বিজ্ঞাপন

হাতি সংরক্ষণে ১০ বছরের পরিকল্পনা

December 6, 2017 | 2:43 am

এম এ কে জিলানী, স্পেশাল করসপনডেন্ট

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশে যে কয়টি বন্য প্রাণীগোষ্ঠী বিপন্ন, হাতি তার মধ্যে অন্যতম। বিপন্ন এই হাতিদের বাঁচাতে ১০ বছর মেয়াদি একটি মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়। পরিকল্পনায় ল্যান্ডস্কেপ বেইজড হাতি সংরক্ষণ, মানুষ ও হাতির মুখোমুখি সংঘর্ষ এড়ানো, হাতির এলাকা সংরক্ষণ, খাবার নিশ্চিত করাসহ একাধিক বিষয়ে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।

পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব ড. মো. মহিউদ্দীন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের দেশে হাতি এখন বিপন্ন। কিন্তু পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে হাতিকূলকে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। এ জন্য ২০১৭ থেকে ২০২৭ সাল পর্যন্ত ১০ বছর মেয়াদি একটি একশন প্ল্যান বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সামনের বৃহস্পতিবার এই বিষয়ে একটি পর্যালোচনা বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।’

বন সংরক্ষক মো. জাহিদুল কবীর সারাবাংলাকে বলেন, ‘বন উজাড় হয়ে যাওয়াতে হাতিদের অবস্থা বিপন্ন হয়ে পড়েছে। মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রতিনিয়তই মানুষ এবং হাতি উভয়েই মারা যাচ্ছেন। খাবার সংকটে হাতিকূল বন ছেড়ে লোকালয়ে চলে আসায় বাড়ি-ঘরসহ ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। অবৈধভাবে বন উজাড় করে বসতি গড়ায় হাতিদের আবাসস্থল নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে। তাই হাতিদের বাঁচাতে ১০ বছর মেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

১০ বছর মেয়াদি পরিকল্পনা সম্পর্কে জাহিদুল কবীর বলেন, ‘বাংলাদেশে হাতিদের যে অবস্থা তাতে আগামী ২৫ বছর পর এ দেশে হাতি টিকে থাকতে পারবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তাই হাতি টিকিয়ে রাখতে পরিকল্পনাতে ল্যান্ডস্কেপ বেইজড হাতি সংরক্ষণের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। হাতির জন্য কমিউনিটি বেইজড রেসপনসড টিম গঠন, সচেতনতামূলক কার্যক্রমের ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘পৃথিবীর অন্য দেশে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ফান্ড রয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে এখনো এমন তহবিল গঠন করা যায়নি। পরিকল্পনাতে এই তহবিল গঠনের বিষয়টিও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বিশ^ব্যাংকসহ অনেক দাতারা এই তহবিল গঠনে অর্থায়ন করতে উৎসাহ দেখিয়েছে।’

হাতিদের টিকিয়ে রাখতে সরকার যে দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা করছে সেই পরিকল্পনাটি বন্যপ্রাণী নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন) প্রণয়ন করে দিয়েছে। মূলত বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের বিষয়টি আইইউসিএন-এর উদ্যোগেই হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

আইইউসিএনের বাংলাদেশ প্রতিনিধি ইশতিয়াক উদ্দীন আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘হাতিদের বাঁচিয়ে রাখতে ১০ বছরের জন্য একটি একশন প্ল্যান মন্ত্রণালয়কে তৈরি করে দিয়েছি। বেশ কয়েকবার তা সংশোধনও করে দিয়েছি। তবে এখনো চূড়ান্ত ফিডব্যাক পাইনি।’

২০১৬ সালে আইইউসিএন হাতির ওপর একটি শুমারি করে। সর্বশেষ শুমারি অনুযায়ী, বাংলাদেশে মোট ২৬৮ টি আবাসিক বন্যহাতি রয়েছে।

এ ছাড়া ৯৩টি হাতি প্রতিবেশী দেশ থেকে বিভিন্ন মৌসুমে দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। আবাসিক হাতগুলোর মধ্যে ৯৬টি বন্দী অবস্থায় রয়েছে। যার মধ্যে ব্যক্তি মালিকানায় ৮২টি, সাফারি পার্কে ১১টি এবং মিরপুর চিড়িয়াখানায় ৩টি রয়েছে।

সারাবাংলা/এমএকে/আইজেকে/ডিসেম্বর ০৬, ২০১৭

বিজ্ঞাপন

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন