বিজ্ঞাপন

এখন পর্যন্ত মুগদায় ভর্তি ১৪৯৯ ডেঙ্গু রোগী, মৃত্যু ১২

August 8, 2019 | 7:59 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: এডিস মশা বাহিত রোগ ‘ডেঙ্গু জ্বর’ ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়ার পর এখন পর্যন্ত রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ১৪৯৯ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ৩৪ জন ছিলেন ওই হাসপাতালেরই চিকিৎসক ও নার্স। আর চিকিৎসার জন্য ভর্তি হওয়া ১৪৯৯ জনের মধ্যে মারা গেছেন ১২ জন।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) মুগদা হাসপাতালের শিশু ও মেডিসিন ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়- বেড, ফ্লোর, সিঁড়ি ও লিফটের সামনে ফাঁকা জায়গা ডেঙ্গু রোগীতে ভরা। চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা নিয়ে রোগীর স্বজনরা চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের পেছনে ছোটাছুটি করছেন। আর বাড়তি রোগীর চাপ সামলাতে রীতিমতো হাঁফিয়ে উঠছেন চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা, কর্মচারীরা।

মুগদা হাসপাতালের নবম তলায় ৬০ শয্যা বিশিষ্ট শিশু ওয়ার্ডে বৃহস্পতিবার মোট রোগী ছিল ১৯২ জন। এর মধ্যে ডেঙ্গু রোগী ছিল ৬৮ জন। এদিন নতুন করে ১২ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয় শিশু ওয়ার্ডে।

চিকিৎসক ও নার্সদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাধারণত ৬০ শয্যা বিশিষ্ট ওয়ার্ডে যে ক’জন চিকিৎসক ও নার্স থাকার কথা মুগদা হাসপাতালে তার চেয়ে অনেক কম রয়েছে। তার ওপর আবার সাতজন চিকিৎসক ও ২৭ জন নার্স ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ায় তাদেরকে ছুটি দিতে হয়েছে। ফলে ডেঙ্গু সংকট মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সরা।

বিজ্ঞাপন

মুগদা হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. খায়রুল আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘নতুন হাসপাতাল হওয়ায় মুগদায় চিকিৎসক ও নার্স সংকট রয়েছে। ৫০০ শয্যার হাসপাতালে নার্স থাকার কথা ৩০০ জন। কিন্তু আমাদের আছে ২৫২ জন। এর মধ্যেই আবার ডেঙ্গু। বুঝতেই পারছেন পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ।’

মুগদা হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডের পরিস্থিতি আরও বেশি ভয়াবহ। ৬০ শয্যাবিশিষ্ট এই ওয়ার্ডে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৪২৮ জন। এর মধ্যে নারী ২০০ জন, পুরুষ ২২৮ জন। অর্থাৎ বেড সংখ্যার চেয়ে চারগুণ বেশি রোগী ভর্তি রয়েছে মেডিসিন ওয়ার্ডে। এ ওয়ার্ডে কর্মকরত চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা, কর্মচারিরা দিন-রাত অক্লান্ত-অমানবিক পরিশ্রম করে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

বিজ্ঞাপন

মেডিসিন ওয়ার্ডের নার্সিং ইনচার্য রাহেলা বেগম সারাবাংলাকে বলেন, ‘৬০ জনের জায়গায় ৪২৮ জনের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। প্রতিদিনই নতুন রোগী ভর্তি হচ্ছে। আজও ১০২ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছে। আমরা দম ফেলার সুযোগ পাচ্ছি না।’

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যানুযায়ী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১৪৯৯ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি করা হয়েছে মুগদা হাসপাতালে। এর মধ্যে ৯৬০ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে, ১২ জন মারা গেছে এবং এই মুহূর্তে ভর্তি আছে ৫২৭ জন। এর মধ্যে মেডিসিন ওয়ার্ডে ৪২৮ জন, শিশু ওয়ার্ডে ৬৮ জন এবং কেবিনে ভর্তি ৩১ জন।

মুগদা হাসপতালের উপ-পরিচালক ডা. খায়রুল আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘ডেঙ্গু ক্রাইসিস মোকাবিলা করতে সত্যিই আমরা হিমশিম খাচ্ছি। চিকিৎসক, নার্স— সবাই সাধ্যমতো চেষ্টা করছে রোগীর সেবা নিশ্চিত করতে। কিন্তু দিন শেষে তারাও তো মানুষ। এরই মধ্যে আমাদের ২৭ জন নার্স ও সাতজন চিকিৎসক ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের কেউ সেরে উঠেছেন, কেউবা এখনো চিকিৎসা ও বিশ্রামে রয়েছেন।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন