বিজ্ঞাপন

‘এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের মান যাচাইয়ের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে’

June 30, 2019 | 2:37 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সারাদেশে এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর পুনরায় মান যাচাই করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

বিজ্ঞাপন

রোববার (৩০ জুন) সকালে একাদশ জাতীয় সংসদের ৩য় অধিবেশনের বাজেট সেশনে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে বিএনপি’র সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানার ছাঁটাই প্রস্তাবের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

ক্ষমতাসীন সরকারের টানা মেয়াদে শিক্ষার মান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিএনপির সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য বেগম রুমিন ফারহানা। তিনি বলেন, বাংলাদেশে জিডিপি বরাদ্দের ৬ শতাংশ কিংবা মোট বাজেটের অন্তত ২০ শতাংশ শিক্ষায় বরাদ্দ থাকার কথা। কিন্তু আমরা দেখছি শিক্ষার সেই বরাদ্দ ক্রমেই কমে যাচ্ছে। দুর্বল শিক্ষার মান বাংলাদেশে আরেকটি বড় সমস্যা। বিভিন্ন সেক্টরে পাশ্ববর্তী দেশের নাগরিকরা চাকরি করে প্রতিবছর প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার নিয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, জাপানের উদাহরণ দিয়ে বিদেশ থেকে দক্ষ শিক্ষক আনবার কথা এই বাজেটে বলা হয়েছে। একটা সরকার এক দশক ক্ষমতায় থেকেও মানসম্পন্ন শিক্ষক তৈরি করতে পারে না, বিদেশ থেকে শিক্ষক আনার কথা বলতে হয়? তখন সে সরকারের আর ক্ষমতায় থাকার কোনো নৈতিক অধিকার থাকে না। নকল, প্রশ্ন ফাঁসসহ বেশি নম্বর দিয়ে পাস করিয়ে দেওয়ার প্রবণতা জিপিএ ফাইভের পরিমাণ বাড়িয়েছে সত্যি কিন্তু সেটি শিক্ষার সার্বিক মানের মধ্যে কোনো প্রভাব ফেলেনি। ‘আই অ্যাম জি.পি.এ ফাইভ’ এটাই এখন বর্তমানে আমাদের শিক্ষা স্ট্যান্ডার্ড।

বিজ্ঞাপন

বিএনপিসহ জাতীয় পার্টির সরকারের আমলের প্রতি ইঙ্গিত করে ছাঁটাই প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, আমরা যদি বিগত বছরগুলোর কথা ভাবি, আমাদের এই এতোগুলো দশক যারা ছাঁটাই প্রস্তাব উপস্থাপন করেছেন, তাদের দলগুলো দীর্ঘদিন এই দেশে ক্ষমতায় ছিল। তাদের ক্ষমতার অপব্যবহারও আমরা দেখেছি। তখন শিক্ষাখাতে বরাদ্দ, শিক্ষার মান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মান সেগুলো সম্পর্কেও আমরা সবাই অবগত আছি।

বিএনপি সরকারের আমলে এমপিওভুক্তির অনিয়ম তুলে ধরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘এমপিওভুক্তির তালিকায় দেখছি, নানা বৈষম্য তৈরি করা হয়েছে। কয়েকটি এলাকায় দেখছি, যে পরিমাণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকার প্রাপ্যতা রয়েছে, রয়েছে তার চাইতেও বেশি। বিএনপি-জামায়াত সরকারের সময় প্রভাবশালী মন্ত্রীরা নিজেদের এলাকায় প্রয়োজনের চাইতে অনেক বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করেছেন। যেগুলো নিয়ম বিরুদ্ধভাবেই মান যাচাই না করেই এমপিওভুক্ত করা হয়েছে এবং কোথাও কোথাও ছাত্র-শিক্ষক কিছুই নেই। কাজেই আমরা এখন সারাদেশেই অতীতে যত এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠান হয়েছে, সকল এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানেরও আবার পুনরায় মান-যাচাই করে দেখবার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি।’

‘আগে আমাদের কোয়ানটিটির দিকে মন দিতে হয়েছে। কারণ শিক্ষা সকলের অধিকার। সকলকে শিক্ষার আওতায় মধ্যে নিয়ে আসার প্রচেষ্টায় নিয়োজিত ছিলাম। এখন আমাদের মান বাড়ানোর ব্যাপারে কাজ করতে হচ্ছে। আর যে মাননীয় সদস্য এই সরকারের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, তাকে আমি তাদের সময়ের সকল অনৈতিক আচার-আচরণের কথাটি একটু মনে রাখবার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করব। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে রণক্ষেত্র বানানো, ছাত্রদের মাঝে মাদক ছড়িয়ে দেওয়ার মতো অনৈতিক কাজগুলো যারা করেছে, তাদের কাছ থেকে নৈতিকতার ছবক নেওয়াটা একটু হাস্যকরই মনে হয়।’ যোগ করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

বিজ্ঞাপন

এ সময় জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক বলেন, শিক্ষাখাতে বরাদ্দটা খুব বেশী গুরুত্বপূর্ণ বলে আমার মনে হয় না। আমার মনে হয়, শিক্ষা পদ্ধতিটাকে পরিবর্তন করা বোধহয় সবচেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আমাদের যে শিক্ষা ব্যবস্থা, এটা কর্ম উপযোগী নয়। এটাতে কর্মদক্ষ কর্মী বা দক্ষ কর্মী সৃষ্টি করবে, এরকম পদ্ধতি না। আমার মনে হয়, আমাদের এখন সময় এসেছে পুরো শিক্ষা পদ্ধতিটাকে কর্ম উপযোগী করা।

ছাঁটাই প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নেন বেগম রওশন আরা মান্নান, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, ফখরুল ইমাম, হারুনুর রশিদ, পীর ফজলুর রহমান, রুস্তম আলী ফরাজী, কাজী ফিরোজ রশিদ, মোকাব্বির খান, রুমিন ফারহানা, মুজিবুল হক। ছাঁটাই প্রস্তাব শেষে দাবি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগখাতে ২৯ হাজার ৬শত ২৪ কোটি ৯০লাখ টাকা মঞ্জুর করা হয়।

সারাবাংলা/এনআর/জেএএম

বিজ্ঞাপন

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন