বিজ্ঞাপন

সেন্ট লুসিয়া বা ঢাকা কি ফিরবে চট্টগ্রামে?

February 3, 2018 | 7:34 pm

চট্টগ্রাম থেকে প্রতিনিধি

বিজ্ঞাপন

দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার পর আপনি কী করবেন? প্রেরণা বলেন বা টনিক বলেন, সেটা খুঁজে নেওয়ার জন্য একেকজনের নিজস্ব পদ্ধতি থাকে। তবে বাংলাদেশ যদি দল হিসেবে চট্টগ্রামের টেস্টের শেষ দিনের আগে প্রেরণা খুঁজতে চায়, তাহলে অতীত খুঁড়ে কোনো সুখস্মৃতি ফিরিয়ে আনা সম্ভব?

শেষ দিনের আগে এখনো শ্রীলঙ্কাকে আরেকবার ব্যাট করাতেই ১১৯ রান করতে হবে বাংলাদেশকে, হাতে আছে আরও ৭ উইকেট। বিশেষ করে মুশফিকের শেষ বিকেলের আউটেই যেন আশার খুলে দরোজা বন্ধ হয়ে গেছে অনেকখানি। টেস্ট ক্রিকেটে এর চেয়েও অনেক সঙ্গীন পরিস্থিতি থেকে ম্যাচ বাঁচানোর রেকর্ড আছে। কিন্তু বাংলাদেশ কি ঠিক এই পরিস্থিতি থেকে ম্যাচ বাঁচাতে পেরেছে?

টেস্ট ক্রিকেটে প্রায় ‘প্রাপ্তবয়স্ক’ হয়ে যাওয়ার পরও বাংলাদেশের জয় যেমন হাতেগুণে হিসেব করা যায়, ড্রও তেমনি অনেক কম। এখন পর্যন্ত যে ১৫টি ম্যাচ ড্র করেছে, তার অনেকগুলোই আবার বৃষ্টির দাক্ষিণ্যে। পুরো ৫ দিন খেলে এখন পর্যন্ত মাত্র ছয়টা টেস্টে ড্র করতে পেরেছে বাংলাদেশ। তার মধ্যে ঠিক ম্যাচ বাঁচানো টেস্টও কড়ে আঙুলেই হিসেব করে ফেলা যাবে। ১৪ বছর আগের ওয়েস্ট ইন্ডিজ বা ১৩ বছর আগের ঢাকা টেস্টের সেই স্মৃতিতে তো এখন মরচেই পড়ে যাওয়ার কথা। তবে ঠিক কোনোটিই অন্তত আজকের পরিস্থিতির মতো নয়।

বিজ্ঞাপন

১৩ বছর আগে মিরপুরে সেই টেস্টটা বাংলাদেশকে যে কোনোভাবে ড্র করতেই হতো। চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে তার আগের টেস্টেই সাদা পোশাকে প্রথম জয় এসেছিল বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ড্র করলেই প্রথমবারের মতো সিরিজ জয়ের হাতছানি। জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংসে ২৯৮ রানে অলআউট হওয়ার পর বাংলাদেশ করেছিল ২১১ রান। টাটেন্ডা টাইবুর দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরিতে জিম্বাবুয়ে বাংলাদেশকে লক্ষ্য দেয় ৩৭৪ রান। তখনো ম্যাচ দেড় দিনের মতো বাকি।

বাংলাদেশ অবশ্য ম্যাচটা জেতার বদলে উইকেট আগলে রাখার দিকেই মনযোগ দিয়েছে বেশি। দুই ওপেনার জাভেদ ওমর ও নাফীস ইকবাল ৮২ ওভার খেলেই অনেকটা নিশ্চিত করে ফেলে। তবে ১২০ ওভারের মধ্যে দ্রুত ৫ উইকেট হারিয়ে একটু চাপেই পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা বাঁচাতে পেরেছে, ৩৫৫ বলে ১২১ রান করে নাফীস পথ দেখিয়েছিলেন সামনে থেকে।

সেন্ট লুসিয়ায় তার আগের বছরের পরিস্থিতিটা ছিল অন্যরকম। তার আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ কোনো টেস্টে পাঁচদিন খেলে ড্র করেনি। সেন্ট লুসিয়ায় অবশ্য বাংলাদেশই এগিয়ে ছিল ম্যাচের অনেকটা পর্যন্ত। প্রথম ইনিংসে ৪১৬ রান করার পর ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বেঁধে ফেলেছিল ৩৫৮ রানে। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে ১২৩ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশই তখন উলটো কাঁপছিল। সেখান থেকে খালেদ মাসুদের ১০৩ রানের ইনিংসটা নিশ্চিত করেছিল, বাংলাদেশ অন্তত হারছে না।

বিজ্ঞাপন

ম্যাচ বাঁচানোর উদাহরণ আরও আছে। খুব বেশিদূর যেতে হবে না, এই তো তিন বছর আগে খুলনাতেই বাংলাদেশকে চোখ রাঙাচ্ছিল পরাজয়। পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে ২৯৬ রানে যখন পিছিয়ে ছিল, ম্যাচের প্রায় দুই দিনের কাছাকাছি বাকি। এরপর তামিম ইকবাল ও ইমরুল যা করলেন, সেটা হয়ে গেছে বাংলাদেশের ক্রিকেট পুরাণের অংশই। ৩১২ রানের মহাকাব্যিক এক জুটিতে বাংলাদেশের ওই ড্র ছিল জয়ের সমান।

সেই তামিম-ইমরুল এবার আউট হয়ে গেছেন আগেই, বাংলাদেশের সামনে এখন পঞ্চম দিনে ম্যাচ বাঁচানোর চ্যালেঞ্জ। অনেকবারের মতো মাহমুদউল্লাহ কি ত্রাতা হবেন? মুমিনুল-মোসাদ্দেক-লিটনদের কেউ কি পারবেন ম্যাচটা বাঁচাতে? নাকি চিত্রনাট্যটা কোনো নতুন বীরের অপেক্ষায়? সেটা জানা যাবে শেষ দিনেই।

সারাবাংলা/এএম/এমআরপি

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন