বিজ্ঞাপন

রাজবন বিহারে চরকায় সুতা কেটে শুরু হলো চীবর দানোৎসব

November 8, 2019 | 12:14 am

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

রাঙ্গামাটি: রাজবন বিহারে বেইন কর্মীদের পঞ্চশীল গ্রহণের মধ্য দিয়ে উদ্বোধন করা হয়েছে বেইনঘর। পরে চরকায় সুতা কেটে শুরু হয়েছে ‍দুই দিনব্যাপী কঠিন চীবর দানোৎসব। ৪৬তম এই দানোৎসবে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হবে বলে আশা করছে আয়োজক কমিটি।

বিজ্ঞাপন

দানোৎসব উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) দুপুর ৩টায় বেইনঘর উদ্বোধন করেন চাকমা রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়। পরে চরকায় সুতা কেটে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন তিনি।

চরকায় সুতা কাটার পর রাজা দেবাশীষ রায় বলেন, বিশাখা প্রবর্তিত এই চীবর অনুষ্ঠান বর্তমানে সার্বজনীন রূপ নিয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তুলা থেকে সুতা তৈরি করে এরপর চীবর তৈরি করা হয়। নারী-পুরুষ সবার অংশগ্রহণে এই উৎসব সবার জন্য।

বিজ্ঞাপন

এসময় রাজবন বিহার উপাসক/উপাসিকা পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি গৌতম দেওয়ানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এ বছর রাজবন বিহারে ১৩০টি বেইনে অন্তত ৫২০ জন নারী কর্মী চীবর উৎসবে অংশ নিচ্ছেন। এছাড়া সুতা লাঙানো, সিদ্ধ, রঙ, টিয়ানো, শুকানো, তুম করা, নলী করা, বেইন টানার কাজে আরও শতাধিক পুরুষ অংশ নিচ্ছেন। শুক্রবার (৮ নভেম্বর) সকাল ৬টা থেকে শুরু করে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চীবর সেলাই চলবে।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার সকাল ৬টায় বুদ্ধ পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিনের কার্যক্রম শুরু হবে। সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে দেব-মানব, তথা সব প্রাণীর হিতার্থে ধর্মদেশনা। এতে উপস্থিত থাকবেন রাজবন বিহারের আবাসিক প্রধান শ্রীমৎ প্রজ্ঞালঙ্কার মহাস্থবির। চীবর তৈরির পর শুক্রবার দুপুর ১টায় শোভাযাত্রাসহ কঠিন চীবর ও কল্পতরু মঞ্চে আনা হবে। পঞ্চশীল গ্রহণের পর দুপুর আড়াইটায় বনভান্তের মানব প্রতিকৃতির উদ্দেশ্যে কঠিন চীবর উৎসর্গ হবে। এসময় বনভান্তের প্রতিনিধি হিসেবে এ চীবর গ্রহণ করবেন আবাসিক প্রতিনিধি শ্রীমৎ প্রজ্ঞালঙ্কার মহাস্থবির।

রাঙ্গামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো.জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, অনুষ্ঠান উপলক্ষে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। অনুষ্ঠানের নিরাপত্তায় প্রায় ৫০০ পুলিশ নিয়োজিত রয়েছে।

তিন পার্বত্য জেলার মধ্যে সবচেয়ে আড়ম্বর রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারে প্রতিবছর এ দানোৎসবের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানকে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পালনের জন্য এরই মধ্যে যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়েছে রাজবন বিহার উপাসক-উপাসিকা পরিষদ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ প্রশাসনের সঙ্গেও এ নিয়ে উপাসক-উপাসিকা পরিষদের কয়েক দফা বৈঠকের পর নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিশ্চিত করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে লক্ষাধিক লোকের সমাগম হবে বলে আশা প্রকাশ করছে বিহার কর্তৃপক্ষ।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, উৎসব উপলক্ষে রাজবন বিহার এলাকায় বিশাল মেলা বসেছে। মেলা প্রাঙ্গণে সহস্রাধিক স্টলে বসেছে সারাদেশ থেকে আসা কুটির ও হস্তশিল্পের পণ্যের পসরা। এছাড়া নাগরদোলাসহ বিভিন্ন খেলা, যাদু প্রদর্শনী, ধর্মীয় পালাকীর্তনের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

সারাবাংলা/টিআর

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন