বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রামে ৫ ক্লাবে অভিযান, তিনটিতে জুয়ার আসর বসানোর আলামত

September 22, 2019 | 12:28 am

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচটি ক্রীড়া ক্লাবে অভিযান চালিয়েছে র‌্যাব ও পুলিশ। এর মধ্যে তিনটিতে র‌্যাব জুয়ার আসর বসানোর আলামত পেয়েছে বলে জানিয়েছে। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা থেকে ক্লাবগুলোতে র‌্যাব ও পুলিশ পৃথকভাবে একযোগে অভিযান চালায়।

বিজ্ঞাপন

ক্লাবগুলোর মধ্যে নগরীর আইস ফ্যাক্টরী রোডে ‘বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র (চট্টগ্রাম)’ হালিশহরে আবাহনী লিমিটেড এবং সদরঘাটে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবে র‌্যাব অভিযান চালিয়েছে। আর নগরীর এস এ খালেদ রোডে ‘ফ্রেন্ডস ক্লাব’ এবং আসরকার দিঘীর পাড়ে ‘শতদল ক্লাবে’ কোতোয়ালী থানা পুলিশ অভিযান চালিয়েছে।

র‌্যাবের চট্টগ্রাম জোনের সহকারী পরিচালক সিনিয়র এএসপি মিমতানুর রহমান সারাবাংলাকে জানান, মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া চক্রে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় অভিযানে যান তারা। এসময় ক্লাবটি তালাবদ্ধ ছিল। পরে একজন নিরাপত্তা কর্মী এসে তালা খুলে দেন। সেখানে অভিযান চালিয়ে জুয়ার গুটি ও বোর্ড জব্দ করা হয়। পাওয়া গেছে দুটি কিরিচও। ওই ক্লাব থেকে সরিয়ে ফেলা কয়েকটি জুয়ার বোর্ড পরে নগরীর সদরঘাটে লায়ন সিনেমা হলের পেছন থেকে জব্দ করা হয়।

বিজ্ঞাপন

মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া চক্র পরিচালনা কমিটির সভাপতি পদে আছেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সহ সাধারণ সম্পাদক মো. হারুন আর রসিদ। সাধারণ সম্পাদক পদে আছেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সহ সাধারণ সম্পাদক সরওয়ার কামাল দুলু। তবে চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান ক্লাব পরিচালনা করেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদের চট্টগ্রাম জেলা ইউনিট কমান্ডার মোহাম্মদ সাহাবউদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আগে আমরা ক্লাব পরিচালনার সঙ্গে ছিলাম। তিনবছর আগে কেন্দ্র থেকে সেটি পরিচালনার দায়িত্ব নেওয়া হয়। আওয়ামী লীগ নেতা মশিউর রহমানই মূলত এটি পরিচালনা করেন।’

বিজ্ঞাপন

অভিযানের সময় সেখানে উপস্থিত হন ক্লাব পরিচালনা কমিটির সদস্য মুক্তিযোদ্ধা খোরশেদ আলম। তিনি জানান, প্রায় চার বছর আগে খসরু নামে একজনকে ক্লাবের ইজারা দেওয়া হয়। ৬ মাস আগে তার ইজারা শেষ হয়েছে। দৈনিক ১০ হাজার টাকা ভাড়ায় ক্লাবটি ইজারা দেওয়া হয়েছিল। ক্লাবঘরে বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধতা হয়। সেজন্য আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। দেড় মাস ধরে সেখানে কোনো খেলা হয় না বলে দাবি খোরশেদ আলমের।

এদিকে র‌্যাব কর্মকর্তা মিমতানুর জানান, একই সময়ে আবাহনী ক্লাব এবং মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবেও অভিযান চালানো হয়েছে। সেখানেও জুয়ার আসর বসানোর আলামত পাওয়া গেছে। মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবে গত ১৮ সেপ্টেম্বরও জুয়ার আসর বসার প্রমাণ পাওয়া গেছে। মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া চক্র থেকে জব্দ করা হিসাবের খাতায় এক মাসে ১২ লাখ টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।

আবহানী ক্লাব পরিচালনা কমিটির সভাপতি হিসেবে রয়েছেন আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য এম এ লতিফ, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রয়েছেন একই দলের সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ শামসুল হক চৌধুরী।

বিজ্ঞাপন

মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের সভাপতি শাহ আলম বাবুল ও সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন শাহবুদ্দিন শামীম। বাবুল শিল্পপতি এবং শামীম একসময় বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত থাকলেও এখন আওয়ামী লীগ নেতাদের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত।

অভিযানে যাওয়া র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিজাম উদ্দিন আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘তিনটি ক্লাবেই জুয়ার সরঞ্জাম পাওয়া গেছে। অর্থাৎ সেখানে নিয়মিত জুয়ার আসর বসত। আমরা যাচাই বাছাই করে তিনটি ক্লাব কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের করব।’

এদিকে, শনিবার সন্ধ্যায় ফ্রেন্ডস ক্লাব ও শতদল ক্লাবে অভিযানে যায় কোতোয়ালী থানা পুলিশ। নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মেহেদী হাসান সারাবাংলাকে জানান, শতদল ক্লাব তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে তালা ভেঙ্গে সেখানে প্রবেশ করা হয়। তবে ভেতরে কাউকে পাওয়া যায়নি। ফ্রেন্ডস ক্লাবে কয়েকজন প্রবীণ সদস্য বসে টেলিভিশন দেখছিলেন। এসব ক্লাবে জুয়ার আসর বসানোর কোনো আলামত তারা পাননি।

সারাবাংলা/আরডি/ইএইচটি

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন