বিজ্ঞাপন

১৪ জুলাই বামজোটের জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও

July 7, 2019 | 1:36 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে ১৪ জুলাই সমাবেশ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। পাশাপাশি দাবি আদায় না হলে ১৯ জুলাই প্রতিনিধি সভা করে লাগাতার কর্মসূচি দেবে তারা।

বিজ্ঞাপন

রোববার (৭ জুলাই) অর্ধবেলা হরতাল শেষে নতুন এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু।

তিনি বলেন, ‘সরকার অনতিবিলম্বে যদি গ্যাসের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করে, তাহলে আগামী রোববার (১৪ জুলাই) সকাল ১১ টায় ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ এবং জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও করা হবে। একই সঙ্গে সারাদেশে জেলা-উপজেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে। এরপরও সরকার যদি সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসে, তাহলে ১৯ জুলাই বাম গণতান্ত্রিক জোট ঢাকা প্রতিনিধিসভা করে দেশব্যাপী লাগাতার আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে বাধ্য করবে দাবি মেনে নিতে।’

সারাদেশ অচল করার হুমকি দিয়ে মোশাররফ হোসেন নান্নু বলেন, ‘শুধু সাধারণ জনগণ নয়, ক্ষমতাসীন মহাজোটের প্রধান সমন্বয়ক মোহম্মদ নাসিম সংসদে দাঁড়িয়ে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছেন এবং বিষয়টি পুনঃবিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন। হরতালের সমর্থনে সারা ঢাকায় আমরা লিফলেট বিতরণ করেছি। সব শ্রেণির মানুষ আমাদেরকে বলেছে, আপনারা মাঠে থাকেন, আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি।’

বিজ্ঞাপন

গ্যাসের মূলবৃদ্ধি ইস্যুতে দেশের ১৬ কোটি মানুষ বামজোটের সঙ্গে আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাসা-বাড়িতে স্বাভাবিকভাবে যে ৮৫ ইউনিট গ্যাস ব্যবহার হওয়ার কথা, কার্যত বাসা-বাড়িতে ৪৫/৫০ ইউনিটের বেশি গ্যাস ব্যবহার হয় না। অর্থাৎসিস্টেম গেইন হওয়ার কথা। তারপরও ১২ শতাংশ সিস্টেম লস দেখানো হচ্ছে। এই ১২ শতাংশের দাম হাজার হাজার কোটি টাকা, যা লোপাট হয়ে যাচ্ছে।’

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক কমরেড খালেকুজ্জামান বলেন, ‘দেশের গুটিকয়েক লুটেরা গোষ্ঠীর স্বার্থে উন্নয়নের চমকের নিচে জনগণের দুর্ভোগ যেমন চাপা দেওয়া সম্ভব হয়নি, তেমনি কয়েকটি গাড়ি-ঘোড়া রাস্তায় নামিয়ে হরতালের পক্ষে জনগণের সমর্থনকে অস্বীকার করা এই শাসকদের পক্ষে সম্ভব হয়নি।’

‘জনগণ তো রাস্তায় নামে না’- সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের এমন বক্তব্যের জবাবে বাসদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘জনগণ যখন রাস্তায় নামবে, তখন পালিয়ে যাওয়া ছাড়া সরকারের কোনো উপায় থাকবে না। সুতরাং জনগণ রাস্তায় নামবে কি না, সেটি না ভেবে নিজেরা পালানোর রাস্তা খোঁজেন।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘এই সরকারের ক্ষমতায় থাকার ন্যায্যতা নেই। মানুষ আশা করেছিল, গণ দাবির কাছে তারা নতি স্বীকার করবে। কিন্তু তারা সেই কাজটি করল না। বরং নানাভাবে জনমতকে অস্বীকার করা, তোয়াক্কা না করা এবং জনগণের পক্ষের শক্তিকে হয়রানি করা, নির্যাতন করার পথটাই বেছে নিল।’

সরকারের উদ্দেশে খালেকুজ্জামান বলেন, ‘যদি এভাবেই চলতে থাকেন, তাহলে আগামী দিনে গ্যাসের আগুনে কেবল চুলা জ্বলবে না, আপনাদের গদিও জ্বলে যেতে পারে। ২১ বছর ক্ষমতার বাইরে ছিলেন। চিরকালের জন্যও বিদায় নিতে হতে পারে।’

বিপ্লবি ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘সারাদেশের মানুষ দলমত নির্বিশেষে হরতালকে সমর্থন করেছে। বিএনপি নৈতিকভাবে সমর্থন দিয়েছে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিকদল গণফোরাম, নাগরিক ঐক্য, জেএসডি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগসহ অসংখ্য দল হরতালকে সমর্থন দিয়েছে। অনেকেই রাজপথে দাঁড়িয়ে হরতালের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।’

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড শাহ আলম বলেন, ‘সরকার বেপরোয়া হয়ে গেছে। তারা জনগণকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখাচ্ছে, জনগণকে তোয়াক্কা করছে না। বরং মাফিয়াদের পাহারাদার হয়ে গেছে সরকার। আমরা ভদ্রভাবে রাজপথে দাঁড়িয়েছি। আমরা কাউকে পরোয়া করি না। এই মাফিয়াদের প্রতিহত করে ছাড়ব।’

বিজ্ঞাপন

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘এই সরকার নির্বাচন করে নিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন এবং রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে কাজে লাগিয়ে। এই কারণে তারা প্রশাসন, ব্যবসায়ী গ্রুপের স্বার্থ রক্ষা করে। জনগণের স্বার্থ তারা তোয়াক্কা করে না। এই জন্য স্বেচ্ছাচারি কায়দায়, যেনতেন প্রকারে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করেছে। এই অবস্থা যদি আমরা চলতে দেই, তারা আমাদের টুটি চেপে ধরবে। কাজেই, এই সরকারের লাগাম টেনে ধরতে হবে।’

বিএনপিসহ হরতালে সমর্থন দেওয়া রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমাদের হরতালে বিএনপি, গণফোরাম, জেএসডি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, নাগরিক ঐক্য, খেলাফত মজলিসসহ অনেকেই নৈতিক সমর্থন দিয়েছে। শুধু সমর্থন দিলে চলবে না। দেশ এবং দেশের মানুষকে বাঁচাতে হলে সবাইকে রাজপথে নামতে হবে।’

সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন