বিজ্ঞাপন

সুস্থ থাকার জন্য বদলে ফেলুন ১১ অভ্যাস

October 28, 2019 | 12:11 pm

লাইফস্টাইল ডেস্ক।।

সবকিছুর মতো শরীরের রয়েছে বিশেষ রসায়ন। খাওয়া, ঘুম, চলাফেলা সবকিছুই চলে নির্দিষ্ট নিয়মের ওপর ভর করে। এর ব্যতিক্রম হলে শরীরে প্রভাব পড়ে, নানা রোগব্যাধি দেখা দেয়।

বিজ্ঞাপন

শুধুমাত্র ধুমপান ও ফাস্টফুড খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর- এমনটাই মনে করেন অনেকে। তবে আরও অনেক বদঅভ্যাসও আছে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। আসুন দেখে নেই সেই অভ্যাসগুলো কী কী-

পেছনের পকেটে মানিব্যাগ না রাখা

পেছনের পকেটেই মানিব্যাগ রাখতে অভ্যস্ত বেশিরভাগ ছেলে। গবেষণা বলছে, মানিব্যাগ পেছনে রেখে বসলে মেরুদন্ডের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। যারা দীর্ঘক্ষণ ধরে পেছনে মানিব্যাগ রেখে বসে থাকেন তাদের ব্যাক পেইন হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।

বিজ্ঞাপন

ফোন, ট্যাব ব্যবহারে সতর্কতা

বিছানায় শোবার পর ইন্টারনেট ব্রাউজ করেন না এমন ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া ভার। অনেকে ঘুমানোর আগে দুই, তিন, চার ঘন্টা পর্যন্ত ফোন, ট্যাব বা ল্যাপটপ ব্যবহার করেন। গবেষণা সংস্থা ন্যাশনাল স্লিপ ফাউন্ডেশন জানাচ্ছে, ৮৯ ভাগ প্রাপ্তবয়স্ক ও ৭৫ ভাগ শিশু ঘুমানোর আগে অন্তত একটি যন্ত্র (ট্যাব, ল্যাপটপ, বা ফোন) ব্যবহার করে।

বিজ্ঞাপন

এসব ইলেকট্রনিক যন্ত্র ঘুমের ব্যঘাত ঘটায়। গভীর ঘুম ব্যাহত করে। ফলে প্রজনন ক্ষমতা কমে যায় এবং মানসিক চাপ বেড়ে যায়। তাই ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত এক ঘন্টা আগে টিভি, ট্যাব, মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ থেকে দূরে থাকা দরকার।

হাত ধুতে গরম পানি নয়

অনেকেই মনে করেন, গরম পানি দিয়ে হাত ধুলে হাতের ময়লা ও জীবাণু পরিষ্কার হয়। এই ধারণা একেবারেই ঠিক না। হাত ধুতে ঠান্ডা পানিই উপযোগী। তাতে হাতের ময়লা পরিষ্কারের পাশাপাশি ত্বকও ভালো থাকে। গরম পানি ব্যবহার করলে হাতের চামড়া কুঁচকে যেতে পারে।

প্লাষ্টিকের বোতল ব্যবহারের অনুপযোগী

বিজ্ঞাপন

আমাদের দেশের প্লাস্টিকের বোতলগুলো খুবই নিম্নমানের হয়। ফলে এই পানি অস্বাস্থ্যকর। প্লাস্টিকের বোতলে রোদ লাগলে সেই পানি আরও বিষাক্ত হয়ে ওঠে।

ভ্রমণের সময় সাধারণত প্লাস্টিকের বোতলের পানিই খাই আমরা। বাইরে থাকার ফলে রোদে এই পানি গরম হয় এবং প্লাস্টিকের বোতলের বিষাক্ত কেমিক্যাল পানির সঙ্গে মিশে যায়। এই পানি খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। বিশেষ করে ব্রেস্ট ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।

দ্রুত খাওয়ার অভ্যাস ভালো না

খেতে বসে খুব তাড়াতাড়ি খাবার শেষ করে ফেলেন অনেকে। শুধু সময়ের টানাপোড়েনই নয়, তাড়াহুড়ো করে খাওয়ার অভ্যাসই তাদের। গবেষণা বলছে, যারা দ্রুত খাবার খান তাদের ডায়াবেটিস, স্ট্রোকসহ নানা রোগের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

তাছাড়া এই ধরনের ব্যক্তিরা একসঙ্গে অনেক খাবার খেয়ে ফেলেন। কারণ তাদের পেট ভরে গেলেও মস্তিষ্ক তা জানান দেয় না। তাই ধীর স্থিরভাবে খাবার খেতে হবে। অন্তত ২০ মিনিট সময় হাতে নিয়ে খাবার টেবিলে বসা উচিত।

ব্রাশ করুন নিয়ম মেনে

খাওয়ার পরপরই ব্রাশ করা ঠিক না। তাতে দাঁতের এনামেল নষ্ট হয়ে যায়। খাওয়ার অন্তত ৩০ মিনিট পর ব্রাশ করতে হবে। নরম ব্রাশ ব্যবহার করতে হবে। সকাল ও রাত- দুইবেলা ব্রাশ করতে হবে। তবে যেকোন সময় মিষ্টিজাতীয় খাবার খাওয়ার পর ব্রাশ করে ফেলা ভালো। তাতে দাঁত সুস্থ থাকে।

কানে কটনবাড ব্যবহার করা ঠিক না

কানে কটনবাড ব্যবহার করার বদঅভ্যাস অনেকেরই আছে। গবেষণায় দেখা গেছে, কটনবাড ব্যবহার করলে কানের পর্দা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। কখনও কখনও কানে প্রদাহও হতে পারে।
কানের ময়লা পর্দাকে সুরক্ষিত রাখে এবং এই ময়লা প্রাকৃতিকভাবেই চলে যায়। কানের ময়লা খুচিয়ে পরিষ্কার করলে কান নাজুক অবস্থায় পড়ে। তখন কানের পর্দা বাইরের দূষণ থেকে সুরক্ষা পায় না। তাই কানের শুধু বাইরের অংশই পরিষ্কার করুন, ভেতরে নয়।

অতিরিক্ত জুস খাওয়া ক্ষতিকর

ফলের রস ভিটামিন সি, ভিটামিন বি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। এই উপাদানগুলো শরীরের জন্য উপকারী। তবে অতিরিক্ত ফলের রস খাওয়া ক্ষতিকর। কারণ ফলের রসে প্রচুর পরিমাণে ফ্রুকটোজ থাকে।

তাছাড়া আপনার শরীরের প্রয়োজনীয়তা না বুঝে ফলের রস খেলে টাইপ-২ ডায়াবেটিস, স্থূলতাসহ নানা ধরনের রোগের ঝুঁকি দেখা দিতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শে ফলের রস খাওয়াই ভালো।

কাঁচা লবণ ক্ষতিকর

প্লেটে কাঁচা লবণ খাওয়ার অভ্যাস অনেকেরই আছে। তরকারিতে লবণ কম হলে কিংবা সালাদ ও ভর্তার সঙ্গে লবণ না হলে চলেই না- এমন মানুষের সংখ্যা নিতান্তই কম না।

চিকিৎসাবিজ্ঞান সম্পর্কিত গবেষণা বলছে, কাঁচা লবণ খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এতে উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের সমস্যা, পাকস্থলীর ক্যান্সারসহ নানা রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। আর উচ্চ রক্তচাপ হলেই হৃদপিন্ড ও কিডনী হুমকির সম্মুখীন হয়।

দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা ঠিক না

অফিসর কাজে আটঘন্টা বসে থাকতেই হয়। শহুরে যান্ত্রিক জীবনে এখন হাঁটার সময় পাওয়া মুসকিল। আর এটাই স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার ফলে ওজন বেড়ে যায়। হার্টের সমস্যা ও ডায়াবেটিস দেখা দেয়। একটানা দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা ঠিক না। ৪০ মিনিট পর পর হাটাহাটি করতে হবে।

কাজের ব্যস্ততা থাকলেও সুস্থ থাকতে হলে শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে। প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটা ও ব্যায়াম করা ভালো।

অতিরিক্ত ঘুম নয়

সুস্থতার জন্য ঘুম খুবই প্রয়োজনীয়। ঘুম ভালো হলে মস্তিষ্ক ভালো থাকে। তবে অতিরিক্ত ঘুম ভালো না। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দিনে ৭ থেকে ৯ ঘন্টা ঘুমানোই যথেষ্ট।
বেশি ঘুমালে হতাশা বাড়ে। এছাড়া হার্টের সমস্যা ও ওজন বাড়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। মস্তিষ্কের কাজ করার ক্ষমতা লোপ পায়। তাই পরিমিত পরিমাণে ঘুমাতে হবে।

সঠিক জীবনযাপন পদ্ধতির প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে সবার আগে। আর বদঅভ্যাসগুলো বাদ দিতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে আপনার শরীরের উপযোগী খাবার খেতে হবে।

সারাবাংলা/টিসি

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন