বিজ্ঞাপন

‘বাংলাদেশের ফুসফুস সুন্দরবন রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে’

August 27, 2019 | 9:41 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনকে বাংলাদেশের ফুসফুস উল্লেখ করে একে রক্ষায় সবাইকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বলেছেন হাইকোর্ট।

বিজ্ঞাপন

সুন্দরবনের পাশে শিল্পকারখানা স্থাপন সংক্রান্ত তিনটি কোম্পানির রিটে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ কথা বলেন।

আদালত বলেন, আজকে আমাজন দাউ দাউ করে জ্বলছে। আমাজন হচ্ছে পৃথিবীর ফুসফুস। এর জন্য সারাবিশ্ব এককাতারে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। ঠিকই একইভাবে সুন্দরবনও বাংলাদেশের ফুসফুস। একে রক্ষার জন্য আমাদের সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে। যার যার অবস্থান থেকে পদক্ষেপ নিতে হবে। শুধু সরকার নয়, যেসব শিল্পকারখানা সুন্দরবনের আশপাশে আছে, তাদেরও সুন্দরবনের নিরাপত্তার জন্য সব ধরনের কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। তাদের দ্বারাও সুন্দরবন যেন বাড়তি কোনো দূষণে না পড়ে।

এরপর আদালত বাগেরহাটের মোংলায় সুন্দরবনের প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকার ১০ কিলোমিটারের মধ্যে ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ (টিএমএসএস), বারাকা এলপিজি লিমিটেড ও ডেল্টা এলপিজি লিমিটেড তরল প্রাকৃতিক গ্যাস বোতলজাতকরণ প্রকল্প নির্মাণে পরিবেশগত ছাড়পত্র দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে রায় দেন। ৬০ দিনের মধ্যে এসব কোম্পানিকে ছাড়পত্র দিতে পরিবেশ অধিদফতরকে নির্দেশ দেন আদালত।

বিজ্ঞাপন

রুল নিষ্পত্তির পাশাপাশি রায়ে দুইটি পর্যবেক্ষণ দিয়ে আদালত বলেন, সুন্দরবন রক্ষার জন্য ভবিষ্যতে সরকার যদি মোংলা শিল্পাঞ্চল এলাকায় শিল্পকারখানা বন্ধের পদক্ষেপ নেয়, তাহলে এ রায় কোনো বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে না। তাছাড়া এই এলাকায় কী ধরনের ও কতগুলো শিল্পকারখানা স্থাপন করা হবে, সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সম্পূর্ণ এখতিয়ার সরকারের।

মোংলা শিল্পাঞ্চলের কিছু এলাকা সুন্দরবনের প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা, অর্থাৎ সুন্দরবনের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে। আর কিছু এলাকার বাইরে। টিএমএসএস, বারাকা এলপিজি লিমিটেড ও ডেল্টা এলপিজি লিমিটেড তরল প্রাকৃতিক গ্যাস বোতলজাতকরণ প্রকল্প মোংলা শিল্পাঞ্চলের হলেও তা সুন্দরবনের প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা, অর্থাৎ সুন্দরবনের ১০ কিলোমিটারের মধ্যেই।

মামলা সূত্রে জানা যায়, এলপিজি বোটলিং প্ল্যান্ট নির্মাণের জন্য সুন্দরবনের প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকায় পাঁচ বছর আগে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে ৩৬ একর জমি কেনে টিএমএসএস। সরকারের অন্যান্য দফতর থেকে এই প্ল্যান্ট স্থাপনের অনুমোদন পাওয়ার পর পরিবেশগত ছাড়পত্রের জন্য ২০১৮ সালে পরিবেশ অধিদফতরের অবেদন করে। কিন্তু পরিবেশ অধিদফতর সে আবেদনের নিষ্পত্তি না করায় পরিবেশ অধিদফতরের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে গত বছরের অক্টোবরে হাইকোর্টে রিট করা করে কোম্পানিটি।

বিজ্ঞাপন

একইভাবে বারাকা লিমিটেড ২০০৬ সালে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জায়গা লিজ নেয়। পরে ‘এলপিজি বোটলিং প্ল্যান্ট’ স্থাপন করতে পরিবেশ অধিদফতরে ছাড়পত্র চেয়ে গত বছরের ৫ মার্চ আবেদন করে। সে অবেদনটিও নিষ্পত্তি না করে ঝুলিয়ে রাখলে গত বছরের ১১ জুন হাইকোর্টে রিট করে তারা। ডেল্টা এলপিজি লিমিটেডও এরকম একটি রিট করে। এই তিনটি রিটে পৃথক রুল জারি করেছিলেন আদালত।

আদালতে ডেল্টা এলপিজি লিমিটেডের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শফিক আহমেদ ও আইনজীবী মাহবুব শফিক। ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ (টিএমএসএস), বারাকা এলপিজি লিমিটেডের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. মুনিরুজ্জামান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

সারাবাংলা/এজেডকে/টিআর

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন