বিজ্ঞাপন

বড়দিনে কে হচ্ছেন ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিটের বাসিন্দা?

November 3, 2019 | 4:22 pm

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

চলতি বছর ডিসেম্বরের ১২ তারিখে যুক্তরাজ্যে অনুষ্ঠিত হবে সাধারণ নির্বাচন। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দূর হতে পারে ব্রেক্সিটের অচলাবস্থা। ক্রিসমাস বা বড়দিনে কাকে বরণ করবে ডাউনিং স্ট্রিটের প্রধানমন্ত্রী বাসভবন; তাই এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। ১৯২৩ সালের পর এবারই অপ্রচলিতভাবে ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ভোটগ্রহণ।

বিজ্ঞাপন

কেন অকস্মাৎ এই নির্বাচন?

কনজরাভেটিভ পার্টির নেতৃত্বে বর্তমান পার্লামেন্টের মেয়াদ ২০২২ সাল পর্যন্ত। কিন্তু ব্রেক্সিট ইস্যুতে নিজ দলের এমপিদের বিরোধিতার মুখে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন আগাম নির্বাচনের কথা ঘোষণা করেন। চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের শঙ্কা কেটে গেলে বিরোধী লেবার পার্টি জনসনকে নির্বাচনের ব্যাপারে সমর্থন দেয়।

কিভাবে হবে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন প্রক্রিয়া?

বিজ্ঞাপন

যুক্তরাজ্যের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ভোটাররা সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করেন না। নিজেদের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য তারা সংসদ সদস্য বা এমপিদের জয়যুক্ত করেন। যে দলটির নেতা ৬৫০ আসনের পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করবেন, তিনিই হবেন প্রধানমন্ত্রী। এ জন্য প্রয়োজন ৩২৬ সিট। যদি কোনো দল এককভাবে এই সংখ্যক আসন না পায় তখন সরকার গড়তে তাদের ছোট দলগুলোর সমর্থন প্রয়োজন হবে। অথবা জোট হতে পারে। ২০১০-২০১৫ সাল পর্যন্ত লিবারেল ডেমোক্র্যাটরা যেমনটি করেছে কনজারভেটিভদের জন্য। এছাড়া ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নিস্ট পার্টিও ২০১৭ সাল থেকে অঘোষিতভাবে রয়েছে কনজারভেটিভদের সঙ্গে।

কোন দল জিততে পারে নির্বাচনে?

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে নির্বাচনে জয়ের। অনেক জনমত জরিপেই তাকে এগিয়ে রাখা হয়েছে। জনসনের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আবির্ভূত হবে জেরেমি করবিন। ভালো ক্যাম্পেইনর বা প্রচারকারী হিসেবে তার সুনাম রয়েছে। এবারের নির্বাচনে জনসমর্থন কার পক্ষে যাবে তা ধারণা করা দুষ্কর। কারণ দলগুলোর অনুগত সমর্থক হিসেবে যাদের পরিচিতি ছিল তাদেরও মত পরিবর্তন হতে পারে। তাই নির্বাচন নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা সহজ নয়।

বিজ্ঞাপন

কনজারভেটিভ বা লেবার পার্টি যেকোনো এক দল সবচেয়ে বেশি আসন পাবে তা হয়ত নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে। তবে একটি দল এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ হবে সরকার গঠনের জন্য তা অনুমান করা যৌক্তিক নয়। লিবারেল ডেমোক্র্যাটরা ব্রেক্সিট বিরোধী অবস্থান নিয়ে নিজেদের অবস্থান শক্ত করার আশায় আছে। পার্লামেন্টে তাদের বর্তমান আসন ২০টি। এদিকে নাইজেল ফারাজের ব্রেক্সিট পার্টি সুবিধা লুটতে পারে কনজারভেটিভদের ব্রেক্সিট ব্যর্থতাতে। স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি, যাদের ৩৫ জন এমপি প্রতিনিধিত্ব করছেন পার্লামেন্টে, তাদেরও সুযোগ রয়েছে নিজেদের সংখ্যা বাড়িয়ে নেওয়ার।

ভোটাধিকার রয়েছে যাদের

যাদের ব্রিটিশ নাগরিকত্ব রয়েছে, বয়স ১৮ পূর্ণ হবে, তারা ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। আইরিশ ও কমনওয়েলথ নাগরিক যারা যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন তারাও জড়ো হতে পারবেন ভোটকেন্দ্রের অভিমুখে। কিছু কিছু রাজনৈতিক দল যদিও আহ্বান জানিয়েছিল ভোট দেওয়ার বয়সসীমা ১৬ করতে!

নির্বাচনে যেসব বিষয় প্রাধান্য পাবে

বিজ্ঞাপন

ব্রেক্সিটকে কেন্দ্র করে হবে দলগুলোর মূল লড়াই। নির্বাচনের ক্যাম্পেইনজুড়ে থাকবে ব্রেক্সিট ইস্যুর প্রাধান্য। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে অচলাবস্থা কাটাতে সবারই থাকবে ভিন্ন ভিন্ন প্রস্তাবনা। ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভরা বরিসের নেতৃত্বে ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আশ্বাস দিবেন। অপরদিকে লেবাররা অপেক্ষাকৃত ‘নমনীয় ব্রেক্সিট’ সুরাহা প্রস্তাবনা তুলে ধরবেন। থাকতে পারে দ্বিতীয়বার গণভোট প্রস্তাবনার সুযোগ। অপরদিকে ব্রেক্সিট পার্টি চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের পক্ষে।

নির্বাচনের পর ব্রেক্সিট চুক্তির সুরাহা হবে এমন গ্যারান্টিও বর্তমান পরিস্থিতিতে দেওয়া যাচ্ছে না। এর বাইরেও ব্রিটিশদের মাথা ব্যথার কারণ হিসেবে থাকছে স্বাস্থ্যসেবা, বিনিয়োগ সুবিধা, শিক্ষা ব্যয়, রেল পরিবহন, জ্বালানি অভিবাসনের মতো বিষয়।

নির্বাচনের পর যা হতে পারে

ছোট ছোট দলগুলোর বেশি আসন পাওয়া মানে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের সম্ভাবনা। যদি কনজারভেটিভরা কোয়ালিশন সরকার গঠনে বাধ্য হয় তাহলে পরিণতি হতে পারে পূর্বের মতোই। বরিস তার প্রস্তাবিত ব্রেক্সিট চুক্তি পাস করাতে চেষ্টা করবেন তবে সফলতার কোনো নিশ্চয়তা নেই। তার দলীয় সদস্যদের সবাই তার অনুগত থাকবেন এমনটা ভাবা দুরূহ। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে চুক্তি না হলে আবারও ফিরে আসতে পারে চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের সম্ভাবনা। যেটি এমপিরা সবসময়ই নাকচ করে আসছেন। অপরদিকে লেবাররা বৃহত্তর দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলে ব্রেক্সিট বিষয়ে হতে পারে আরও একটি গণভোট। একই সম্ভাবনার কথা ভাবছে লিবারেল ডেমোক্র্যাটস ও স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি।

সর্বশেষ দুশ্চিন্তাটা হচ্ছে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে উপস্থিতি। নির্বাচনের দিন সূর্যাস্ত হবে বিকেল ৪টার আগেই। থাকবে শীতের প্রকোপ। ব্রিটিশরা কতটা উদ্বিগ্ন হয়ে ভোটবাক্স পূর্ণ করবেন তা ভাবার বিষয় বৈকি!

তথ্যসূত্র: সিএনএন

সারাবাংলা/এনএইচ

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন