বিজ্ঞাপন

বাড়ি ফেরার ছন্দে মুখরিত সদরঘাট

May 31, 2019 | 5:54 pm

আরিফুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: রাজধানী ঢাকা থেকে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের যে সব মানুষ নাড়ির টানে বাড়ি ফিরতে চান তাদের অনেকেরই ভরসা সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল। কেননা এই টার্মিনাল থেকে লঞ্চে করে সহজে পৌঁছানো যায় গন্তব্যে।

বিজ্ঞাপন

বাস-ট্রেনের মতো লঞ্চেও শুরু হয়েছে এবারের ঈদযাত্রা। শুক্রবার থেকে ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছে মানুষজন। নাড়ির টানে বাড়ি ফেরাকে ঘিরে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল যাত্রীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে।

শুক্রবার (৩১ মে) সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় রাজধানীর ব্যস্ততম সময়গুলোতে ভ্রুকুটি করে অনেকেই সকাল সকাল বাড়ির পথ ধরেছেন। তারা ভিড় জমিয়েছেন লঞ্চ টার্মিনালে। কেউবা আগে থেকেই টিকিট সংগ্রহে রেখেছেন আবার কেউবা টিকিট কাটছেন কাউন্টারে এসে।

বিজ্ঞাপন

সরেজমিনে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে দেখা যায়, লঞ্চের কর্মীরা যাত্রীদের ডাকছেন। কেউবা দেখিয়ে দিচ্ছেন নির্ধারিত আসন। টিকিট সংগ্রহের বেলায়ও যাত্রীকে সহযোগিতা করছেন লঞ্চ কর্মীদের কেউ কেউ।

এদিকে দুয়েকটি লঞ্চ ঘুরে দেখা গেল যে সব যাত্রী লঞ্চের সিট পাননি তারা বিছানা চাদর, পাটি বা গামছা বিছিয়ে আসন পেতেছেন। অনেকে ছাদেও আসন পেতেছেন। মাথার ওপর রোদ। কিন্তু তাতে কী? বাড়ি তো যেতে হবে।

বিজ্ঞাপন

লঞ্চঘাটে কথা হয় সুজন মিয়া নামে এক যাত্রীর সঙ্গে। গ্রামের বাড়ি তার বরিশাল। আজ রাত ৮টার দিকে বরিশালের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে তার লঞ্চটি। কিন্তু সুজন মিয়া আগেভাগেই দুপুরে এসে হাজির যেন লঞ্চে বসার ভালো জায়গা পাওয়া যায়।

অপর যাত্রী রানা আহমেদ। তিনি যাবেন বরগুনায়। রানাও দুপুরের পর থেকে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে ঘোরাঘুরি করছেন।

রানা আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘সদরঘাটের লঞ্চ টার্মিনালে আসার জন্য অনেকক্ষণ রাস্তায় বসে থাকতে হয়েছে। কিন্তু এখানে আসার পর তেমন কোনো ঝামেলা পোহাতে হয়নি। টিকিট কাটছি, বিকেলের দিকে লঞ্চ ছেড়ে যাবে।’

বিজ্ঞাপন

এমভি প্রিন্স হাসান হোসেন-১ এর যাত্রী সুমি আক্তার বলেন, ‘আগে থেকে কেবিনের টিকিট বুকিং দিয়ে রেখেছিলাম। টিকিট হাতে পেয়েছি। আশা করি বিকেলের লঞ্চটিতে ভালোভাবে বাড়ি যেতে পারব।’

যাত্রীদের ভিড়ে সদরঘাটের লঞ্চ টার্মিনালে এখন ব্যস্ততম সময় পার করতে হচ্ছে লঞ্চ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। এমভি জাহিদ-৮ এর ইনচার্জ মো. ইমরান বলেন, ‘সকাল সাড়ে ১০টায় বিভিন্ন রুটের লঞ্চ ছেড়ে গেছে। সকাল থেকেই টার্মিনালে মানুষের ভিড় রয়েছে।’ তবে ঈদের ২/১ দিন আগে আরও চাপ বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।

ঈদে ঘরমুখো মানুষের সুবিধার্থে ২০ মে লঞ্চের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু হয়। এমভি জাহিদ-৮ লঞ্চের সব টিকিট এরইমধ্যে বিক্রি হয়ে গেছে জানিয়ে লঞ্চটির ইনচার্জ বলেন, ‘টিকিট আগে থেকে শেষ হয়ে গেছে। কেউ চাইলে এখন আর টিকিট দেওয়া যাচ্ছে না।’

শাহরুখ-২ লঞ্চের এক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানান, যারা আগাম টিকিট নিয়েছেন তারা নির্ধারিত আসতে যেতে পারবেন। আর যারা এখনও টিকিট নিতে পারেননি তারা ফ্লোরে বসে যেতে পারেন।

ওই কর্মকর্তা জানান, বৃহস্পতিবারেও ঘরমুখো যাত্রীদের চাপ ছিল। তবে শুক্রবার সকাল থেকে যাত্রীদের চাপ আরও বেড়েছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ সূত্র জানিয়েছে, নৌপথের ৪৩টি রুটে প্রতিদিন সদরঘাটে লঞ্চ চলবে ২১৫টি। ঈদে এবার ঝড়-বাদল থাকতে পারে। তিন নম্বর সতর্ক সংকেত এলেই নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হবে।

ঢাকা নদী বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, এই ঈদে ঢাকা-বরিশাল রুটে লঞ্চ চলবে ২৩টি। ঢাকা-চাঁদপুর রুটে ২৫টি, ঢাকা-পটুয়াখালী রুটে ১৩টি, ঢাকা-হুলারহাট ভাণ্ডারিয়া রুটে চলবে ১০টি, ঢাকা-ভোলা রুলে চলবে আটটি লঞ্চ।

বিআইডব্লিউটিএর নৌযান পরিদর্শক কর্মকর্তা দীনেশ কুমার সাহা সারাবাংলাকে বলেন, ‘লঞ্চঘাটে প্রতিটি নৌযান সময়মতো ছাড়া হচ্ছে। তবে যাত্রী যদি কম থাকলে অনেক সময় একটু-আধটু দেরি হচ্ছে।’

ঘরমুখো যাত্রীদের নিরাপত্তা বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এখানে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যে কোনো ধরনের অপ্রীতিরকর ঘটনা রুখতে পুলিশসহ অন্যান্য বাহিনীর কর্মীরা নিরলস কাজ করছেন। এছাড়া ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এখানেও নিয়োজিত রয়েছেন।’

সারাবাংলা/এআই/একে

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন