বিজ্ঞাপন

কন্যা শিশুর অগ্রযাত্রায় এগিয়ে যাবে দেশ

October 11, 2019 | 9:41 am

সারাবাংলা ডেস্ক

লিঙ্গ বৈষম্য দূর করাসহ কন্যা শিশুদের শিক্ষার অধিকার, পরিপুষ্টি, আইনি সহায়তা ও ন্যায় অধিকার, চিকিৎসা সুবিধা ও বৈষম্য থেকে সুরক্ষার লক্ষ্য নিয়ে আজ শুক্রবার (১১ অক্টোবর) পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘কন্যা শিশুর অগ্রযাত্রা, দেশের জন্য নতুন মাত্রা’।

বিজ্ঞাপন

বেসরকারি প্রতিষ্ঠান প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল ২০০৭ সালে ‘Because I Am a Girl’ নামে একটি আন্দোলনের সূচনা করে। বিশ্বজুড়ে কন্যা শিশুদের পরিপুষ্টি নিশ্চিত করতে জনসচেতনতা গড়ে তোলার লক্ষ্য ছিল এই আন্দোলনের। প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের কানাডার কর্মীরা দেশটির সরকারের সহায়তায় এই আন্দোলনের বার্তা ছড়িয়ে দেয়।

এর ধারাবাহিকতায় সারাবিশ্বে কন্যা শিশুদের জন্য আলাদা একটি দিবস পালনের প্রস্তাব ওঠে। পরে ২০১১ সালের ডিসেম্বরে জাতিসংঘে আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবস পালনের প্রস্তাব পাস হয়। সে অনুযায়ী ২০১২ সাল থেকে সারাবিশ্বে ১১ অক্টোবর দিনটি আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

দিবসটি উপলক্ষে আলাদা আলাদা বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাণীতে তারা কন্যা শিশুদের আন্তরিক স্নেহ ও ভালোবাসা জানান।

বিজ্ঞাপন

বাণীতে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ কন্যা শিশুদের সার্বিক সুরক্ষা ও উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানসহ সমাজ ও পরিবারকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রপতি বলেন, আজকের কন্যা শিশু আগামী দিনের নারী। তাই প্রতিটি কন্যা শিশুর অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সবার কর্তব্য। বর্তমান সরকার কন্যা শিশুদের উন্নয়নে অত্যন্ত আন্তরিক এবং কন্যা শিশুদের কল্যাণে বিশেষ করে তাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বর্তমানে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত মেয়েদের বিনা বেতনে অধ্যয়নসহ শিক্ষা উপবৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। ফলে মেয়েদের শিক্ষার হার বেড়েছে, বাল্যবিয়ে ও যৌতুকের হার কমে এসেছে। লেখাপড়ার পাশাপাশি মেয়েরা খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হয়ে ঈর্ষণীয় সফলতা দেখাচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

আবদুল হামিদ বলেন, নারীর সার্বিক অগ্রযাত্রা নিশ্চিত করতে বাল্যবিয়ে, যৌতুক, ইভটিজিং প্রতিরোধসহ সামাজিক ও পারিবারিক বৈষম্য ও নির্যাতন থেকে কন্যা শিশুদের সুরক্ষিত রাখতে হবে। আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবস উদযাপনের মাধ্যমে এ বিষয়ে সাধারণ জনগণের মাঝে সচেতনতা ছড়িয়ে পড়বে— এমন কামনা করেন রাষ্ট্রপতি।

বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেয়েদের এগিয়ে নিতে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমাদের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে বাল্যবিয়ে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমেছে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মেয়েদের ভর্তির হার বেড়েছে।

খেলাধূলায় মেয়েদের অগ্রযাত্রার চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের মেয়েরা সর্বশেষ এশিয়া কাপ ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন, ২০১৫ সালে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ নারী ফুটবল টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন এবং ২০১৭ সালে ভুটানে অনুষ্ঠিত সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে রানার-আপ হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৪৫ শতাংশ শিশু, তাদের মধ্যে ৪৮ শতাংশই কন্যা শিশু। এ বিপুলসংখ্যক কন্যা শিশুর যথাযথ বিকাশ নিশ্চিত করা গেলে দেশের অগ্রযাত্রায় এক নতুন মাত্রা যোগ হবে। আমার বিশ্বাস, কন্যা শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করা গেলে তারা সরকারের রূপকল্প-২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হবে।

বিজ্ঞাপন

নারী ও কন্যা শিশুদের ক্ষমতায়ন এবং তাদের প্রতি সব ধরনের সহিংসতা ও বৈষম্য দূর করতে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, কন্যা শিশুদের কল্যাণে আমরা অবৈতনিক শিক্ষা ও উপবৃত্তির প্রবর্তন করেছি, বিনামূল্যে বই বিতরণ এবং নারী শিক্ষকদের সংখ্যা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছি।

তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশে ‘শিশু আইন’ প্রণয়ন করেন। বাংলাদেশ জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদের অন্যতম অনুস্বাক্ষরকারী দেশ। আমরা জাতীয় শিশুনীতি ২০১১ প্রণয়ন করেছি। নারী ও শিশু নির্যাতন (দমন) আইন-২০০০-এ নতুন ধারা সংযোজন এবং যুগোপযোগী বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। বাসস।

সারাবাংলা/টিআর

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন