বিজ্ঞাপন

চিন্নস্বামী থেকে অরুণ জেটলি; খলনায়ক-নায়ক সেই মুশি-রিয়াদ

November 4, 2019 | 1:26 pm

স্পোর্টস ডেস্ক

টালমাটাল অবস্থার মধ্য দিয়েই ভারত সফরে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। ক্রিকেটের এমন অবস্থা এর আগে দেখা মেলেনি বাংলাদেশে। ক্রিকেটারদের ধর্মঘট দিয়ে শুরু এরপর সাকিব আল হাসানের নিষেধাজ্ঞা। ভারতে যার নেতৃত্বে টি-টোয়েন্টি আর টেস্ট সিরিজ খেলার কথা ছিল সেই সাকিবকে ছাড়াই ভারত সফরে বাংলাদেশ। তারপরেও আহত বাঘ শিকারে বেরিয়েছে। তবে ভারতের বিপক্ষে ইতিহাসটা ঠিক টাইগারদের পক্ষে কোনো কালেই ছিল না। ভারতের মাটিতে দু’দলের শেষ সেই ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। যে ম্যাচটি নি:সন্দেহে টাইগার ক্রিকেটারদের মনে ক্ষত সৃষ্টি করে রেখেছে এখনও। ব্যাঙ্গালুরুর চিন্নস্বামী স্টেডিয়ামে আক্ষেপ রয়ে গিয়েছিল ১ রানের।

বিজ্ঞাপন

জয়ের এত কাছে তবুও অনেক দূর। চিন্নস্বামী স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টিতে স্বাগতিক ভারতকে হারানোর দ্বার প্রান্তে ছিল টাইগাররা। তবে শেষ দিকে অবিশ্বাস্যভাবে মুশফিকুর রহিম এবং মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ভুলে সেবার জয়ের স্বাদটা আর পাওয়া হয়নি। সেই ম্যাচটি ছিল বিশ্বকাপের তবে এই সিরিজটিও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। দলের দুই প্রাণভোমরা নেই। গুরুদায়িত্ব বর্তেছিল বাকি দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের কাঁধে। মঞ্চ আলাদা আর চাপটাও তুলনামূলক কম হলেও চ্যালেঞ্জটা ছিল প্রায় একই। প্রতিপক্ষ সেই ভারত! স্টেডিয়ামটাও সেই ভারতেরই! ওভারটাও শেষে! তবে এবার বদলেছে কেবল ফলাফলটা। আগের বার ব্যর্থ হয়েছিলেন মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ তবে এবার আর হতাশ করেননি।

ইতিহাস বলে এই প্রথমবারের মতো পুর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। আর তাই তো এই সিরিজটা বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বের দিক দিয়ে বেশ উপরের সারিতেই। তবে নিশ্চয়ই তিন বছর আগের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মতো অর্থবহ নয়। টি-টোয়েন্টিতে ভারতকে এর আগে কখনো হারাতেই পারেনি বাংলাদেশ আর তাদেরই মাটিতে দাপুটে জয় সেটিও আবার দলের সেরা দুই খেলোয়াড় সাকিব-তামিমকে ছাড়াই! আর সেই জয় এনেও দিলেই তিন বছর আগের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে চিন্নস্বামী স্টেডিয়ামে খলনায়ক বনে যাওয়া মুশি-রিয়াদই।

বিজ্ঞাপন

চিন্নস্বামীতে শেষ ৬ বলে প্রয়োজন ছিল ১১ রান, উইকেটে তখনও নির্ভরযোগ্য দুই ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম আর মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। এরপর মুশফিকের ব্যাটে ভর করে শেষ ৩ বলে প্রয়োজন মাত্র ২ রান। যেখানে মুশি-রিয়াদের দায়িত্ব ছিল যেভাবেই হোক আগে ম্যাচ বাঁচানো ঠিক সেখানেই ভুলটা করে ফেললেন এই দুই সতীর্থ। চতুর্থ ও পঞ্চম বলে এই মুশফিক-মাহমুদউল্লাহই ব্যাখ্যাতীতভাবে হার মেনেছিলেন আবেগের কাছে। খেলেছিলেন দুটি উচ্চাভিলাষী শট, যাঁর পরিণতিতে থেকে গেছে ১ রানের চিরকালীন দুঃখ।

তবে সেখান থেকে শিক্ষা নিয়েছেন এই দুই ব্যাটসম্যান। ভুলগুলো শুধরে আবেগকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে শিখেছেন। চিন্নস্বামী থেকে শিক্ষা নিয়ে ফিরেছেন অরুণ জেটলিতে। শেষ দুই ওভারে প্রয়োজন ২২ রান। ১৯তম ওভারে খলিল আহমেদের শেষ চার বলে টানা চারটি চার, মুশফিক প্রমাণ করলেন চিন্নস্বামী থেকে আসলেই শিক্ষা নিয়েছেন। আর তাই তো শেষ ৬ বলে টাইগারদের ইতিহাস গড়তে প্রয়োজন মাত্র ৪ রান। সমীকরণটা সহজ! তবে এর আগেও এমন পরিস্থিতিতে ম্যাচ হাতছাড়া করেছে বলেই দু:শ্চিন্তা তখনও কপালের ভাজে। না! আর ভুল করেননি মুশফিক কিংবা রিয়াদের কেউই। ঠান্ডা মাথায় ম্যাচ পকেটে পুরেই মাঠ ছাড়লেন এই দুই টাইগার ক্রিকেটার। তবে চিন্নস্বামীতে যে ছয়টা মারতে গিয়ে ম্যাচটা হাতছাড়া হয়েছিল সেই ছয়টা ভুলে যাননি মাহমুদুল্লাহ। অরুণ জেটলিতে ছয় মেরেই ম্যাচ জেতালেন সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতিতে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পাওয়া মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।

বিজ্ঞাপন

চিন্নস্বামীতে মুশি-রিয়াদ বনে গিয়েছিলেন খলনায়ক, এবার ভারতের রাজধানীতে নিজেদের ঝাণ্ডা উড়িয়েই সিরিজের সূচনা করল বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষে ৯ম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে এসে জয়ের দেখা বাংলাদেশের সেটিও আবার ভারতের মাটিতে। সাকিব-তামিমকে ছাড়া ভারতের ওপর ছড়ি ঘুরিয়ে জয়, এ যেন এক নতুন সূর্যের দেখা।

সারাবাংলা/এসএস

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন