বিজ্ঞাপন

‘দুর্নীতি বন্ধ হলে ২০৩০ সালেই বাংলাদেশ উন্নত-সমৃদ্ধ হবে’

August 22, 2019 | 9:24 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: দেশে চলমান ঘুষ-দুর্নীতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। দুর্নীতি বন্ধ করা গেলে ২০৩০ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ উন্নত ও সমৃদ্ধ হবে বলেও মন্তব্য করেছেন প্রবীণ এই রাজনীতিক।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত ‘নীতি-নৈতিকতা ও বঙ্গন্ধুর নির্দেশনা’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ মিলনায়তনে আয়োজিত এই সেমিনারে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন।

মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘দলের ভেতরে সবসময় কিছু ‍দুর্বৃত্ত থাকে। অতীতেও ছিল। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, এত কম্বল আনলাম, আমার কম্বল কই? দেশ স্বাধীন হয়েছে ৫০ বছরের কাছাকাছি। কিন্তু দেশে কি ঘুষ কমেছে? এখনও কি সেই দুর্নীতির ধারা থেকে আমরা বের হতে পেরেছি? এখনও কি পয়সা ছাড়া কাজ হয়?’

‘এই নীতি-নৈতিকতার অবক্ষয়ের মধ্যেই বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা এই দেশটাকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত করতে প্রায় সক্ষম হয়েছেন। কিন্তু এখনও ঘুষ-দুর্নীতি বন্ধ হয়নি। আমি ১০ বছর মন্ত্রিত্ব করেছি। প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে কি পরিমাণ দুর্নীতি হয়, আমি জানি।’

বিজ্ঞাপন

মোশাররফ বলেন, ‘দুর্নীতি বন্ধ করতে পারলে ২০২১ সাল নয়, ২০২০ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ হবে। আর দুর্নীতি পুরোপুরি বন্ধ করতে পারলে ২০৪১ সাল নয়, ২০৩০ সালের মধ্যেই উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হবে বাংলাদেশ।’

একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলা নিয়ে বলতে গিয়ে জাসদের উত্থানের প্রসঙ্গও টানেন মোশাররফ। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর আমলে জাসদ একটা জনসভা ডাকলে লালদিঘীর ময়দানে, এক লাখের ওপরে লোক হত। এরা কারা? সব স্বাধীনতাবিরোধী, সব জামায়াত ইসলামী। কিসের বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র?’

‘২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা হয়েছিল কাকে মারার জন্য? শেখ হাসিনাকে মেরে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করার জন্য। হামলা কার নির্দেশে হয়েছিল? খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমানের নির্দেশে। তারেক রহমানকে আইনের মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার করতে হবে। সাহস থাকলে সে দেশে আসে না কেন?

বিজ্ঞাপন

মোশাররফ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি নীলকন্ঠী। আসলেই উনি নীলকন্ঠী, উনি সব ধারণ করতে পারেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর উনি দেশে ফিরে আনাচে-কানাচে ঘুরে এই দলকে সংগঠিত করেছেন। তখন অনেকে আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। উনি তোয়াক্কা না করে দলকে এগিয়ে নিয়েছেন এবং ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় নিয়ে গেছেন। উনি দেশে না ফিরলে আওয়ামী লীগ আর কোনোদিন ক্ষমতায় যেত কি না সন্দেহ আছে। শেখ হাসিনা প্রতিহিংসাপরায়ণ নন। আজ যে খালেদা জিয়া জেলে, তার জামিন কিংবা মুক্তির জন্য তো আমরা কোনো বাধা দিচ্ছি না।’

সেমিনারে একুশে পদকপ্রাপ্ত বুদ্ধিজীবী ড. অনুপম সেন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু নীতি-আদর্শে বলীয়ান ছিলেন। মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও তিনি নীতির প্রশ্নে কোনোদিন আপস করেননি। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রে জাতির পিতাকে খুন হতে হয়েছে। এরপর দেশকে পাকিস্তানি ভাবধারায় ফিরিয়ে নিতে অনেক চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে এদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী মানুষ সেটা প্রতিরোধ করেছে। অনেক সংগ্রাম আর রক্তের বিনিময়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আবার আদর্শের পথে ফিরে এসেছে এবং অদম্য গতিতে এগিয়ে চলছে। এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে সংগঠনের নেতা-কর্মীদের নীতি-আদর্শে অবিচল থাকতে হবে।’

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক বেদারুল আলম চৌধুরী বেদারের পরিচালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস গবেষক সাংবাদিক মুহাম্মদ শামসুল হক। সেমিনারে আরও বক্তৃতা করেন চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. ইসমাইল খান, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালাম।

এছাড়া আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যাপক মো. মঈনুদ্দিন, আবুল কালাম আজাদ, গিয়াস উদ্দিন, ইউনুস গণি চৌধুরী, এহেছানুল হায়দর চৌধুরী বাবুল, স্বজন কুমার তালুকদার, শাহাজাহান সিকদার, মুহাম্মদ আলী শাহ, মহিউদ্দিন বাবলু, জসিম উদ্দিন শাহ, ভবতোষ নাথ, এম এ নাসের চৌধুরী, দিদারুল আলম বাবুল, জাফর আহমেদ, এস এম শফিউল আজম, শাহনেওয়াজ চৌধুরী, নজরুল ইসলাম প্রমুখ সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন