকের সহকারি পরিচালক মো শফি উল্লাহ। মামলা নম্বর ৫২।

দুদকের একটি সূত্র জানিয়েছে, গত বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি দুদকে মমতাজ বেগমের সম্পদ বিবরণী দাখিল করা হয়। সেখানে ১৬ লাখ ৮২ হাজার ২০৯ টাকার সম্পদের নির্মাণ ব্যয় ও স্থাবর সম্পদের মূল তথ্য গোপন করে কমিশনে মিথ্যা তথ্য দাখিল করেন শহীদ-মমতাজ দম্পতি। এছাড়া বৈধ উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ২৩ লাখ ৩৯ হাজার ৯৮ টাকার সম্পদের মালিকানা অসাধু উপায়ে অর্জন করে মানি লন্ডারিং আইনে অপরাধ করেছেন শহীদ খান। যার কারণে তাদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪ (২) ধারা এবং দুদক আইন ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭ (১) ধারা এবং দন্ডবিধির ১০৯ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সূত্রটি আরও জানায়, দুদকের সহকারি পরিচালক শফি উল্লাহকে কমিশন রাজস্ব কর্মকর্তা শহীদ খান ও তার স্ত্রীর সম্পদ বিবরণী অনুসন্ধান করার জন্য ২০১৮ সালের ৬ মার্চ নিয়োগ দেওয়া হয়। অনুসন্ধানে দেখা যায়, মমতাজ বেগমের নিজের নামে ৭২ লাখ ৬৭ হাজার ৪১৮ টাকার স্থাবর সম্পদ ও ১ লাখ ৯০ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ মোট ৭৪ লাখ ৫৭ হাজার ৪১৮ টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন। তবে তিনি দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ৫৫ লাখ ৮৫ হাজার ২০৯ টাকার স্থাবর সম্পদ ও ১ লাখ ৯০ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ মোট ৫৭ লাখ ৭৫ হাজার ২০৯ টাকার সম্পদ প্রদর্শন করেছেন। সুতরাং তিনি তার দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ১৬ লাখ ৮২ হাজার ২০৯ টাকার স্থাবর সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন।

দুদকের অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, রাজস্ব কর্মকর্তা শহীদ খানের স্ত্রী আয়কর নথিতে যে সমস্ত তথ্য প্রদর্শন করেছেন তার অধিকাংশরই কোনো গ্রহনযোগ্য উৎস তিনি দেখাতে পারেননি। এছাড়া অনুসন্ধানকালে দেখা যায়, মমতাজ বেগম একজন গৃহিনী। তিনি ঢাকায় বসবাস করেন। তার কোনো ট্রেড লাইসেন্স নেই। তিনি ব্যবসা করতেন বলে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এছাড়া মমতাজ বেগম দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতেও ব্যবসার আয় প্রদর্শন করেননি।

এছাড়া মমতাজ বেগম ২০০৮ সাল থেকে আয়কর দিয়ে আসছেন। মমতাজ বেগম ৫৭ লাখ ১২ হাজার ৪শ টাকার আয়ের উৎস দেখিয়েছেন। আয়কর নথি অনুযায়ী তার মোট ব্যয় ৫ লাখ ৯৪ হাজার ৭২ টাকা। ফলে নিট আয় বা সঞ্চয় ৫১ লাখ ১৮ হাজার ৩২৮ টাকা। অন্যদিকে মমতাজ বেগম তার নিজ নামে ৭২ লাখ ৬৭ হাজার ৪১৮ টাকার স্থাবর সম্পত্তি ও ১ লাখ ৯০ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পত্তি অর্জন করেছেন বলে সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে তথ্য পাওয়া গেছে। অথচ তার ২৩ লাখ ৩৯ হাজার ৯৮ টাকার সম্পদের আয়ের উৎস অনুসন্ধানকালে পাওয়া যায়নি। ফলে উক্ত অর্থ নিজে অসাধু উপায়ে অর্জন করে ভোগ দখলে রেখে অপরাধ করেছেন।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে রাজস্ব কর্মকর্তা শহীদ খান ও তার স্ত্রী মমতাজ বেগমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা মামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

দুদকের সহকারি পরিচালক শফি উল্লাহ সারাবাংলাকে বলেন, ‘কমিশন তাদের সম্পদ বিবরণী অনুসন্ধানের জন্য আমাকে নিয়োগ দেয়। আমি অনুসন্ধান করে বিভিন্ন অসঙ্গতি পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করার জন্য কমিশনে আবেদন করি। এরপর কমিশন থেকে অনুমোদন পাওয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল রমনা থানায় মামলা করা হয়েছে।’

এই দম্পতির বিরুদ্ধে বিশদ অনুসন্ধান চলমান রয়েছে বলেও জানান শফি উল্লাহ।

সারাবাংলা/এসজে/এসএমএন

বিজ্ঞাপন

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন