বিজ্ঞাপন

গোলাভরা ধান থাকলেও ঈদ আনন্দ নেই কৃষকের

June 4, 2019 | 8:19 am

দিনাজপুর: শস্যভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত উত্তরের জনপদ দিনাজপুর। এই জেলার বেশির ভাগ পরিবারই কৃষির ওপর নির্ভরশীল। এবার দিনাজপুরে ধানের বাম্পার ফলন হলেও ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় রয়েছেন কৃষকরা। ফলে উৎপাদিত ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। কৃষকদের বাড়িতে গোলাভরা ধান থাকলেও ঈদ আনন্দ অনেকটাই ম্লান এখানে।

বিজ্ঞাপন

সরকারিভাবে সাধারণ কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি ধান ও চাল কেনা শুরু হয়েছে কিছুদিন আগে। কিন্তু সরকারের কাছে সরাসরি ধান বিক্রির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ কৃষক। কারণ প্রভাবশালীরা সাধারণ কৃষকদের কাছ থেকে কম দামে ধান কিনে সেগুলো সরকারের কাছে বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে। এতে সাধারণ কৃষকরা আগামীতে ধান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন বলে অভিমত বিশেষজ্ঞদের।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসূমে সরকারিভাবে প্রতিকেজি চাল ৩৬ টাকা এবং প্রতিকেজি ধান ২৬ টাকা দরে কিনছে সরকার। এবার দিনাজপুরের তেরটি উপজেলা থেকে ৫ হাজার ৪৮ মেট্রিকটন ধান এবং ৮৫ হাজার ৪৭ মেট্রিকটন চাল কিনবে সরকার। এই ক্রয় অভিযান চলবে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত।

এদিকে জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, দিনাজপুরে এবার প্রায় ২ লাখ ৭৪ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান উৎপন্ন হয়েছে। কৃষক ভালো ফলনও পেয়েছে।

বিজ্ঞাপন

তবে কষ্টার্জিত ধান ঘরে তুলেও কৃষকের মুখে হাসি নেই। কারণ গতবারের চেয়ে এবার দুই মণ ধানের বস্তাপ্রতি দাম ৫শ’ থেকে ৬শ’ টাকা কম পাচ্ছে কৃষক।

হাকিমপুর উপজেলার ইটাই গ্রামের আব্দুল আজিজ সারাবাংলাকে বলেন, ‘এলা ধানের নিউজ করে আর কি হবে। হামার যা হবার তা তো হছেই। ধানের দাম যা পাছি তা দিয়ে চাষ খরচটা উঠেছে। কিন্তু সামনে যে ঈদ; ছলগুলাক এনা নতুন কাপড় কিনে দিব সেই টাকা আর নাই। খুব কষ্ট হছে ‘বা’। সবার ছলেরা ঈদে নতুন কাপড় পরবি। মোর ছলেরা কি পড়বি এলা নিয়ে চিন্তায় আছো।’

এদিকে হিলির ডলি বস্ত্রলায়ের মালিক মতিউর রহমান সারাবাংলাকে জানান, ঈদ তো সবার জন্য। মার্কেটের দোকানগুলোতে সুন্দর সুন্দর পোশাক নিয়ে দোকানিরা বসে আছেন। কিন্তু এবার ঈদ মার্কেটে ক্রেতাদের তেমন ভিড় নেই। বিশেষ করে কৃষক পরিবারের লোকজনদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। এ জন্য বেচাকেনা তেমন ভালো হচ্ছে না।

বিজ্ঞাপন

দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মো. তৌহিদুল ইকবাল বলেন, ‘উত্তরের শস্যভাণ্ডার দিনাজপুরে কৃষকের ঈদ আনন্দ ম্লান হয়ে গেছে। ইরি-বোরোর ফলন ভালো হলেও ন্যায্য দাম না পাওয়ায় তারা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন। সরকারিভাবে ধান ক্রয় অভিযান শুরু হলেও এই সুবিধা থেকে সাধারণ কৃষকদের অনেকেই বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ রকম অবস্থা চলতে থাকলে আগামীতে কৃষকরা ধান চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে।’

সারাবাংলা/প্রমা/এটি

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন